ফেয়ারওয়েল প্রোমোশন!

পদোন্নতি পেয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হয়েছেন রইসুল আলম মন্ডল। কিন্তু মাত্র একদিনের জন্য এই পদে দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। তার চাকরির বয়স শেষ হয়ে যাওয়ায় সিনিয়র সচিব হওয়ার পরদিন অবসরে যাবেন তিনি।

পদোন্নতি পেয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হয়েছেন রইসুল আলম মন্ডল। কিন্তু মাত্র একদিনের জন্য এই পদে দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। তার চাকরির বয়স শেষ হয়ে যাওয়ায় সিনিয়র সচিব হওয়ার পরদিন অবসরে যাবেন তিনি।

ঘটনাটি অদ্ভুত মনে হলেও সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশ করা সরকারি গেজেট কিন্তু এটাই বলছে। রইসুলের পদোন্নতির আদেশ কার্যকর হবে ৩০ ডিসেম্বর। পরদিন থেকে অবসরোত্তর ছুটি (পিআরএল) শুরু হবে তার।

এদিক থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়েজ আহম্মদকে কিছুটা সৌভাগ্যবান বলা যেতে পারে। সোমবারের গেজেটে তাকেও পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার পদোন্নতির আদেশ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হয়েছে। ফলে একই দিনে দুজন অবসরে গেলেও সিনিয়র সচিব হিসেবে কয়েক দিন বেশি দায়িত্ব পালন করতে পারবেন তিনি।

এই দুজন ছাড়াও সেই গেজেটে সচিব পর্যায়ের আরও পাঁচ জনকে সিনিয়র সচিব হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন, মো. আনোয়ার হোসেন, সচিব, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়; মোফাজ্জল হোসেন, সচিব, রেলপথ মন্ত্রণালয়; শাহীন আহমেদ চৌধুরী, সদস্য, প্ল্যানিং কমিশন; সাজ্জাদুল হাসান, সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও মহিবুল হক, সচিব, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। এদের মধ্যে রাইসুল, ফয়েজ ও আনোয়ার ছাড়া আর সবার পদোন্নতির আদেশ কার্যকর হবে ৩১ ডিসেম্বর থেকে। মহিবুল, সাজ্জাদুল, মোফাজ্জল ও শাহীনের পিআরএল শুরু হবে যথাক্রমে আগামী বছরের ৫ জানুয়ারি, ১০ জানুয়ারি, ৪ মে ও ১ জুন। আনোয়ারের পিআরএল শুরু হবে ২০২১ সালের ৩০ জুন। আমলাতন্ত্রের ভেতরের অনেককেই অবাক করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত।

প্রাক্তন আমলাদের অনেকেই বলেছেন অবসরের আগ দিয়ে পদোন্নতি দেওয়ায় এদের অবসরকালীন সুযোগ সুবিধা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়লেও চাকরির বয়স না থাকায় তাদের কাজের সুফল পাওয়া যাবে না। সাবেক আমলা এম হাফিজউদ্দিন খান বলেছেন, অর্থনৈতিকভাবে বাড়তি সুবিধা দেওয়ার উদ্দেশ্য থেকেই এভাবে শেষ সময়ে এসে পদোন্নতি দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, করদাতাদের টাকা থেকে তারা বাড়তি সুবিধা পেলেও দীর্ঘ মেয়াদে তাদের কাছ থেকে দেশের জনগণ কোনো সেবা পাবে বা। কেন সচিব থেকে সিনিয়র সচিব হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে তারও ন্যায্য কারণ আমি খুঁজে পাই না।

প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের খুশি রাখতে ও বাড়তি আর্থিক সুবিধা দেওয়ার জন্যই সিনিয়র সচিব পদ তৈরি করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন।

সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলি ইমাম মজুমদারও এরকম পদোন্নতির পেছনে কোনো যৌক্তিক কারণ খুঁজে পান না। তিনি বলেন, জনগণের সেবা করার জন্য পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাকে কাজ করার সময় পেতে হবে।

পদোন্নতির আদেশে লেখা থাকে যে জনস্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ কথা উল্লেখ করে সাবেক এই মন্ত্রিপরিষদ সচিব প্রশ্ন তোলেন, “পদোন্নতির সঙ্গে সঙ্গে অবসরে গেলে তারা কীভাবে জনস্বার্থ সংরক্ষণ করবেন?”

২০১৫ সালের সর্বশেষ বেতন কাঠামো অনুযায়ী শীর্ষ গ্রেডের একজন সরকারি কর্মচারীর মূল বেতন ৭৮,০০০ টাকা (নির্ধারিত)। কিন্তু সিনিয়র সচিবরা পান ৮২,০০০ হাজার টাকা (নির্ধারিত)। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুখ্য সচিব ও সমমানের পদে থাকা কর্মকর্তাদের বিশেষ গ্রেডে মূল বেতন হয় ৮৬,০০০ টাকা (নির্ধারিত)।

Comments

The Daily Star  | English

Deeper crisis feared as 219 factories shut

With 219 garment factories shut in Ashulia yesterday amid worker unrest along the industrial belts, Bangladesh’s apparel sector is feared to get into a deeper crisis if production does not resume on Saturday after the weekend.  

4h ago