অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপেই খেলার স্বপ্ন দেখেন মুগ্ধ
গেল বছর নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের প্রাথমিক দলে ছিলেন মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ। যুব দলের সেরা পেসারই ছিলেন তিনি। তাকে ঘিরেই স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ। কিউইদের পেসবান্ধব উইকেট-কন্ডিশনে বেশ কার্যকরীও হতো এই তরুণ গতি তারকার বোলিং। কিন্তু হঠাৎ করেই অনাকাঙ্ক্ষিত এক ইনজুরিতে পড়েন মুগ্ধ। ভেঙে যায় তার স্বপ্ন। সেই তিক্ত অধ্যায়কে পেছনে ফেলে ফের বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন দেখছেন মুগ্ধ। তবে এবার আর ছোটদের মঞ্চে নয়। আগামী বছর অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ জাতীয় দলের জার্সিতে প্রতিনিধিত্ব করার লক্ষ্য রাখছেন মুগ্ধ।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বড়দের মঞ্চে অভিষেক হয়ে গেল ১৯ বছরের মুগ্ধর। রংপুর রেঞ্জার্সের হয়ে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে খেলেছেন তিনি। বিপিএলে প্রথম ম্যাচ হলেও দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন। কোটার ৪ ওভার পূরণ করে মাত্র ২৬ রান খরচায় পেয়েছেন সৌম্য সরকারের উইকেট। শিকার করতে পারতেন আরও। কিন্তু সতীর্থ ফিল্ডার ক্যাচ লুফে নিতে না পারায় একমাত্র উইকেটেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাকে। তবে মুগ্ধর মূল প্রাপ্তির জায়গা হলো তার আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। স্বপ্নটা তাই এবার অনেক বড়, লক্ষ্যটা এবার অনেক উঁচুতে। মুগ্ধর ভাষায়, ‘লক্ষ্য থাকবে সামনের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপে যেন খেলতে পারি।’
মুগ্ধ আসলেও গতি তারকা। এদিন নিয়মিতভাবে ঘণ্টায় ১৩৫ থেকে ১৩৮ কিলোমিটার গতিতে বল করেছেন তিনি। তবে এর চেয়েও বেশি গতিতে বল করার রেকর্ড রয়েছে তার। গেল জাতীয় লিগেই ঘণ্টায় ১৪৩ কিলোমিটারের আশেপাশে বল করেছেন। তবে দেশ-বিদেশের নামিদামি খেলোয়াড়দের সঙ্গে গ্যালারি ভর্তি দর্শকের সামনে খেলার অভিজ্ঞতা তার এটাই প্রথম। তাই গতি নয়, লাইন-লেংথে বেশি মনযোগী ছিলেন মুগ্ধ, ‘সত্যি বলতে, গতি (দিয়ে বল করার চেষ্টা) অতটা করিনি। প্রথম ম্যাচ তো, লাইন-লেংথে (মনোযোগ দিয়ে) বেশি বল করেছি। প্রথম ম্যাচ একটু নার্ভাস ছিলাম। এজন্য গতি অত দিতে পারিনি। পরবর্তীতে হয়তো দিতে পারব।’
মুগ্ধকে ভাগ্য-বঞ্চিত বলা হলে ভুল হবে না! ছোটদের সেই বিশ্বকাপের আগে ২০১৭ সালের শেষ দিকে ইনজুরিতে পড়েছিলেন। এরপর প্রায় দুই বছর লেগেছে তার সম্পূর্ণভাবে সেরে উঠতে। পুরোপুরি উঠেছেন তা-ও নয়। এখনও পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যেই আছেন। যুব দলে তার সেই সময়ের সতীর্থ সাইফ হাসান, নাঈম হাসান, আফিফ হোসেন, আমিনুল ইসলাম বিপ্লবরা এরই মধ্যে জাতীয় দলে খেলতে শুরু করেছেন। অনেকে জায়গা পাকাও করে ফেলেছেন। আর দরজায় কড়া নাড়ছেন মাহিদুল ইসলাম অংকন, হাসান মাহমুদ, তৌহিদ হৃদয়রাও। এখন দেখার বিষয়, চোটকে জয় করে নিজের হাতে ভাগ্য গড়ে মুগ্ধ তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেন কি-না।
Comments