ব্যাটে-বলে জ্বলে উঠে ঢাকাকে জেতালেন মেহেদী
বল হাতে রান আটকে দেওয়ার পাশাপাশি নিলেন গুরুত্বপূর্ণ ২ উইকেট। পরে ব্যাট হাতে তিনে প্রোমোশন পেয়ে মেহেদী হাসান তুললেন ঝড়। ব্যাটে-বলে তার ভূমিকাই হয়ে উঠল মুখ্য। ভালুকা রাজাপাকশের দারুণ ইনিংসে মন্থর উইকেটে বেশ ভালো পূঁজি নিয়েও কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স পারল না ঢাকা প্লাটুনকে হারাতে।
চট্টগ্রামে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে রাজাপাকশের ৯৬ রানে আগে ব্যাট করে ১৬০ করেছিল কুমিল্লা। এক বল হাতে রেখে ওই রান টপকে জিতে টুর্নামেন্টে তৃতীয় জয় পেয়েছে মাশরাফি মর্তুজার দল।
বোলিংয়ে ৯ রানে ২ উইকেটের পর ব্যাটিংয়ে ২৬ বলে ৭ ছক্কায় ৫৯ করে ঢাকার হিরো তরুণ মেহেদী।
আগের ম্যাচগুলোর তুলনায় এদিন উইকেট ছিল বেশ মন্থর। সেখানে ঘটনাবহুল ইনিংসে দারুণ খেলেন রাজাপাকশে। জম্পেশ লড়াইয়েরই আভাস ছিল ইনিংস বিরতিতে। ম্যাচ শেষে দেখা যাচ্ছে মেহেদী জ্বলে না উঠলে লড়াই এমনকি হতে পারত একপেশেও।
১৬১ রানের লক্ষ্যে শুরুতেই এনামুল হক বিজয়কে হারায় ঢাকা প্লাটুন। ঢাকার টপ অর্ডারে বাঁহাতির আধিক্য দেখে এদিন মুজিবুর রহমানের পাশাপাশি স্থানীয় অফ স্পিনার রবিউল ইসলাম রবিকেও রেখেছিল কুমিল্লা। তিনিই এনে দেন প্রথম উইকেট।
পরে তিনিই খুইয়ে বসেন ম্যাচ। ক্যাচ ফেলেন, বেদম মার খেয়ে চাপ সরিয়ে দেন। ঘরোয়া পর্যায়ে রবি মূলত অনিয়মিত বোলার। তার নজির পাওয়া যায় খানিক পরই। ডান-বাম কম্বিনেশন রাখতে ওয়ানডাউনে পাঠানো হয়েছিল মেহেদী হাসানকে। তিনিই গড়ে দিয়েছেন ব্যবধান।
রবি এক ওভার তিন ছক্কায় ২৮ নিয়ে নেন মেহদী। দ্রুত রান তোলার জন্য কঠিন উইকেটে রবি দিয়েছেন আলগা সব বল, মার খেতেও সমস্যা হয়নি তাই। এমন বল পেয়ে মেহদীর ব্যাট হয়ে উঠে উত্তাল। একপাশে কুঁকড়ে ছিলেন তামিম, তবু মেহেদীর ঝড়ে তা টেরই পাওয়া যায়নি। আল-আমিন হোসেনে বলে আউট হওয়ার আগে ২৯ বলে ৭ ছক্কায় ৫৯ করে দিয়ে যান মেহেদী। তার এই ইনিংস ঢাকাকে এগিয়ে দেন অনেকখানি পথ।
তবে মেহদী আউট হয়ে ফেরার পর মুজিব দারুণ এক ওভারে রান আটকে দেওয়ার পাশাপাশি তুলে নেন আসিফ আলি আর জাকের আলিকে। শম্বুক গতিতে খেলে ধুঁকতে থাকা তামিমও সৌম্যর বলে আউট হন ৪০ বলে ৩৪ রান করে। কিছুটা চাপ বাড়ে প্লাটুনের। ম্যাচে ফিরার সুযোগ পায় কুমিল্লা।
তবে মুমিনুল হককে সঙ্গে নিয়ে ১৬ বলে ২৬ রানে মিনি ঝড়ে ঢাকার সব শঙ্কা দূর করেন শহিদ আফ্রিদি।
এর আগে টস হেরে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ইঙ্গিত দিয়েও দ্রুতই ফেরেন সৌম্য সরকার। সাব্বির রহমান তার পথ ধরেন ৭ বলে ০ রান করে। পারেননি ডেভিড মালানও।
তবে একাই যেন একশো রাজাপাকশে। ওয়াহাব রিয়াজের ক্যাচ দিয়ে আউট জেনে প্যাভেলিয়নে ফেরত গিয়েছিলেন। ‘নো’ বল জানার পর আম্পায়াররা ডেকে ফেরান তাকে। আর ফিরতে হয়নি। ৬৫ বলে ৯৬ রান করে ইনিংস শেষ করেই মাঠ ছাড়েন এই লঙ্কান। উইকেটের চরিত্র পড়ে দ্রুতই মানিয়ে নিয়ে খেলেছেন তিনি। চতুর্থ উইকেটে ইয়াসির আলির সঙ্গে গড়েন অবিচ্ছিন্ন ১০৩ রানের জুটি।
তার ব্যাট উইকেটের বিচারে বেশ চ্যালেঞ্জিং পূঁজিই পেয়েছিল কুমিল্লা। কিন্তু রবির অমন মার খাওয়া সব হিসেব করে দেয় এলোমেলো।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স: ২০ ওভারে ১৬০/৩ (রাজাপাকশে ৯৬*, সৌম্য ১০, সাব্বির ০, মালান ৯, ইয়াসির ৩০* ; মাশরাফি ০/২১, মেহেদী ২/৯, হাসান ০.৩৪, ওয়াহাব ০/৩২, শাদাম ১/৩২, আফ্রিদি ০/২৩)
ঢাকা প্লাটুন: ১৯.৫ ওভারে ১৬১/৫ (তামিম ৩৪, এনামুল ০, মেহেদী ৫৯, আসিফ ০, জাকের ০, মুমিনুল ২৮* , আফ্রিদি ২৬* ; রবি ১/৪৪, মুজিব ২/২২, সুমন ০/৩৪, আল-আমিন ১/২৯, সৌম্য )
ফল: ঢাকা প্লাটুন ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মেহেদী হাসান।
Comments