মালয়েশিয়া থেকে ‘অবৈধ’ ১০ হাজার শ্রমিকের ফেরা অনিশ্চিত

মালয়েশিয়া সরকার ঘোষিত অবৈধ বিদেশিদের ‘সাধারণ ক্ষমা’ আগামীকাল (৩১ ডিসেম্বর) শেষ হচ্ছে। অথচ, এখনো সেদেশ থেকে ১০ হাজারের বেশি বৈধ কাগজহীন প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকদের ফেরত আসার বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে আছে ফ্লাইট সঙ্কট এবং টিকিটের উচ্চমূল্যের কারণে।
Bangladeshi workers in Malaysia
ফাইল ছবি

মালয়েশিয়া সরকার ঘোষিত অবৈধ বিদেশিদের ‘সাধারণ ক্ষমা’ আগামীকাল (৩১ ডিসেম্বর) শেষ হচ্ছে। অথচ, এখনো সেদেশ থেকে ১০ হাজারের বেশি বৈধ কাগজহীন প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকদের ফেরত আসার বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে আছে ফ্লাইট সঙ্কট এবং টিকিটের উচ্চমূল্যের কারণে।

মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগের মতে, সেদেশের সরকার অবৈধ প্রবাসীদের ‘ব্যাক ফর গুড (বি-ফোর-জি)’ প্রোগ্রামের আওতায় গত ১ আগস্ট ‘সাধারণ ক্ষমা’ কার্যকর করা শুরু করে।

সেই প্রোগ্রাম অনুযায়ী অভিবাসী শ্রমিকরা যদি এই সুযোগটি গ্রহণ করতে না পারে, তাহলে তাদের জেল ও জরিমানার মুখোমুখি হতে হবে।

এমতাবস্থায়, বাংলাদেশ সরকার এবং ফিরতে চাওয়া ‘অবৈধ’ শ্রমিকরা আশা করছেন যে মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষ নিজ নিজ দেশে ফেরার এই সময়সীমা বাড়াবে।

দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগের বরাত দিয়ে মালয়েশিয়ার সংবাদপত্র নিউ স্ট্রেইটস টাইমস জানিয়েছে, এ পর্যন্ত প্রায় এক লাখ ৩৮ হাজার ৯০০ অবৈধ অভিবাসী বি-ফোর-জি প্রোগ্রামের আওতায় নিজ নিজ দেশে ফিরেছেন।

যাদের মধ্যে বাংলাদেশের নাগরিক ছিলেন ৩৮ হাজার ৭৩৪ জন। অন্যান্য দেশের মধ্যে ইন্দোনেশিয়া ৫৩ হাজার ৩২৮ জন, ভারত ২২ হাজার ৯৬৪ জন এবং মিয়ানমার ৬ হাজার ৯২৩ জন অবৈধ শ্রমিক নিজ নিজ দেশে ফিরিয়ে নিয়েছে।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, এই প্রোগ্রামের আওতায় নিবন্ধন করে ১০ থেকে ১৫ হাজার বাংলাদেশি কর্মী দেশে ফেরার অপেক্ষায় ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, “আমরা আশা করছি, মালয়েশিয়ার সরকার এই সময়সীমা বাড়াবে।”

মালয়েশিয়ায় বসবাসরত এক ‘অবৈধ’ বাংলাদেশি শ্রমিক সম্প্রতি দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, তিনি এই প্রোগ্রামটিতে নিবন্ধন করেছেন। তবে এখনও বাংলাদেশে ফিরতে পারেননি।

দেশে না ফিরতে না পারার একটি কারণ হিসেবে উড়োজাহাজের টিকিটের স্বল্পতার কথা জানান তিনি।

নিউ স্ট্রেইটস টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৮ জুলাই মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশে অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা কমানোর জন্য বি-ফোর-জি প্রোগ্রাম বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছে।

ফ্লাইট সঙ্কট নিরসনের জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ১২ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ঢাকা-কুয়ালালামপুর-ঢাকা রুটে কেবল অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য অতিরিক্ত ১৬টি ফ্লাইট চালানোর ঘোষণা দেয়।

ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে মোট ছয়টি এয়ারলাইনস সপ্তাহে ৫৮টি ফ্লাইট পরিচালনা করে। এর মধ্যে বিমান ১৪টি, মালয়েশিয়ার এয়ারলাইনস ১৪টি, মালিন্দো ১৩টি, ইউএস-বাংলা সাতটি, এয়ার এশিয়া সাতটি এবং রিজেন্ট এয়ারওয়েজ তিনটি ফ্লাইট পরিচালনা করে।

গত ৯ ডিসেম্বর প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একটি উদ্যোগের পরে, সরকার বি-ফোর-জি প্রোগ্রামে নিবন্ধনকারীদের টিকিট প্রতি ১০ হাজার টাকা অনুদান দিচ্ছে বলে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

গতকাল (২৯ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিটের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, “সরকারের উচিত যারা যথাযথ কাগজপত্র ছাড়াই শ্রমিকদের মালয়েশিয়ায় পাঠিয়েছিলো তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা।”

Comments

The Daily Star  | English

Floods cause Tk 14,421 crore damage in eastern Bangladesh: CPD study

The study highlighted that the damage represents 1.81 percent of the national budget for fiscal year (FY) 2024-25

2h ago