বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে খুলনাকে জেতালেন মুশফিক

শোয়েব মালিকের ঝড়ে বড়সড় সংগ্রহই পেয়েছিল রাজশাহী রয়্যালস। রান তাড়ায় খুলনা টাইগার্সের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম হয়ে উঠেন বিস্ফোরক। তার ঝড়ে মামুলি হয়ে গেল বড় লক্ষ্যও।
Mushfiqur Rahim
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

শোয়েব মালিকের ঝড়ে বড়সড় সংগ্রহই পেয়েছিল রাজশাহী রয়্যালস। রান তাড়ায় খুলনা টাইগার্সের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম হয়ে উঠেন বিস্ফোরক। তার তাণ্ডবে মামুলি হয়ে গেল বড় লক্ষ্যও।

এক পর্যায়ে খেলা জিততে ৪ বলে জিততে খুলনার দরকার ২ রান। সেঞ্চুরির জন্য মুশফিকের দরকার ৪। বাউন্ডারি মেরে খেলে শেষ করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে ফেরেন মুশফিক। তবে তার আগে কাজের কাজ করে দিয়ে যান তিনি। অধিনায়কের তৈরি করা মঞ্চে পরের বলেই চার মেরে খেলা শেষ করেছেন রবি ফ্রাইলিঙ্ক। 

চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু বিপিএলে এবারের আসরের প্রথম ম্যাচটাই হলো রান উৎসবের। রাজশাহীর ১৮৯ রান ২ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে জিতেছে খুলনা। দলকে জেতানো মুশফিক ৯ চার আর ৪ ছক্কায় করেন ৫১ বলে ৯৬ রান।

ব্যাটিংয়ের জন্য চট্টগ্রামের উইকেটের সুনাম পুরনো। এবারও উইকেট ব্যাটিং বান্ধব। তবে ১৯০ রান তাড়া যেকোনো উইকেটেই খুব সহজ না। তার জন্য চাই ভাল শুরু। সেটা হয়নি খুলনার। প্রথম ওভারে নাজমুল হোসেন শান্ত বোল্ড হয়ে যান আন্দ্রে রাসেলের বলে।

আগের ম্যাচে ঝড় তোলা রাহমানুল্লাহ গুরবাজকে বাড়তে দেননি আফিফ। ২৫ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা দল ঘুরে দাঁড়ায় মুশফিক-রাইলি রুশোর জুটিতে। রুশো খেলছিলেন বলের মেরিট বুঝে। মুশফিক নেমেই হন চড়া। তাতে তরতরিয়ে বাড়তে থাকে রান। চেনা স্লগ সুইপ, সুইচ হিট, তেড়েফুঁড়ে বেরিয়ে এসে উড়ানো। মুশফিকের ব্যাটে দেখা গেছে সব জৌলুস।

দাপুটে মুশফিকের সঙ্গে মিলে ৭২ রানের জুটির পর ৪২ রান করে কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন রুশো। তাতে খুব একটা ঘাবড়ে যায়নি খুলনা। মুশফিক ছিলেন তেতেই। ৫০ বলে ফিফটি তুলে নিয়ে ম্যাচের লাগাম একার হাতে নেন তিনি। মাঝে শামসুর রহমান ২০ বলে ২৯ করে কাজটা সহজ করে দেন মুশফিকের। 

শেষটা করতে আর খুব একটা বেগ পেতে হয়নি তার। খেলার ফলের চেয়ে বরং মুশফিক সেঞ্চুরি করতে পারবেন কিনা এই নিয়েই শেষ দিকে তৈরি হয় কৌতুহল। তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে যেতে না পারলেও এমন ইনিংস খেলায় খুব একটা অতৃপ্তি থাকার কথা না মুশফিকের।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে গিয়ে শুরুতেই হযরতুল্লাহ জাজাইকে হারায় রাজশাহী। ছন্দে থাকা লিটন দাস খেলছিলেন দারুণ। মোহাম্মদ আমিরকে ছক্কা-চার মারার পর রবি ফ্রাইলিঙ্ককে উড়াতে গিয়ে রাইলি রুশোর দারুণ ক্যাচে পরিনত হন তিনি।

দুই ছক্কা মেরে আফিফ থামেন শহিদুল ইসলামের বলে। ৬৬ রানে ৩ উইকেট হারানো রাজশাহী ঘুরে দাঁড়ায় শোয়েব মালিকের ব্যাটে। উইকেটে থিতু হয়ে ৩৫ বলে ফিফটি করে আরও বিস্ফোরক হয়ে উঠে তার ব্যাট।

চতুর্থ উইকেটে রবি বোপারার সঙ্গে জমে উঠে জুটি।  ওভারপ্রতি দশের উপর রাত তুলে ১০৬ রানের জুটি গড়েন তারা। ৫০ বলে ৮৭ রান করা মালিক আমিরের বাউন্সারে স্কয়ার লেগে ধরা পড়লে ভাঙে এই জুটি।

বোপারা অবশ্য আর আউট হননি। ২৬ বলে দুটি করে চার-ছক্কা মেরে ৪০ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। অধিনায়ক আন্দ্রে রাসেল শেষ ৯ বলের জন্য নেমে অপরাজিত থাকেন ১৩ রানে। টসের সময় রাসেল বলছিল ১৯০ রানের মতো করতে পারলে খেলা জিততে পারবেন তারা। সে পর্যন্তই গেলেন তারা। কিন্তু মুশফিকের সেরা দিনে ওই রান আর টিকল না তাদের। ৮ বোলার ব্যবহার করেও কোন সুরাহা করতে পারেননি রাসেল। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রাজশাহী রয়্যালস: ২০ ওভারে ১৮৯/৪  (জাজাই ১, লিটন ১৯, আফিফ ১৯, শোয়েব ৮৭, বোপারা ৪০*, রাসেল ১৩* ; মিরাজ ০/১৭, আমির ২/৩৬, ফ্রাইলিঙ্ক ১/২৯, শফিউল ০/৩৮, শহিদুল ১/৩৫, আমিনুল ০/৩০ )

খুলনা টাইটান্স: ১৯.৪ ওভারে ১৯২/৪  (  শান্ত ০,  গুরবাজ ৭  , রুশো ৪২,  মুশফিক ৯৬, শামসুর ২৯, ফ্রাইলিঙ্ক ১৪*, শহিদুল ০* ; রাসেল ২/৪১ , রাব্বি ১/১৮, ১/২৪, জায়েদ ০/৭, মালিক ০/১৪, বোপারা ১/৩২, অলক ০/৩১, তাইজুল ১/১১, রেজা ০/১৪)

ফল: খুলনা টাইগার্স ৫ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মুশফিকুর রহিম।

Comments

The Daily Star  | English

Ex-public administration minister Farhad arrested

Former Public Administration minister Farhad Hossain was arrested from Dhaka's Eskaton area

3h ago