চা-বিরতির আগে জীবন পেলেন রোহিত
ভারতীয় কোন ব্যাটসম্যানকে জীবন দিয়ে তার খেসারৎ অনেকবারই দিয়েছে বাংলাদেশ। এদিনও ওপেনার রোহিত শর্মাকে সহজ জীবন দিলেন পেসার আল-আমিন হোসেন। আবু জায়েদ রাহীর বলে মিড উইকেটে সহজ ক্যাচ ফেলে দিয়েছেন তিনি। অন্যথায় ভারতকে কিছুটা হলেও চাপে ফেলতে পারতো টাইগাররা। চা বিরতিতে যাওয়া আগে ভারতের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৩৫ রান।
নিজেদের প্রথম ইনিংসের শুরুটা বেশ আগ্রাসী ঢঙেই শুরু করে ভারত। প্রথম বলেই চার মারেন মায়াঙ্ক আগরওয়াল। একই ওভারে ছক্কাও হাঁকান রোহিত শর্মা। তবে ইনিংসের পঞ্চম ওভারেই ভারতীয় শিবিরে আঘাত হানেন আল-আমিন। ফেরান ভয়ঙ্কর আগরওয়ালকে। নাগপুর টেস্টে যিনি ডাবল সেঞ্চুরি করে টাইগারদের ভুগিয়েছেন।
আল-আমিনের বলে স্লিপে অবশ্য দারুণ ক্যাচ দিয়েছেন বাংলাদেশের হয়ে প্রথন কনকাশন বদলী খেলোয়াড় মেহেদী হাসান মিরাজ। বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ লুফে নেন। ব্যক্তিগত ১২ রানে আউট হন মায়াঙ্ক। এরপর চেতশ্বর পুজারাকে নিয়ে ভারতের ইনিংসের হাল ধরেছেন রোহিত। তবে এ জুটিও ভাঙতে পারতো বাংলাদেশ। সে সুযোগ হেলায় হারান আল-আমিন।
এর আগে বাংলাদেশকে মাত্র ১০৬ রানে গুটিয়ে দেয় ভারত। ইশান্ত শর্মার দুর্দান্ত বোলিংয়ে শুরু থেকেই নড়বড়ে ছিল বাংলাদেশ। গোলাপি বল নিয়ে নানা ধরণের কথা শুরু থেকেই আসছিল। এর আগে কখনো এ বলে না খেলায় কিছুটা ভীতি হয়তো কাজ করছিল টাইগারদের। ম্যাচেও তা বোঝা যায় স্পষ্ট। টাইগারদের দুর্বলতায় যেন আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন ভারতীয় বোলাররা। ইশান্ত শর্মা বিকেলের বাতাসকে কাজে লাগিয়ে দারুণ সুইং আদায় করে একাই তুলে নেন ৫ উইকেট। বাকিটা ভাগভাগি করেন উমেশ যাদব ও মোহাম্মদ শামি। তাতেই কাবু বাংলাদেশ। মাত্র ৩০.৩ ওভার টিকতে পেরেছে তারা।
যদিও ইনিংসের প্রথম কয়েকটা ওভারে ভারতীয় বোলাররাও বুঝতে পারেননি এর প্রকৃতি। তাই বাড়তি বাউন্স আদায় করার তেমন তাগিদ ছিল না। কিন্তু বদলী বোলার হিসেবে বল করতে এসে শুরু থেকেই আলগা বাউন্স আদায় করে নিতে থাকেন মোহাম্মদ শামি। তাতে আরও বড় ঝামেলায় পড়ে যায় বাংলাদেশ। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় কিছুটা সাবলীল ছিলেন লিটন দাস। কিন্তু দুই দুইবার মাথায় আঘাত লাগায় তিনি আর ব্যাট করতে পারেননি। ফলে টাইগারদের বিপর্যয় আরও বাড়ে।
তাতে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে টিম ম্যানেজমেন্টের ভূমিকা নিয়েও। একে তো বাউন্সি বলে টাইগাররা দুর্বল, তার উপর আবার গোলাপি বলে খেলা। সাধারণ বলের তুলনায় একটু বেশিই বাউন্স করে এ বল। কিন্তু তারপরও ‘কনকাশন’ বদলির কথা চিন্তা করেনি বাংলাদশের টিম ম্যানেজমেন্ট। কারণ মাথায় আঘাত লাগলে ব্যাটসম্যান যে ধরণের হন বলদি খেলোয়াড়কেও সে ধরণের হতে হয়। কিন্তু দলে প্রতিষ্ঠিত কোন ব্যাটসম্যানই ছিলেন না। তাই লিটন কুমার দাস মাথায় আঘাত লেগে খেলতে না পারায় বাধ্য হয়ে তাই মেহেদী হাসান মিরাজকেও নামায় বাংলাদেশ। তার অবদান ৮ রান।
সাইফ হাসানের ইনজুরিতে আরও একবার সুযোগ পাওয়া ইমরুল কায়সের বিদায় দিয়ে টাইগারদের বিপর্যয়ের শুরু। তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ছিল টাইগারদের ব্যাটিং লাইন আপ। তাতে অবশ্য কিছুটা আশার আলো দেখাচ্ছিলেন সাদমান ইসলাম। কিন্তু উমেশ যাদবের বলে উইকেটের পেছনে সহজ ক্যাচ দিয়ে তিনি ফেরেন ব্যক্তিগত ২৯ রানে। দলের সর্বোচ্চ স্কোরটিও তার। ১২ জন ব্যাটসম্যানের মধ্যে মাত্র মাত্র তিন জন পৌঁছাতে পেরেছেন তিন অঙ্কের কোটায়।
Comments