শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ছেলেদের ক্রিকেটেও সোনা জিতল বাংলাদেশ
ফাইনালের আগে শক্তি পরীক্ষায় বাংলাদেশকে উড়িয়ে দিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। তাতে মনে হয়েছিল ফাইনালটা বেশ কঠিনই হতে যাচ্ছে। কিন্তু রাতারাতিই বদলে গেছে বাংলাদেশ দল। শ্রীলঙ্কা অনূর্ধ্ব-২৩ দলকে উল্টো উড়িয়ে দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ান (এসএ) গেমসে স্বর্ণপদক জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দল। ৭ উইকেটের জয়ে এসএ গেমসে নিজেদের স্বর্ণ জয়ের নতুন রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। এ নিয়ে ১৯তম স্বর্ণ এলো লাল-সবুজের দেশে।
এর আগে ২০১০ সালের আসরে নিজেদের সর্বোচ্চ ১৮টি স্বর্ণ জিতেছিল বাংলাদেশ। এদিন সকালে সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে সে রেকর্ড ভাঙার পথ গড়ে দিয়েছিলেন আর্চাররা। এ বিভাগের ১০টি স্বর্ণের সবকটিই জিতে নিয়ে ২০১০ সালের সে রেকর্ডকে ছুঁয়ে ফেলেন তারা। আর নেপালের কাঠমুন্ডুর ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মাঠে ক্রিকেটাররা লঙ্কানদের উড়িয়ে দিয়ে গড়ে দেন নিজেদের নতুন এ রেকর্ড।
অথচ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আগের দিন গ্রুপ পর্বের ম্যাচে এক অর্থে পাত্তাই পায়নি বাংলাদেশ। মাত্র একটি উইকেট ফেলতে পেরেছিলেন শান্ত-সৌম্যরা। ফিল্ডিংও ছিল যাচ্ছেতাই। তবে এদিন সোনার লড়াইয়ে পুরোপুরি বদলে যায় তারা। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের পাশাপাশি দারুণ ফিল্ডিংও দিয়েছে দলটি। তিনটি রানআউটও করেছে তারা। এরপর লঙ্কানদের দেওয়া ১২৩ রানের লক্ষ্য পেরোতে ১৮.১ ওভার খেলতে হয়েছে তাদের।
তবে লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা দেখে শুনেই করে বাংলাদেশ। দুই ওপেনার সাইফ হাসান ও সৌম্য সরকার গড়েন ৪৪ রানের জুটি। এরপর সৌম্য বিদায় নিলে অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্তকে নিয়ে দলের হাল ধরেন সাইফ। গড়েন ৩৯ রানের জুটি। এরপর অবশ্য রানআউট হয়ে যান সাইফ। তবে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন শান্ত।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৫ রান করেন শান্ত। ২৮ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় এ রান করেন অধিনায়ক। ৩০ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৩ রান করেন সাইফ। এছাড়া সৌম্য ২৭ ও ইয়াসির আলী ১৯ রান করেন। শ্রীলঙ্কার পক্ষে একটি করে উইকেট নিয়েছেন সাচিন্দু কলম্ব্যাজ ও কামিন্দু মেন্ডিস।
তবে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিল শ্রীলঙ্কা। ওপেনিং জুটিতে ৩৬ রান তোলেন দুই ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কা ও নিশান মাদুশকা। তাতে আগের দিনের ম্যাচের কথাই মনে হচ্ছিল বারবার। এরপরই দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশের বোলাররা। অধিনায়ক মাদুশকাকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন সুমন খান। পরে তোপ দাগান আরেক পেসার হাসান মাহমুদ। ফলে নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারাতে থাকে লঙ্কানরা। শেষ পর্যন্ত ১২২ রানে গুটিয়ে যায় দলটি।
তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে কিছুটা চেষ্টা করেছিলেন শাম্মু আশান। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৫ রানের ইনিংসও খেলেন তিনি। নিসাঙ্কার ব্যাট থেকে আসে ২২ রান। বাংলাদেশের পক্ষে ২০ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নিয়েছেন হাসান মাহমুদ। ২৮ রানের বিনিময়ে ২টি উইকেট নেন স্পিনার তানভির ইসলাম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা অনূর্ধ্ব-২৩ দল: ২০ ওভারে ১২২ (নিসাঙ্কা ২২, মাদুশকা ১৬, ক্রুসপুলে ১, মেন্ডিস ৪, আসালাঙ্কা ১২, আশান ২৫, বান্দারা ০, ড্যানিয়েল ৮, আঞ্জুলা ৫, কলম্ব্যাজ ৯, আসিথা ০; সুমন ১/১৬, তানভির ২/২৮, হাসান ৩/২০, মেহেদী ১/১৮, সৌম্য ০/৩২)।
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দল: (সাইফ ৩৩, সৌম্য ২৭, শান্ত ৩৫*, ইয়াসির ১৯, আফিফ ৫*; আসিথা ০/২১, আঞ্জুলা ০/৯, ড্যানিয়েল ০/১৩, আশান ০/১৯, মেন্ডিস ১/৯, কলম্ব্যাজ ১/৩৩, আসালাঙ্কা ০/১৮)।
ফলাফল: বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব- ২৩ দল ৭ উইকেটে জয়ী।
Comments