টেস্টে কেন বাংলাদেশ-ভারতের এত ফারাক, ব্যাখ্যা দিলেন কোহলি
টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বর দল ভারত। বাংলাদেশ পড়ে আছে নয় নম্বরে। কেবল র্যাঙ্কিংই নয়, টেস্টে নামলে দুদলের বিস্তর তফাত বোঝা যায় শরীরী ভাষায়, খেলার ধরনে। টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি নিবেদন ও একাগ্রতার পার্থক্যও চোখে পড়ার মতো। ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি এর কারণ খুঁজে পেয়েছেন। টেস্টে বাড়তি স্পৃহা না দেখানোয় কেবল ক্রিকেটারদের প্রতি নয়, আরও বড় কিছুর দিকে ইঙ্গিত করেছেন তিনি। বড় করে দেখছেন অর্থনৈতিক বিষয়।
ভারত, ইংল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররা টেস্ট খেলতে উদগ্রীব। তাদের মাঠের পারফরম্যান্সও হয় তেমনি। বাকি দলগুলোর মধ্যে অনেকেই দীর্ঘ পরিসরের অভিজাত এই সংস্করণে ভুগে থাকে। তারকা খেলোয়াড়দের টেস্টে খেলতে অনেক সময়ই দেখা যায় অনীহা। সেটা কখনো আড়ালে থাকে, কখনো চলে আসে প্রকাশ্যে।
উপরের কয়েকটি দল শক্তিশালী হচ্ছে, নিচের দিকের দলগুলো ধুঁকছে। কোহলি অন্যদের বিষয় না ঘেঁটে নিজেদের দিয়েই দিলেন উদাহরণ, ‘অন্য দল বা বোর্ড কীভাবে বিষয়টা দেখে, সামলায় আমি এই ব্যাপারে বলতে পারি না। আমাদের দিক থেকে এবং বিসিসিআই’র দিক থেকে গত দুই-তিন বছরে আলোচনার ভিত্তিতে টেস্ট ক্রিকেটকে ঠিক জায়গায় নিয়ে গেছি। বোর্ডের পক্ষ থেকে এবং খেলোয়াড়দের পক্ষ থেকে যেমন প্রতিশ্রুতি দরকার তা দিয়ে টেস্ট ক্রিকেটকে উঁচুতে নিয়ে গেছি।’
‘আপনারা দেখে থাকবেন দল হিসেবে গত দুই-তিন বছরে আমরা কতটা রোমাঞ্চকর জায়গায় পৌঁছেছি। আমার মনে হয়, এটা বোর্ড ও খেলোয়াড়দের একটা সুন্দর জুটির মতো, যা সঠিক পথে এগিয়ে নিচ্ছে সব। আপনি যদি আমাদের চুক্তির ব্যাপারটা দেখেন, তাহলে দেখবেন টেস্ট ক্রিকেটারদের যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়।’
কোহলি আসল কথাটা বলেছেন এখানেই। তারকা ও উঠতি খেলোয়াড়দের টেস্ট ক্রিকেটে আকৃষ্ট করে রাখতে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড এই সংস্করণেই দেয় সর্বোচ্চ ম্যাচ ফি। যেমন- দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সর্বশেষ তিন টেস্টের হোম সিরিজ খেলে কোহলি পেয়েছেন ৬৫ লাখ ৬ হাজার ৮০৮ রুপি। বাংলাদেশের কারেন্সিতে তা ৭৬ লাখের বেশি। অর্থাৎ প্রতি টেস্টের জন্য ম্যাচ ফি হিসেবে কোহলি পেয়েছেন ২৫ লাখ টাকার বেশি।
অপরদিকে একটি টেস্ট খেলার জন্য ম্যাচ ফি হিসেবে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা পান সাড়ে তিন লাখ টাকা।
কোহলি মনে করেন, টেস্ট ক্রিকেটকে যদি বলা হয় সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেট, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফরম্যাট, তাহলে সেখানে সব কিছুই সেভাবে করা উচিত, ‘আপনি শুধু ক্রিকেটারদেরই টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি নিবেদিত হতে বলতে পারেন না। আমরা পেশাদার ক্রিকেটার। এটা আমাদের রুটি-রুজি। যখন বলা হবে টেস্ট ক্রিকেট সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তখন সবকিছুই (অর্থনৈতিক) সেই হিসেব মেনেই হওয়া উচিত।’
ম্যাচ ফি বেশি থাকায় ভারতের ক্রিকেটাররা টেস্টের প্রতি ভীষণ আগ্রহী। টেস্ট দলে জায়গা পেতে সবাই থাকেন উন্মুখ। কোহলির মতে, এটাই নাকি সার্বিক খেলার মানকে নিয়ে যায় আরও উঁচুতে।
Comments