ঠাণ্ডা, কুয়াশায় স্থবির লালমনিরহাটের জনজীবন

হঠাৎ ঠাণ্ডার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে উত্তরের সীমান্তবর্তী লালমনিরহাটের জনজীবন। কুয়াশার চাদরে চারদিক ঢেকে ছিলো সকাল থেকেই। দিনভর দেখা মিলেনি সূর্যের।

হঠাৎ ঠাণ্ডার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে উত্তরের সীমান্তবর্তী লালমনিরহাটের জনজীবন। কুয়াশার চাদরে চারদিক ঢেকে ছিলো সকাল থেকেই। দিনভর দেখা মিলেনি সূর্যের।

ঠাণ্ডা আর ঘন কুয়াশার কারণে খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষজন কাজের সন্ধানে বাইরে যেতে হিমশিম খাচ্ছেন। অনেকে ঠাণ্ডাকে উপেক্ষা করে জীবিকার প্রয়োজনে বাইরে গেলেও কাজ মিলছে না।

ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেলাতেও হেড লাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। ঠাণ্ডার প্রকোপে বাইরে যাত্রী না আসায় রিকশাচালকদের পড়তে হচ্ছে যাত্রী সঙ্কটে। ফলে আয়ও কমে গেছে তাদের। কৃষক ও কৃষিশ্রমিকরা ক্ষেতে যেতে পারেননি কাজ করতে। অনেকে মাঠে কাজ করতে গেলেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ঠাণ্ডার কারণে।

নিম্নআয়ের মানুষ, ছিন্নমূল, দুঃস্থ অসহায় ও চরাঞ্চলের লোকজনের দুর্ভোগ বেড়েছে ঠাণ্ডায়। প্রয়োজন মতো গরম কাপড় না থাকায় শীত নিবারণে তারা হয়ে পড়েছেন দিশেহারা। অনেকে খড়কুটোয় আগুন ধরিয়ে শরীর তাপ দিচ্ছেন ঠাণ্ডার প্রকোপ থেকে বাঁচতে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার রায়পাড়া গ্রামের শ্রমজীবী মনেশ্বর চন্দ্র বর্মণ (৬৫) জানান, ঠাণ্ডা আর কুয়াশারা কারণে তিনি ঘর থেকে বাইরে বেড়াতে পারেননি। সারাদিন বাড়িতে থেকেছেন জড়সড় হয়ে। ঠাণ্ডার প্রকোপ এত বেশী যে খড়কুটোর আগুনে শরীর তাপ দিয়েও ঠাণ্ডা নিবারণ হচ্ছে নাে বলে তিনি জানান।

ধরলা নী তীরবর্তী লালমনিরহাট সদর উপজেলার বনগ্রামের কৃষক শমসের আলী (৫৫) জানান, ঠাণ্ডা আর কুয়াশারা কারণে ক্ষেতে গিয়েও কাজ না করে ফিরে এসেছেন। এভাবে কুয়াশা চলতে থাকলে সবজি ও ধানের বীজতলার ক্ষতি হবে।

“আমাদের তেমন কোনো শীতের কাপড় নেই। তাই ইচ্ছা করলেও হাড়-কাঁপুনি ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে বাড়ির বাইরে যেতে পারছি না। আর শীতবস্ত্র কেনার সামর্থ্যও নেই,” বললেন তিস্তা পাড়ের কৃষিশ্রমিক নবির হোসেন (৪৫)।

“ঠাণ্ডা আর কুয়াশায় আমরা নিরুপায়। আয় না থাকায় অন্যের কাছ ধার নিয়ে সংসার চালাতে হচ্ছে,” যোগ করেন তিনি।

একই এলাকার রিকশাচালক মেহের আলী (৩৮) বলেন, “ঠাণ্ডায় রিকশা নিয়ে বাইরে যেতে ইচ্ছে করে না। তারপরও গেলে যাত্রী পাওয়া যায় না। বাড়িতে খড়কুটোর আগুনে শরীর তাপ দিয়ে ঠাণ্ডা কাটানোর চেষ্টা করছি।”

রংপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে রংপুর ও আশপাশের জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক আবু জাফর দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, জেলার পাঁচটি উপজেলায় শীতার্ত দুঃস্থ মানুষের মাঝে সরকারিভাবে ২৮ হাজার ৭০০ কম্বল বিতরণের কাজ চলছে। এছাড়াও বেসরকারিভাবে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কম্বল বিতরণ চলছে।

তবে প্রয়োজনের তুলনায় কম্বল খুবই অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন শীতার্ত দুঃস্থরা।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

6h ago