আফসোস বাড়ালেন আবু জায়েদ
আগের দিন বিকালেই দারুণ জায়গায় বল ফেলে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষা নিয়েছিলেন আবু জায়েদ রাহি। রোহিত শর্মাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন, তার বলে উঠেছিল মায়াঙ্ক আগারওয়ালের ক্যাচও। ইমরুল কায়েস তা নিতে পারেননি। দ্বিতীয় দিনেও জায়গায় বল ফেলে স্যুয়িং আদায় করে গেলেন রাহি। শুরুতেই তার বলে ক্যাচ উঠল। এবার স্লিপে তা রাখতে পারলেন না মেহেদী হাসান মিরাজ। দমে না গিয়ে বল করে গেলেন একই তেজ নিয়ে। মিলল ফল। চেতেশ্বর পূজারা আর বিরাট কোহলিকে ফিরিয়ে দিলেন এবং বাড়ালেন একাদশে আরও এক পেসার না থাকার আফসোস।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
(দ্বিতীয় দিন প্রথম সেশন শেষে)
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ১৫০
ভারত প্রথম ইনিংস: (আগের দিন ৮৬/১) ৫৪ ওভারে ১৮৮/৩ (আগারওয়াল ৯১ ব্যাটিং, রোহিত ৬, পূজারা ৫৪, কোহলি ০, রাহানে ৩৫ ব্যাটিং; ইবাদত ০/৪৭, জায়েদ ৩/৫৮, তাইজুল ০/৫১, মিরাজ ০/৩২)।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) ইন্দোরে দিনের শুরু থেকেই পূজারাকে ড্রাইভে প্রলুব্ধ করে যাচ্ছিলেন রাহি। ব্যক্তিগত ৪৩ রানে সেই ফাঁদে পা দেন পূজারা। ড্রাইভ করতে গিয়ে ক্যাচ দেন গালিতে। মিরাজ তা জমাতে পারেননি। ফিফটি পেরুনোর পর পূজারা আবার ভুল করেন রাহির বলে। এবার একই জায়গায় বাঁ দিকে লাফিয়ে তা ধরেন মিরাজেরই বদলি নামা ফিল্ডার সাইফ হাসান।
খানিকপর স্বপ্নের মতো এক ডেলিভারিতে কোহলি পরাস্ত। অফ স্টাম্পের বাইরে ফেলে বল ইন-স্যুয়িং করিয়েছিলেন রাহি। ভারত অধিনায়ক রক্ষণাত্মক খেলতে গিয়ে পরাস্ত হলেন। তার পেছনের পায়ে লাগলেও আম্পায়ার শুরুতে এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া দেননি। পরে রিভিউ নিয়ে কোহলির দামি উইকেট নেয় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বিপক্ষে সব ফরম্যাটে ২০ ইনিংসের মধ্যে এই প্রথম কোহলি আউট হলেন শূন্য রানে। রাহি তখন উড়ছেন শূন্যে।
কিন্তু সেই লাফালাফি আর লম্বা হলো না। কারণ টানা বল করা রাহিরও তো ক্লান্তি আছে। বদলি আরেকজন পেসার যে নেই। দ্বিতীয় দিনের সকালের সেশনে ৫ ওভার বল করে ৩৭ রান দিয়ে রাহির ২ উইকেট। উইকেট পেতে পারতেন আরও বেশি। রান হতে পারত আরও কম। তার বলে ব্যাটসম্যানরা পরাস্ত হলেও ব্যাটের কানায় লেগে বেরিয়েছে রান।
আরেক পাশে ইবাদত প্রথম স্পেলে বল করেছেন ৬ ওভার, রান দিয়েছেন ১৫, নিয়েছেন ২ মেডেন। ছিলেন আঁটসাঁটও। কিন্তু এই পেসারদের স্পেল শেষ হওয়ার পরও আলগা হতে থাকে চাপ। তাইজুল ইসলাম আর মিরাজকে খেলতে কোনো সমস্যাই হয়নি ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের। স্পিন বলে চার-ছয় পিটিয়ে দ্রুত রান বাড়াতে থাকেন তারা। ৩৯তম ওভারে বল হাতে নেওয়া মিরাজ ৮ ওভারে ৩২ রান দিয়ে আছেন উইকেটশূন্য। আগের দিন মার খাওয়া তাইজুল কিছুটা মিতব্যয়ী। এদিন ৯ ওভার বল করে ১৮ রান দিয়েছেন তিনি। তবে উইকেট নেওয়ার বিন্দুমাত্র পরিস্থিতিও তৈরি করতে পারেননি।
স্পিনারদের এমন ধারহীন বোলিংয়ের সময় আরেকজন পেসারের না থাকার অভাব প্রকট হয়ে ধরা দেয়। প্রথম দিনের খেলা শেষে এমন উইকেটেও মাত্র দুজন পেসার নিয়ে নামার ব্যাখায় অধিনায়ক মুমিনুল হক বলেছিলেন, একজন বাড়তি ব্যাটসম্যান খেলানোর কারণেই তিন পেসার রাখেননি তারা। একাদশে বিশেষজ্ঞ বোলারও আছেন একজন কম। দলের এই কৌশলের কারণে বল করতে গিয়ে উইকেট থেকে সুবিধা পাওয়ার পরও দিশা পাচ্ছে না বাংলাদেশ।
তথ্য:
- দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনেই লিড নিয়ে ফেলেছে ভারত। হাতে ৭ উইকেট নিয়ে তারা এগিয়ে গেছে ৩৮ রানে।
- ৪৩ রানে রাহির বলে পূজারার ক্যাচ ছাড়েন মিরাজ। ৫৪ রানে গিয়ে পূজারা আবার ক্যাচ দিলে মিরাজের বদলি সাইফ হাসান নেন সেই ক্যাচ। এবারও বোলার রাহি।
- ০ রানে রাহির বলে বাংলাদেশ দলনেতা মুমিনুল হকের নেওয়া রিভিউতে এলবিডব্লিউ হয়ে কাটা পড়েন কোহলি।
- আগের দিন ৩২ রানে জীবন পাওয়া আগারওয়াল ৮২ রানে মিরাজের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে গিয়েছিলেন। তবে রিভিউ নিয়ে রক্ষা পান তিনি।
Comments