‘আমি শিক্ষক, আমাকে ক্লাসে ফিরে যেতে দিন’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুশাদ ফরিদীকে ২০১৭ সালে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়। তিনি তার দায়িত্ব পুনরায় ফিরে পাওয়ার দাবিতে আজ (২৮ নভেম্বর) টানা তৃতীয় দিনের মতো বিভাগীয় চেয়ারম্যানের অফিসের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
সেখানে রুশাদ ফরিদী একটি প্ল্যাকার্ড ধরে আছেন যেখানে লেখা, “আমি শিক্ষক, আমাকে ক্লাসে ফিরে যেতে দিন।”
২০১৭ সালে উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে সিন্ডিকেট বৈঠকের পর ফরিদীকে ১৩ জুলাই ২০১৭ থেকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছিলো। কিন্তু, এর জন্য তাকে কোনও ‘কারণ দর্শানো’ নোটিশ দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে আমাদের ঢাবি সংবাদদাতা।
অর্থনীতি বিভাগের বেশ কয়েকজন শিক্ষক রুশাদ ফরিদীর সঙ্গে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানানোয় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিলো। এর কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
দ্য ডেইলি স্টারকে রুশাদ ফরিদী জানান, তিনি বিভাগের অভ্যন্তরে অনিয়ম নিয়ে কথা বলতেন এবং সে কারণেই কারো ব্যক্তিগত ক্ষোভের শিকার হয়েছেন।
তিনি আরও জানান, তৎকালীন ভিসি আরেফিন সিদ্দিকীসহ পাঁচজনের নামে আইনি নোটিশ পাঠিয়ে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে দাবি করেছিলেন। তিনি এরও কোনো উত্তর পাননি।
২৪ জুলাই ২০১৭-তে হাইকোর্ট রুশাদ ফরিদীকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে প্রেরণের সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
রুশাদ ফরিদীকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত কেনো অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। দুই সপ্তাহের মধ্যে ঢাবির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এর ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
শেষ পর্যন্ত, দুই বছরের আইনি লড়াই শেষে এ বছর ২৫ আগস্ট উচ্চ আদালত সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করেন। ঢাবি কর্তৃপক্ষকে আদেশ দেওয়া হয় রুশাদ ফরিদীকে তার কার্যালয়ে যোগদানের অনুমতি দিতে।
বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন।
রুশাদ ফরিদী বলেছেন, তিনি রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি এখনও হাতে না পেলেও আইনজীবীদের স্বাক্ষরিত অনুলিপিটি বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা দিয়েছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শফিক উজ জামান তার চিঠি গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান এবং তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।
এই অভিযোগ অস্বীকার করে শফিক উজ জামান বলেন, এ বিষয়ে তাদের কিছুই করার নেই। এটি বিশ্ববিদ্যালয় ও রুশাদ ফরিদীর মধ্যকার আইনি বিরোধ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে এবং সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা কাজ করবে।
বিষয়টি স্বীকার করে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, বিষয়টি তিনি জানেন এবং আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
Comments