সৌম্যর ঝড়ো ফিফটির পরও পারল না কুমিল্লা

ভালো শুরু এনে দেন লিটন দাস ও আফিফ হোসেন। তাণ্ডব চালিয়ে শেষটা দারুণভাবে করেন অভিজ্ঞ শোয়েব মালিক ও অধিনায়ক আন্দ্রে রাসেল। রাজশাহী রয়্যালস গড়ে বড় স্কোর। জবাব দিতে নেমে সৌম্য সরকার তুলে নেন ঝড়ো হাফসেঞ্চুরি। ছোটান চার-ছক্কার ফুলঝুরি। কিন্তু সতীর্থরা তাকে সঙ্গ দিতে না পারায় হারের আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সকে।
soumya
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

ভালো শুরু এনে দেন লিটন দাস ও আফিফ হোসেন। তাণ্ডব চালিয়ে শেষটা দারুণভাবে করেন অভিজ্ঞ শোয়েব মালিক ও অধিনায়ক আন্দ্রে রাসেল। রাজশাহী রয়্যালস গড়ে বড় স্কোর। জবাব দিতে নেমে সৌম্য সরকার তুলে নেন ঝড়ো হাফসেঞ্চুরি। ছোটান চার-ছক্কার ফুলঝুরি। কিন্তু সতীর্থরা তাকে সঙ্গ দিতে না পারায় হারের আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সকে।

শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে কুমিল্লাকে রানে ১৫ হারিয়েছে রাজশাহী। আগের ম্যাচে একই দলের বিপক্ষে ৭ উইকেটে জিতেছিল তারা। দাসুন শানাকা দেশে ফিরে যাওয়ায় কুমিল্লাকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ডেভিড মালান। তবে দলের টানা চতুর্থ ও সবমিলিয়ে পঞ্চম হার এড়াতে পারেননি তিনি।

ষষ্ঠ ম্যাচে এটি রাজশাহীর পঞ্চম জয়। ১০ পয়েন্ট নিয়ে তারা আছে পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে। কুমিল্লা ৪ পয়েন্ট নিয়ে আছে পঞ্চম স্থানে।

রাসেলদের ছুঁড়ে দেওয়া ১৯১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় কুমিল্লা থামে ৪ উইকেটে ১৭৫ রানে। সৌম্য অপরাজিত থাকেন ৪৮ বলে ৮৮ রানে। তার ইনিংসে ছিল ৫ চার ও ৬ ছক্কা। তবে ব্যাট হাতে ৩৮ বলে ৬১ রান ও বল হাতে ১৯ রানে ১ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন মালিক।

কুমিল্লার শুরুটা জুতসই হয়নি। ২৯ রানের মধ্যে তারা হারায় ২ উইকেট। ওপেনিংয়ে উঠে আসা রবিউল ইসলাম রবিকে ফেরান ফরহাদ রেজা। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মালানকে দ্রুত সাজঘরে পাঠান রাসেল। ৫ বলে ৩ রান করেন তিনি।

উইকেটে গিয়েই রাসেলকে টানা দুটি চার মারেন সৌম্য। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ওপেনার স্টিয়ান ভ্যান জিলকে নিয়ে ৪৬ রানের জুটি গড়েন তিনি। কিন্তু পরিস্থিতির বিচারে বিপরীতমুখী ব্যাটিংয়ে ভ্যান জিল করেন ২৩ বলে ২১ রান। মালিকের বলে জীবন পাওয়ার পরের বলেই বোল্ড হয়ে যান তিনি।

এরপর সাব্বির রহমানের সঙ্গে সৌম্যর জুটিতে আসে ৫২ রান। কিন্তু ২৩ বলে ২৫ রানের ইনিংস খেলে আউট হওয়ার আগে সাব্বির চাপ আরও বাড়িয়ে যান। তার আগে অবশ্য হাফসেঞ্চুরি পেয়ে যান সৌম্য। মুখোমুখি হওয়া ৩৬তম বলে। চার বছর পর বিপিএলে ফিফটির দেখা পান এই বাঁহাতি।

শেষ ১৮ বলে কুমিল্লার প্রয়োজন দাঁড়ায় ৬৯ রান। সৌম্যর তাণ্ডবে তারা ৫৩ তুলতে পারলেও মাঝের ওভারগুলোতে কম রান আসার মাসুল দিতে হয় দলটিকে। শেষদিকে ডেভিড ভিসে ২ ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ৬ বলে ১৬ রানে।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা রাজশাহী ৪ উইকেটে ১৯০ রান তোলে। দলকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন দুই ওপেনার লিটন ও আফিফ। পাওয়ার প্লের সুবিধা কাজে লাগিয়ে প্রতি ওভারেই বাউন্ডারি আদায় করে নেন তারা। ফলে ৬ ওভার শেষে তাদের স্কোর দাঁড়ায় বিনা উইকেটে ৫৬ রান।

সপ্তম ওভারে দলের ওই রানেই ফেরেন লিটন। সানজামুল ইসলামকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে। আরেকটি ভালো শুরুকে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন তিনি। ১৯ বলে ২৪ রানের ইনিংসে ২ চার ও ১ ছয় মারেন লিটন।

মালিককে সঙ্গী হিসেবে পেয়ে অন্যপ্রান্তে আফিফ চালিয়ে খেলতে থাকেন। কিন্তু একের পর এক শট খেলার প্রবণতায় সৌম্যর বলে ইনসাইড এজে বোল্ড হয়ে যান এই বাঁহাতি। ৩০ বলে ৪৩ রান করেন আফিফ। তার ইনিংসে ছিল ৬ চার ও ১ ছয়।

বোপারাকে টিকতে দেননি মুজিব উর রহমান। অনেক বাইরের বল স্টাম্পে টেনে বোল্ড হন তিনি। কুমিল্লার বোলাররা এরপর আর উল্লাস করার সুযোগ পায়নি। চতুর্থ উইকেটে মালিক আর রাসেলের তোলা ঝড়ের পুরোটা গিয়েছে মূলত তাদের পেসারদের উপর দিয়ে।

৪২ বলে ৮৪ রানের জুটি গড়েন রাজশাহীর দুই বিদেশি। দলের সংগ্রহ পৌঁছে দেন দুইশর কাছে। ৩৫ বলে ফিফটি ছোঁয়া মালিক রানআউট হন ইনিংসের শেষ বলে। ৬১ রান করতে ৫ চারের সঙ্গে ৩ ছক্কা হাঁকান তিনি। অধিনায়ক রাসেল ২১ বলে ৩৭ রানে অপরাজিত থাকেন।

নিজের ইনিংসে রাসেল মারেন ৪ ছক্কা। পূরণ করেন ব্যক্তিগত একটি মাইলফলক। সব ধরনের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট মিলিয়ে চারশ ছক্কা পেরিয়ে গেছেন তিনি। ৩১২ ম্যাচে তার ছয়ের সংখ্যা এখন ৪০১টি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রাজশাহী রয়্যালস: ২০ ওভারে ১৯০/৪ (লিটন ২৪, আফিফ ৪৩, মালিক ৬১, বোপারা ১০, রাসেল ৩৭*; রনি ০/৩১, মুজিব ১/২৫, আল আমিন ০/৪৯, ভিসে ০/৩০, সানজামুল ১/২০, রবিউল ০/১৪, সৌম্য ১/১৮)

কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স: ২০ ওভারে ১৭৫/৪ (রবিউল ১২, ভ্যান জিল ২১, মালান ৩, সৌম্য ৮৮*, সাব্বির ২৫, ভিসে ১৬*; রাসেল ১/৪৪, ইরফান ১/২৪, তাইজুল ০/৬, রেজা ০/৪৮, কাপালি ০/৯, আফিফ ০/৮, বোপারা ০/১৬, মালিক ১/১৯)।

ফল: রাজশাহী রয়্যালস ১৫ রানে জয়ী।

ম্যাচসেরা: শোয়েব মালিক।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

9h ago