মোস্তাফিজকে আবার পেছনে ফেলবেন সেই রানা?

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

পেস বোলিং ফাউন্ডেশনে ক্যারিয়ারের শুরুটা একইসঙ্গে করেছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী হাসান রানা। সেই ২০১০-১১ সালে। তখন কোচদের দৃষ্টিতে মোস্তাফিজের চেয়ে যোজন যোজন ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন রানা। কিন্তু মাঝে নানা ঘটনায় পিছিয়ে গেলেন তিনি। অন্যদিকে, নিজের ভাণ্ডারে ‘কাটার’ নামক নতুন অস্ত্র যোগ করে বিশ্বসেরাদের কাতারে নাম লিখিয়ে ফেললেন মোস্তাফিজ। তবে তার ফর্ম সম্প্রতি পড়তির দিকে। আর দেরিতে হলেও আবারও এগোতে শুরু করেছেন রানা। এবারের বিপিএলে এখন পর্যন্ত দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়ে সেরাদের কাতারে রয়েছেন এ পেসার।

২০১০-১১ মৌসুমে সারা দেশ থেকে একঝাঁক তরুণ বোলার ছেঁকে আনা হয়। তাদের মধ্যে কোচদের ‘নয়নের মণি’ ছিলেন রানা। তখনকার প্রায় সব কোচই ভেবেছিলেন এক সময় দেশের সেরা পেসারই হবেন তিনি। কারণ বোলিংয়ে দুরন্ত গতির সঙ্গে ছিল সুইংও। কিন্তু ক্যারিয়ারের শুরুর দিকেই ইনজুরির কবলে পড়তে হয় তাকে। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলে থাকলেও ইংল্যান্ডে খেলতে গিয়ে কুঁচকির চোটে পড়ায় ২০১৪ সালের যুব বিশ্বকাপ মিস করেন। ফিরে এসে দেশের মাঠে ২০১৬ যুব বিশ্বকাপ খেলেন তিনি। কিন্তু এর পরপরই আরেক বিপত্তি, হার্নিয়ার অপারেশন। যে কারণে ১৮ মাস ছিলেন সম্পূর্ণ খেলার বাইরে ছিলেন। দীর্ঘ সময় বাইরে থাকাটাই কাল হয়ে দাঁড়ায় রানার জন্য।

তবে অনেক সময় হারিয়ে গেলেও মনোবল হারাননি রানা। শুরু করলেন নতুন করে। ছন্দও ফিরে পেলেন। চলতি বিপিএলে তো দুর্দান্ত। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে তিন ম্যাচ খেলে দুটিতেই জয়ের নায়ক তিনি। শেষ ম্যাচে তো ব্যাটিং স্বর্গে ঢাকা প্লাটুনের থিসারা পেরেরার মতো মারকুটে ব্যাটসম্যানকে বোতলবন্দী করে ফেলেন নিপুণ দক্ষতায়। ফের যেন পুরনো সেই সব দিন ফিরে পেলেন রানা!

নখ কামড়ানো সে ম্যাচে কী দারুণ বোলিংই না করলেন রানা! ১৮তম ওভারে যখন বোলিংয়ে এসেছিলেন, তখন তার প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকান থিসারা। স্লোয়ার দিয়ে সুবিধা করতে পারেননি। তবে মাথা ঠাণ্ডা রেখে অন-সাইডে চার জন ফিল্ডার রেখে পায়ে বল করা শুরু করলেন রানা। আর তাতেই সফল। আঁটসাঁট লাইন-লেংথে পরের পাঁচ বলে খরচ করলেন মাত্র ২ রান। আর ইনিংসের শেষ ওভারের পুরোটা থিসারা স্ট্রাইকে থাকলেও রানা দেন মাত্র ৪ রান। তাতেই দারুণ এক জয় মেলে তার দল চট্টগ্রামের। ফলে ব্যাটসম্যানদের রান উৎসবের ম্যাচে সেরার পুরস্কার ওঠে রানার হাতে।

রানার উত্থানের সময়ে পুরনো বন্ধু মোস্তাফিজ যেন নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন। অনেক প্রত্যাশা নিয়ে প্লেয়ার্স ড্রাফটে প্রথমে খেলোয়াড় নেওয়ার সুযোগ পেয়ে তাকে দলে টেনেছিল রংপুর রেঞ্জার্স। কিন্তু দলের প্রত্যাশার ছিটেফোঁটাও পূরণ করতে পারেননি তিনি। উল্টো বেদম পিটুনি খেয়ে মূল একাদশে জায়গা ধরে রাখাই কষ্টকর হয়ে গিয়েছে তার জন্য। তার মতো ধুঁকছে তার দলও। তিন ম্যাচের সবকটিতে হেরে রংপুর রয়েছে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে। অথচ কয়েক বছর আগেও বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা বোলারই ভাবা হতো মোস্তাফিজকে।

Comments

The Daily Star  | English

Israeli military says it killed Iran's wartime chief of staff

Israel says conducted 'extensive strikes' in Iran's west, while explosions near Tel Aviv, sirens blare across Israel; smoke rises after explosion in Iran’s Tabriz

4h ago