বাংলাদেশের ইনিংসে বেলা শেষের গান
বেলা বাড়ল, সকালের মিষ্টি রোদ হলো কড়া, ভারতীয় পেসারদের রূদ্রমূর্তি তখনও চড়া। হাতেগোনা কয়েকটা আলগা বল দিলেন তারা। বাদবাকি সবই করলেন এমন জায়গায় যে ব্যাটসম্যানদের হাঁসফাস করা ছাড়া উপায় নেই। দ্বিতীয় সেশন ব্যাটিংয়ের জন্য সবচেয়ে ভালো সময়। কিন্তু প্রথম সেশনে চরম নাজুক অবস্থায় থাকা বাংলাদেশের ইনিংস দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই শেষের দিকেও চলে যেতে পারত। তা যে হয়নি তার জন্য বড় ধন্যবাদ তারা দিতে পারে আজিঙ্কা রাহানেকে। তবুও দ্বিতীয় সেশন শেষে বাংলাদেশের ইনিংসে ঠিকই বাজছে বেলা শেষের গান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
প্রথম দিনের দ্বিতীয় সেশন: বাংলাদেশ ৫৪ ওভারে ১৪০/৭ (সাদমান ৬, ইমরুল ৬, মুমিনুল ৩৭, মিঠুন ১২, মুশফিক ৪৩, মাহমুদউল্লাহ ১০, লিটন ব্যাটিং ২১*, মিরাজ ০; ইশান্ত ১/১৮, উমেশ ১/৩৬, শামি ২/২৭, অশ্বিন ২/৪৩)।
তথ্য:
- সেশনের শুরুতেই রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে মুশফিকুর রহিমের সহজ ক্যাচ স্লিপে ছেড়ে দেন রাহানে। তখন মুশফিকের রান ১৫।
- শুরুতে ধুঁকতে থাকা মুশফিক ধীরে ধীরে বের হন খোলস ছেড়ে। ৩৪তম ওভারে আসে ইনিংসের প্রথম ছক্কা। অশ্বিনকে এগিয়ে এসে লং-অন দিয়ে উড়ান তিনি।
- অশ্বিনকে আবার হতাশ করেন রাহানে। এবার ৭ রানে থাকা মাহমুদউল্লাহর সহজ ক্যাচও পড়ে যায় তার হাত থেকে।
- ৪৭তম ওভারে বল হাতে পান রবীন্দ্র জাদেজা।
- চতুর্থ উইকেটে ইনিংস সর্বোচ্চ ৬৮ রানের জুটি মুমিনুল-মুশফিকের।
- দ্বিতীয় সেশনে বাংলাদেশ তুলেছে ৭৭ রান, হারিয়েছে ৪ উইকেট।
মুমিনুল হক
প্রথম সেশনেই সবচেয়ে সাবলীল ব্যাটিং করেছিলেন তিনি। দ্বিতীয় সেশনেও জারি ছিল তা। ইশান্ত শর্মা দ্বিতীয় সেশনে করলেন আগুন ঝরানো এক স্পেল। উইকেটে এক দিকে ছিল ঘাসের রেখা, সেখানেই নিশানা করে বল ছুঁড়ে বাড়তি বাউন্স আদায় করে গেলেন তিনি। মুমিনুল ওসব ডেলিভারি ছেড়েছেন দারুণ মুন্সিয়ানায়। পেসারদের ভালো খেলে ভুল করে বসলেন স্পিনে। অশ্বিনের দুসরা বুঝতে পারেননি, ছেড়ে দিয়ে বোল্ড। তাতে বাংলাদেশ অধিনায়কের ৮০ বলে ৩৭ রানের প্রতিরোধও শেষ।
মাহমুদউল্লাহ
শুরুতে যে কাঁপুনি দেখিয়েছিলেন ইমরুল কায়েস, মাঝে যে কাঁপুনি দেখান মোহাম্মদ মিঠুন, ছয়ে নেমে তা-ই দেখিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। উইকেটে এসেই পড়িমরি দশা তার। না পেস নয়, স্পিনেই করছিলেন হাঁসফাঁস। অশ্বিনের বলে ৭ রানে স্লিপে ক্যাচও দিয়েছিলেন। রাহানে তা রাখতে পারেননি। তাতে কি! ৩ রান যোগ করার পর অফ স্টাম্পের বাইরে সরে মিডল স্টাম্প বরাবর থাকা বলে করলেন সুইপ। মুহুর্তের তা ভেঙে দিল তার অফ স্টাম্প।
মুশফিকুর রহিম
লাঞ্চ সেরে এসেই বিদায় নিয়ে ফেলেছিলেন মুশফিক। লাঞ্চের আগে বেঁচেছিলেন কোহলি ক্যাচ জমাতে না পারায়। লাঞ্চের পর তাকে জীবন দেন রাহানে। এবার বোলার ছিলেন অশ্বিন। অশ্বিনের অফ স্পিন কাট করতে গিয়ে স্লিপে যায় সহজ ক্যাচ, তখন ১৫ রানে থাকা মুশফিক এরপর সংগ্রাম চালিয়েছেন আরও ঘন্টাদেড়েক। সামাল দিয়েছেন পেস, স্পিনে বাড়িয়েছেন রানও। ব্যক্তিগত ৩৪ রানে আরও একবার জীবন পান তিনি। কিন্তু ফিফটি আর করতে পারেননি। মোহাম্মদ শামির ভেতরে ঢোকা বলের ছোবলে উড়ে গেছে তার বেল।
মেহেদী হাসান মিরাজ
মুশফিকের বিদায়ের পর খেলতে নেমে প্রথম বলেই কুপোকাত মেহেদী হাসান মিরাজ। ভেতরে ঢোকা বলে এলবিডাব্লিউ হতেই চা বিরতির ডাক আম্পায়ারদের।
অপরাজিত ব্যাটসম্যান:
লিটন দাস
অশ্বিনকে চোখ জুড়ানো কাভার ড্রাইভে শুরু, শামিকে পরে মারেন আরেকটি অন ড্রাইভ। লিটনকে দেখেই মনে হচ্ছে, ব্যাট করছেন পুরো আত্মবিশ্বাস নিয়ে। দ্বিতীয় সেশনে শেষে ৪ বাউন্ডারিতে ৩০ বলে ২১ রানে অপরাজিত আছেন তিনি।
Comments