বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ যৌথ বাছাই

‘এই বাংলাদেশ কাউকে ভয় পায় না’

saiful bari titu
সাইফুল বারী টিটু। ফাইল ছবি

ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে ঠিক ১০০ ধাপ এগিয়ে থাকা ওমানের বিপক্ষে কেমন করবে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল? বিগত কয়েকটি ম্যাচের ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের পর জামাল ভূঁইয়াদের ঘিরে প্রত্যাশা বেশ উঁচুতে। ওমান শক্তিশালী দল হলেও জেমি ডের অধীনে গেল এক বছরে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মানসিকতায় যে লক্ষণীয় পরিবর্তন এসেছে, তার প্রেক্ষিতে দেশের স্বনামধন্য কোচ সাইফুল বারী টিটু বলেছেন, লাল-সবুজের এই দল কোনো প্রতিপক্ষকেই ভয় পায় না।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) ২০২২ বিশ্বকাপ ও ২০২৩ এশিয়ান কাপের যৌথ বাছাইয়ে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ওমান। মাস্কটের সুলতান কাবুস স্পোর্টস কমপ্লেক্সে ‘ই’ গ্রুপের খেলাটি শুরু বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায়। ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে ১৮৪তম স্থানে থাকা বাংলাদেশ বাছাইয়ে ৩ ম্যাচে ১ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের পয়েন্ট তালিকায় সবার নিচে রয়েছে। সমান ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের দ্বিতীয় স্থানে আছে ওমান।

বাছাইপর্বের এই ম্যাচের আগে দুদলের খেলোয়াড়দের সামর্থ্য-দক্ষতা, খেলার ধরনসহ বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করেছেন বাংলাদেশের সাবেক কোচ সাইফুল।

day and jamal
ছবি: বাফুফে

সাইফুল বারী টিটুর বিশ্লেষণ:

ওমানের শক্তি:

নিজেদের মাঠে খেলার সুবিধা তো ওমানের থাকছেই, সঙ্গে শারীরিক উচ্চতার সুবিধাও পাচ্ছে তারা। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, তারা ট্যাকটিক্যালি ও টেকনিক্যালিও বেশ এগিয়ে। সুযোগকে গোলে পরিণত করার দারুণ দক্ষতাও রয়েছে তাদের। শেষ তিন ম্যাচে তাদের দুই স্ট্রাইকার আব্দুল আজিজ আল মুকবালি ও আরশাদ আল আলাউই মিলে পাঁচবার প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়েছেন।

বাংলাদেশের শক্তি:

বাংলাদেশের মূল শক্তি তাদের প্রেরণা, যেভাবে তারা গেল দুটি ম্যাচ খেলেছে। ভারতের বিপক্ষে সবশেষ ম্যাচের পারফরম্যান্স নিঃসন্দেহে আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে লাল-সবুজদের, তবে অতি-আত্মবিশ্বাসী হওয়া যাবে না কোনোভাবেই। বাংলাদেশের হারাবার কিছু নেই। তাই ওমানের মাটিতে পয়েন্ট আদায় করে নিতে ছেলেদের মানসিকভাবে শক্ত থাকতে হবে। এরই মধ্যে তারা সে প্রমাণ রেখেছে এবং এই দল কাউকে ভয় পায় না। তুলনামূলকভাবে এই জাতীয় দলটা আগের দলগুলোর চেয়ে ইতিবাচকভাবে আলাদা।

ওমানের দুর্বলতা:

ওমানের দুর্বল দিক কেবল একটাই, তাদের রক্ষণভাগ অনেক এগিয়ে থেকে সারি তৈরি করে। ফলে পাল্টা-আক্রমণে বাংলাদেশ তাদের রক্ষণদুর্গ ভেঙে গোলমুখে যাওয়ার সুযোগ পাবে। তাছাড়া ভারত দেখিয়েছে যে সেট পিস থেকে ওমানের বিপক্ষে গোল আদায় করে নেওয়া সম্ভব। বাংলাদেশ এই দুর্বলতাকেও কাজে লাগাতে পারে।

বাংলাদেশের দুর্বলতা:

বাংলাদেশের দুর্বলতা হলো শেষ মুহূর্তে গোল হজম করার প্রবণতা। ওমান সেট পিসে খুব ভালো, তাই খেলোয়াড় মার্কিং ঠিকঠাকভাবে করতে হবে বিশ্বনাথ ঘোষ-ইয়াসিন খানদের। তাছাড়া বাংলাদেশের ফিনিশিংও সেরা মানের নয়। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকলেও গোলপোস্টের সামনে নাবীব নেওয়াজ জীবনদের ব্যর্থতায় ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়। ওমানের বিপক্ষে সুযোগ নষ্ট করা চলবে না।

bangladesh football team
ছবি: বাফুফে

ওমানের খেলার ধরন:

ওমান চাপ ধরে রেখে করে ফুটবল খেলে থাকে। সাধারণত ৪-২-৩-১ ফরমেশনে। কখনও কখনও সেটা ৪-৪-২ ফরমেশনে রূপান্তরিত হয়। তারা দুই প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে যায় এবং তাদের উইঙ্গাররা ক্রস করায় পটু। ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারসহ চার-পাঁচজন আক্রমণে উঠে প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগকে ধাঁধায় ফেলে দেয়। পাল্টা-আক্রমণে তারা খুবই বিপজ্জনক।

বাংলাদেশের খেলার ধরন:

বাংলাদেশও ওমানের মতো ৪-২-৩-১ ফরমেশনে খেলে থাকে। কখনও কখনও তা ৪-১-৪-১ ফরমেশনে রূপ নেয়। নিজেদের অর্ধে থেকে তারা প্রতিপক্ষের আক্রমণ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে এবং খেলোয়াড়দের মধ্যে বন্ধন তৈরি করে, যেমন- রাইট ব্যাক ও রাইট উইঙ্গার এবং লেফট ব্যাক ও লেফট উইঙ্গার একে অপরকে রক্ষণে সাহায্য করে থাকে। ৪-১-৪-১ ফরমেশনও মাঝমাঠে বাংলাদেশকে ওমানের চেয়ে গাণিতিকভাবে এগিয়ে রাখতে পারে। ওদের তিন মিডফিল্ডারের বিপরীতে বাংলাদেশের থাকবে চারজন।

সম্ভাব্য ফল:

নিজেদের মাটিতে ওমান নিশ্চিতভাবে ফেবারিট। শক্তি ও র‍্যাঙ্কিংয়ের বিচারে তারা বাংলাদেশের চেয়ে বিস্তর ব্যবধানে এগিয়ে। বাংলাদেশ যদি পয়েন্ট নিয়ে দেশে ফিরতে চায়, তবে মাঠে তাদেরকে কোনো ভুল করা চলবে না এবং সর্বোচ্চটা উজাড় করে দিতে হবে। সবশেষে, নিজেদের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে খেলোয়াড়দের। আর অবশ্যই, শুরুতে গোল হজম করা চলবে না।

Comments

The Daily Star  | English

Kamal Hossain urges vigilance against obstacles to nation-building effort

"The main goal of the freedom — gained through the great Liberation War — was to establish democracy, justice, human rights and build a society free from exploitation. But we have failed to achieve that in the last 54 years," says Dr Kamal

11m ago