গোলাপি বলে ভয়ংকর দিন দেখল বাংলাদেশ

অচেনা গোলাপি বলে প্রস্তুতির ঘাটতি ছিল, আগের টেস্টে বিধ্বস্ত হওয়ায় ছিল মনোবলের সংকটও। তবু বড় উপলক্ষ রাঙাতে মুমিনুল হকদের কাছে প্রত্যাশা ছিল বিপুল। কিন্তু ভারতীয় পেসারদের সামনে চূড়ান্ত বিব্রতকর ব্যাটিং , লিটন দাসের মাথায় আঘাত পেয়ে বেরিয়ে যাওয়া মিলিয়ে দুঃসহ এক বিকেল পার করেছে বাংলাদেশ।

অচেনা গোলাপি বলে প্রস্তুতির ঘাটতি ছিল, আগের টেস্টে বিধ্বস্ত হওয়ায় ছিল মনোবলের সংকটও। তবু বড় উপলক্ষ রাঙাতে মুমিনুল হকদের কাছে প্রত্যাশা ছিল বিপুল। কিন্তু ভারতীয় পেসারদের সামনে চূড়ান্ত বিব্রতকর ব্যাটিং , লিটন দাসের মাথায় আঘাত পেয়ে বেরিয়ে যাওয়া মিলিয়ে দুঃসহ এক বিকেল পার করেছে বাংলাদেশ।

ভারতের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাট করার সাহস দেখিয়ে ১৭৪ মিনিট টিকে মাত্র ১০৬ রানে অলআউট হয়ে গেছে বাংলাদেশ।

উইকেট পতন, বারবার পরাস্ত হওয়া। বল লাফিয়ে ভয়ংকর গোলার মত ব্যাটসম্যানদের দিকে ধেয়ে কাবু করা। ইডেনে দেখা গেল এমন সব দৃশ্য। তাতে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের চূড়ান্ত বিব্রতকর পরিস্থিতি।

অথচ বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে শুরুর প্রথম কয়েক মিনিট মনে হচ্ছিল এবার দেখা যাবে ভিন্ন কছু।  আগের টেস্টে দুই ওপেনারই ছিলেন ভীষণ নড়বড়ে। আউট হওয়ার আগে যে পরিস্থিতি তৈরি করেছিলেন সেটাই ভীত নাড়িয়ে দেয় বাংলাদেশের। গোলাপি বলে কি হয় তা দেখার অপেক্ষা ছিল। এবার প্রথম ছয় ওভার আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই পার করে দেন সাদমান ইসলাম আর ইমরুল কায়েস। কিন্তু এরপরই তাসের ঘরের মতো লণ্ডভণ্ড বাংলাদেশের ইনিংস।

ইডেনের এক দিক থেকে আসে নদীর হাওয়া। তাতে পাওয়া যায় মুভমেন্ট। ইশান্ত শর্মা সেই মুভমেন্টই কাজে লাগিয়ে হয়ে উঠেন ভয়াল।  সপ্তম ওভারে প্রথম সর্বনাশ করেছেন তিনিই। ইমরুলকে বারবার পরাস্ত করেছেন, ইমরুল রিভিউ নিয়ে একবার বেঁচেছেন। কিন্তু মুভমেন্টেই কাবু হয়ে শেষ পর্যন্ত আর পারেননি।

১৫ বলে ৪ করে ইমরুল ফিরলে ১৫ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আরেক ওপেনার সাদমানকে শুরু থেকেই দেখা যায় সাবলীল। শরীরের বাইরের বল ছেড়েছেন দেখে। নিজের জোনে পেলে পার করেছেন সীমানাও।

তিনে নামা অধিনায়ক মুমিনুল হকের উপর ভার ছিল প্রথম সেশনটা পার করে দেওয়া। চরম ব্যর্থ তিনি। প্রান্ত বদল করা উমেশ যাদবের মুভমেন্টে খোঁচা মেরে স্লিপে ক্যাচ দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। 

বিপর্যয়ে মুশফিকুর রহিম নয়, চারে এই টেস্টেও পাঠানো হয় মোহাম্মদ মিঠুনকে। এই সিদ্ধান্ত ভুল হতে এক মিনিটও লাগেনি। যাদবের ভেতরে ঢোকা বল বুঝতেও পারেননি মিঠুন। বলের লেন্থ, গতি কিছুই পড়তে পারেননি। কেবল দেখেছেন উড়ে যাচ্ছে তার লেগ স্টাম্প। ১৭ রানেই নেই ৩ উইকেট। আরও ৯ রান পর নেই মুশফিকও। শামির বলে মুশফিক ফিরেছেন মিঠুনের মতই। ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে বল ঢুকে যায় তার স্টাম্পে। ২৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে রীতিমতো দুঃস্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। সেই দুঃস্বপ্ন আরও গাঢ় হয় খানিকপর।

ইশান্তের বলে পরাস্ত হয়ে বিদায় নেন বিবর্ণ মাহমুদউল্লাহ। লিটন এসবের মাঝে ছিলেন চোখ জুড়ানো। নেমেই দুই চার মারার পর বল রক্ষণও করছিলেন ভরসার সঙ্গে। শামি, ইশান্তদের সামলাচ্ছিলেনও ভাল।

২১তম ওভারেই ঘটে বিপত্তি। শামির বাউন্সার গোলার মত ধেয়ে এসে লাগে লিটনের হেলমেটে। মাঠেই চিকিৎসা নিয়ে উঠে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। পরের বলে শামি দেন আরেক বাউন্সার। এবার চারে তাকে বাউন্ডারিতে পাঠান লিটন। পরের ওভারে ইশান্তকেও চার মেরেছিলেন। কিন্তু আগের পাওয়া আগাতে অস্বস্তি বোধ করায় মাঠ ছাড়তে হয় তাকে।

লিটনকে হারানোর খারাপ খবর নিয়েই লাঞ্চে যায় বাংলাদেশ। তার কনকাশন বদলি নামা মেহেদী হাসান মিরাজও বিরতির পর ফেরেন তড়িঘড়ি। আরেক অফ স্পিনার নাঈম হাসান নিবেদন দেখিয়েছিলেন কিছুটা। তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে দুই অঙ্কের ঘরে রান পান তিনি। ফ্লাড লাইটে ব্যাট করা নিয়ে চিন্তায় ছিল বাংলাদেশ। ফ্লাড লাইট পুরো জ্বলে উঠার আগেই শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস  ১০৬  (সাদমান ২৯, ইমরুল ৪, মুমিনুল ০, মিঠুন ০, মুশফিক ০ , মাহমুদউল্লাহ ৬, লিটন আহত অবসর ২৪, নাঈম ১৯, ইবাদত ১, মিরাজ (কনকাশন বদলি) ৮ , আল-আমিন ১, জায়েদ ০ ; ইশান্ত ৫/২২ , যাদব ৩/২৯ , শামি ২/৩৬, জাদেজা ০/৫ )

Comments