আফগানিস্তানকে উড়িয়ে প্রথমবার ফাইনালে বাংলাদেশ

হাসান মাহমুদ ও সৌম্য সরকারের নৈপুণ্যে দারউইশ রাসুলির সেঞ্চুরি সত্ত্বেও আফগানিস্তান ইমার্জিং দলকে মাঝারি সংগ্রহে আটকে দিয়েছিল বাংলাদেশ। আঁটসাঁট বোলিংয়ে এই দুই পেসারকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছিলেন দুই স্পিনার তানভির ইসলাম ও মেহেদী হাসান। ব্যাটিংয়ে আলো ছড়িয়ে পরের দায়িত্বটা সেরেছেন আসর জুড়ে ছন্দে থাকা সৌম্য ও নাজমুল হোসেন শান্ত। তাদের গড়ে দেওয়া ভিতকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো ইমার্জিং টিমস এশিয়া কাপের ফাইনালে পৌঁছে দিয়ে মাঠ ছাড়েন ইয়াসির আলী ও আফিফ হোসেন ধ্রুব।
soumya sarkar
ফাইল ছবি

হাসান মাহমুদ ও সৌম্য সরকারের নৈপুণ্যে দারউইশ রাসুলির সেঞ্চুরি সত্ত্বেও আফগানিস্তান ইমার্জিং দলকে মাঝারি সংগ্রহে আটকে দিয়েছিল বাংলাদেশ। আঁটসাঁট বোলিংয়ে এই দুই পেসারকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছিলেন দুই স্পিনার তানভির ইসলাম ও মেহেদী হাসান। ব্যাটিংয়ে আলো ছড়িয়ে পরের দায়িত্বটা সেরেছেন আসর জুড়ে ছন্দে থাকা সৌম্য ও নাজমুল হোসেন শান্ত। তাদের গড়ে দেওয়া ভিতকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো ইমার্জিং টিমস এশিয়া কাপের ফাইনালে পৌঁছে দিয়ে মাঠ ছাড়েন ইয়াসির আলী ও আফিফ হোসেন ধ্রুব।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) আসরের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আফগানিস্তানকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে আফগানদের ছুঁড়ে দেওয়া ২২৯ রানের লক্ষ্য মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে ৬১ বল হাতে রেখে পেরিয়ে যায় শান্তর নেতৃত্বাধীন দল।

আগের দিন একই ভেন্যুতে রোমাঞ্চকর প্রথম সেমিফাইনালে ভারতকে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট পেয়েছে পাকিস্তান। আগামী শনিবার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে পাকিস্তানকে মোকাবিলা করবে বাংলাদেশ।

লক্ষ্য তাড়ায় দুই ওপেনার নাঈম শেখ ও সৌম্যর ব্যাটে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল মারমুখী। তবে এই জুটি টেকেনি বেশিক্ষণ। ২১ বলে ৩ চারে ১৭ রান করে পেসার আজমত উল্লাহর শিকার হন নাঈম। দলীয় ২৬ রানে প্রথম উইকেটের পতন হওয়ার পরও চালিয়ে খেলে ১০৭ রানের বড় জুটি গড়েন সৌম্য ও শান্ত। তাদের এই  জুটি ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয় আফগানদের।

৫৯ বলে সমান ৩টি করে চার ও ছয়ে ৬১ রান করে আবদুল ওয়াসির বলে বোল্ড হন সৌম্য। সঙ্গী হারিয়ে শান্তও বিদায় নেন একটু পরই। ৬৮ বলে ৫ চার ও ১ ছয়ে ৫৯ রান করেন তিনি। তাকেও ফেরান স্পিনার ওয়াসি।

আর কোনো বিপদ হতে না দিয়ে চতুর্থ উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৭৫ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান ইয়াসির ও আফিফ। ইয়াসির মাঠ ছাড়েন ৫৬ বলে ৩৮ রানে। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে আফিফ অপরাজিত থাকেন ৩৬ বলে ৪৫ রানে।

এর আগে ব্যাটিংয়ের শুরুতেই হাসান মাহমুদের তোপের মুখে পড়ে আফগানিস্তান। ইনিংসের প্রথম ওভারেই তিনি ফেরান আবদুল মালিককে। আরেক ওপেনার শহিদউল্লাহ কামালকেও টিকতে দেননি তিনি। মাহমুদের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন শওকত জামান। ফলে নবম ওভারে ২৪ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে আফগানিস্তান।

আফগানদের বিপদ আরও বাড়ে মুনির আহমেদ সাজঘরে ফিরলে। সৌম্যর বলে বোল্ড হন তিনি। ৩৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা দলটি দারউইশ রাসুলি ও সামিউল্লাহ শিনওয়ারির পঞ্চম উইকেট জুটিতে প্রতিরোধের চেষ্টা করে। তবে এই জুটিকে বেশি দূর এগোতে দেননি তানভির ইসলাম। এই বাঁহাতি স্পিনারের বলে স্লিপে ইয়াসির আলির হাতে ক্যাচ দেন সামিউল্লাহ।

ষষ্ঠ উইকেটে ৬৭ রান যোগ করে আফগানদের ম্যাচে ফেরার পথ তৈরি করে দেন রাসুলি ও সৈয়দ শাফাক। এর মাঝে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন রাসুলি। এই জুটি ভেঙে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় উইকেটের দেখা পান তানভির। শাফাক ১ চার ও ২ ছয়ে ৬৬ বলে ৩৪ রান করে ক্যাচ দেন সুমন খানের হাতে।

৬ উইকেট হারিয়ে ফেলার পরও বাংলাদেশের বোলারদের চেপে ধরার সুযোগ দেননি উইকেটে থিতু হয়ে যাওয়া রাসুলি ও আটে নামা তারিক স্ট্যানিকজাই। চড়াও হয়ে মেরেকেটে খেলে ৬১ বলে তারা যোগ করেন গুরুত্বপূর্ণ ৮৬ রান।

ইনিংসের শেষ ওভারে পরপর দুই বলে স্ট্যানিকজাই ও রাসুলিকে ফেরান মিডিয়াম পেসার সৌম্য। স্ট্যানিকজাই ২৭ বলে ৫ চারে ৩৩ রান করে আউট হন। রাসুলি ফেরেন ১১৪ রান করে। ১২৮ বলের ইনিংসে সমান ৭টি করে চার ও ছয় মারেন এই ডানহাতি।

বাংলাদেশের পক্ষে হাসান ৩ উইকেট নেন ৪৮ রানে। সৌম্য সমান সংখ্যক উইকেট পান ৫৮ রানের বিনিময়ে। ৩৩ রানে ২ উইকেট দখল করেন তানভির।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আফগানিস্তান ইমার্জিং: ৫০ ওভারে ২২৮/৯ (মালিক ১, শহিদউল্লাহ ৩, শওকত ১৩, রাসুলি ১১৪, মুনির ২, সামিউল্লাহ ১১, শাফক ৩৪, স্ট্যানিকজাই ৩৩, আজমত ১*, ওয়াসি ০; হাসান ৩/৪৮, সুমন ০/৫৯, সৌম্য ৩/৫৮, তানভির ২/৩৩, মেহেদী ০/২৯)।

বাংলাদেশ ইমার্জিং: ৩৯.৫ ওভারে ২২৯/৩ (নাঈম ১৭, সৌম্য ৬১, শান্ত ৫৯, ইয়াসির ৩৮*, আফিফ ৪৫*; জাজাই ০/৩৫, আজমত ১/৪০, শহিদউল্লাহ ০/৩১, মালিক ০/২৯, ওয়াসি ২/৪৬, শিনওয়ারি ০/১৯, স্ট্যানিকজাই ০/২৪)।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus’ economic gambit paying off

Two months ago, as Professor Muhammad Yunus waded into Bangladesh’s unprecedented political turmoil, he inherited economic chaos by default.

2h ago