টেস্টের পঞ্চম দিন এবং খেলাবান্ধব এক বিদ্যাপীঠ

বাংলাদেশ তিন দিনে ইন্দোর টেস্ট হেরে না বসলে টেস্টের এদিন হতো পঞ্চম ও শেষ দিন। হয়ত থাকত উত্তেজনার পারদ। কিন্তু মুমিনুল হকরা তিনদিনেই সব শান্ত করে দিয়েছেন। অপ্রত্যাশিত পাওয়া সময়ের খানিকটা আনন্দ আয়োজন করতে তাই এক ভারতীয় সাংবাদিকের প্রস্তাব। সেটা যে এতটাই প্রাণজুড়ানো আর আনন্দমুখর হবে কে ভেবেছিল!
The Emerald Heights International School
ছবি: একুশ তাপাদার

বাংলাদেশ তিন দিনে ইন্দোর টেস্ট হেরে না বসলে টেস্টের এদিন হতো পঞ্চম ও শেষ দিন। হয়ত থাকত উত্তেজনার পারদ। কিন্তু মুমিনুল হকরা তিনদিনেই সব শান্ত করে দিয়েছেন। অপ্রত্যাশিত পাওয়া সময়ের খানিকটা আনন্দ আয়োজন করতে তাই এক ভারতীয় সাংবাদিকের প্রস্তাব। সেটা যে এতটাই প্রাণজুড়ানো আর আনন্দমুখর হবে কে ভেবেছিল!

ভারতীয় সাংবাদিক সন্দীপন ব্যানার্জিই প্রস্তাবটা দিলেন। হয়ে যাক ভারত-বাংলাদেশের সাংবাদিকদের মাঠের লড়াই। লড়াই মানে ক্রিকেট ম্যাচ। খেলার চেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে মেলা, একসঙ্গে সবার মেলবন্ধন। সন্দীপনের প্রস্তাবে বাকিটা আয়োজন করলেন মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন আর এমারেল্ড হাইটস আন্তর্জাতিক স্কুল। আমরা যা ঘুণাক্ষরেও ভাবিনি, তেমনই সব আয়োজন।

এমারেল্ড স্কুলের পাঠানো বাসে করেই আমাদের হোলকার স্টেডিয়াম থেকে নিয়ে যাওয়া হলো ইন্দোর শহরের বাইরে সেই স্কুল প্রাঙ্গণে। ব্রিটিশ আভিজাত্যের আদলে গড়া ভবনের সামনে সারিবদ্ধ ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা ফুল দিয়ে বরণ করল। রীতিমতো বিব্রতকর অবস্থা। অতিথি এলে ফুল দিয়ে বরণ করতে হয়, এটাই নাকি এখানকার রেওয়াজ। চমকের শেষ নেই তখন। আমাদের খেলার জন্য সকাল থেকে মাঠকর্মী দিয়ে তারা তৈরি করে রেখেছেন মাঠ। করেছেন খাওয়া দাওয়ার আয়োজন, করা হয়েছে ড্রেসিংরুমে বসার ব্যবস্থা।

মূল ভবন পেরিয়ে মাঠে যাওয়ার পথে দেখা গেল দৃষ্টিনন্দন সব স্থাপনা। এবং একের পর এক বিভিন্ন খেলার মাঠ। ক্রিকেট মাঠই দুটো। যার একটিতে ভারতের সবচেয়ে বড় প্রথম শ্রেণীর আসর রঞ্জী ট্রফির খেলাও হয়, আয়োজন হয় আরও কিছু ঘরোয়া টুর্নামেন্ট। আছে তিনটা ফুটবল মাঠ, ৬টা ডেকো টার্ফ টেনিস কোর্ট, ৬টা বাস্কেটবল কোর্ট,  ২৫টা টেবিল বসানো টেবিল টেনিস হল, ৯টা ব্যাডমিন্টন কোর্ট, ৬টা স্কোয়াশ কোর্ট, ৪টা ভলিবল কোর্ট, শুটিং রেঞ্জ, বিলিয়ার্ড রুম, রানিং ট্র্যাক, সাইক্লিং এর ভেলোড্রম, আছে সুইমিং পুলও।

সবগুলো মাঠেই আছে পরিকল্পনার ছাপ। আছে গ্যলারি, ড্রেসিংরুম। আধুনিক সকল ব্যবস্থা। এই স্কুলের শিক্ষার্থীরা কেবল খেলাধুলো করে নাকি পড়েও? এক শিক্ষক জানালেন খেলার ফাঁকফোকরে পড়ে। আসলে শরীরচর্চা বা খেলাধুলোকে বিশেষ প্রাধান্য দেওয়া হলেও এমারেল্ড হাইটস নাকি ভারতের দ্বিতীয় সেরা স্কুল! আবাসিক, অনাবাসিক দুই ব্যবস্থাই আছে এখানে।

ভারতের কাছে প্রায়ই শেষ ওভারে হারে বাংলাদেশ। সাংবাদিকরাও ব্যতিক্রম নন। ভারতীয়দের কাছে প্রীতি ম্যাচে এখানে তারাও শেষ ওভারে ধরাশায়ী। তবে এই ম্যাচের ফল নিয়ে আর কে ভাবে! বাংলাদেশের সাংবাদিক ইয়াসিন রাব্বির ছক্কা পেটানো দেখে যেমনতালি পড়েছে সব দিকেই, তেমনি বিরাট কোহলিদের মিডিয়া ম্যানেজার আনন্দ সুব্রামানিয়ামের কাইরন পোলার্ড বনে যাওয়াও আনন্দ দিয়েছে সবাইকে।

চোখ জুড়ানো এমারেন্ড হাইটস অবশ্য একটা আক্ষেপও জাগিয়ে তুলল। আধুনিক সব খেলার ব্যবস্থাসম্পন্ন এমন একটা স্কুল যদি বাংলাদেশেও থাকত!

Comments