রাবি শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে, প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ

Untitled-1.jpg
আহত সোহরাব হোসেন। ছবি: স্টার

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের দুই কর্মীর বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

আজ (১৬ নভেম্বর) বেলা সোয়া ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে তিন দফা দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

তাদের দাবিগুলো হলো- অনতিবিলম্বে হামলাকারী ছাত্রলীগ কর্মীদের গ্রেপ্তার ও স্থায়ীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার, নিরাপত্তা প্রদানে ব্যর্থ হওয়ায় হল প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ, গুরুতর আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে।

পরে ফিনান্স বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আবু সাদেক মো. কামরুজ্জামানের আশ্বাসে সাময়িকভাবে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা।

ভুক্তভোগী সোহরাব হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও শামসুজ্জোহা হলের আবাসিক ছাত্র। সোহরাবের মাথা ও হাতে গুরুতর জখম হয়েছে। বর্তমানে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের আট নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুই ছাত্রলীগ কর্মী হলো- ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আসিফ লাক ও বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী হুমায়ুন কবির নাহিদ। তারা দুজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার অনুসারী।

হল ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত সাড়ে ১২টার দিকে আসিফ লাকের নেতৃত্বে কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী সোহরাবকে ল্যাপটপ চুরির অভিযোগে হলের তৃতীয় ব্লকের ২৫৪ নম্বর কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে তার পরিচয়পত্র দেখতে চাওয়া হয় এবং একই সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন আসিফ লাক ও হুমায়ুন কবির নাহিদ।

ভুক্তভোগী সোহরাব দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, “আমাকে ডেকে নিয়ে রুম বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রথমেই ‘তোর কি সমস্যা’ বলে রড দিয়ে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করা শুরু করে নাহিদ। একই সঙ্গে কাঠ দিয়ে আমার মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকে আসিফ লাক।”

RU-Protest-1.jpg
ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে তিন দফা দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। ছবি: স্টার

“আমার মাথা ফেটে রক্ত ঝরতে শুরু করলে, আমি চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করি, আমাকে না মারার জন্য অনুরোধ করি। কিন্তু তারা আমাকে মারা থামায়নি, বরং বলে- চিৎকার করলে আমাকে মেরে ফেলা হবে,” বলেন সোহরাব।

ঘটনার পরে সোহরাবের বন্ধুরা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে ও পরে রামেকে ভর্তি করেন।

সোহরাবের বন্ধুরা চিকিৎসকের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, সোহরাবের বাম হাতের কনুইয়ের ওপর ও নিচে দুই জায়গায় ভেঙে গেছে। এছাড়া তার মাথার তিন জায়গায় মোট ১৫টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তার পায়েও গুরুতর জখম হয়েছে। এক্সরে করা হচ্ছে। রিপোর্ট পেলে জানা যাবে পা ভেঙেছে কী না।

এদিকে, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সোহরাব বাদী হয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মতিহার থানায় হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, আমরা ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সঙ্গে কথা বলেছি। অতিদ্রুত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা জানান, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে। অভিযুক্তদের বিষয়ে আলোচনা করে দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Stay alert against conspiracies: Fakhrul

BNP Secretary General Mirza Fakhrul Islam Alamgir today urged all to stay alert, warning that conspiracies are underway to once again plunge Bangladesh into new dangers

43m ago