‘গণতন্ত্র উদ্ধার আন্দোলন’ নামে নতুন মঞ্চ ঘোষণা মান্নার

দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ‘গণতন্ত্র উদ্ধার আন্দোলন’ নামে একটি নতুন সংগঠনের ঘোষণা করেছে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।
ছবি: সংগৃহীত

দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ‘গণতন্ত্র উদ্ধার আন্দোলন’ নামে একটি নতুন সংগঠনের ঘোষণা করেছে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

আজ সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে একাদশ নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে রাজধানীর মৎস্য ভবনের সামনের সড়কে ‘গণতন্ত্র উদ্ধার আন্দোলন’ ব্যানারে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে নতুন সংগঠনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন মান্না ।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ আখ্যা দিয়ে ট্রাকের উপর মঞ্চ তৈরি করে সমাবেশ করেন তারা।

মান্না বলেন, “আজকে এখানে একটা সংগঠনের কথা বলেছি সেটা হচ্ছে, গণতন্ত্র উদ্ধার আন্দোলন। এটা নাগরিক ঐক্যের না, এটা বিএনপির না, এটা কোনো দলের না। এটা সবার।”

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জেএসডির আসম আবদুর রব, গণফোরামের জগলুল হায়দার আফ্রিক, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা নুর হোসাইন কাশেমী, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন, অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা দলের শাহ মো. আবু জাফর।

এছাড়া, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, প্রখ্যাত আলোকচিত্রী শহিদুল আলমও বক্তব্য রাখেন সমাবেশে।

সমাবেশে নেতা-কর্মীদের হাতে জাতীয় পতাকা ও কালো পতাকা ছাড়াও সরকারের পদত্যাগের দাবি সম্বলিত ব্যানার দেখা যায়।       

সভাপতির বক্তব্যে মান্না বলেন, “তৈরি থাকেন যেকোনো সময় এই সরকারের পতনের জন্য সর্বাত্মক আন্দোলনের কর্মসূচি দেবো। প্রতিজ্ঞা একটা আমরা এই আন্দোলন করব, আজ থেকে সেই আন্দোলনের শুরু।”

সরকারের উদ্দেশ্যে জেএসডির সভাপতি আবদুর রব বলেন, “একটা কথাই বলতে চাই, যাবেন,তবে ভদ্র ভাবে যাবেন, না অভদ্রভাবে যাবেন, এটা ডিসাইড করেন। আপনাকে যেতে হবে। আপনার থাকার আর কোনো সুযোগ নাই। সব রাস্তাই বন্ধ হয়ে গেছে। কিভাবে যাবেন আপনি সিদ্ধান্ত নিন।”

শহিদুল আলম বলেন, “আমি রাজনীতিবিদ নই। আমি আবারো বলছি, কে সরকারে আসবে আমার বিষয় নয়, সে নির্বাচিত হয়ে আসবে সেটা আমার দাবি। যে বাংলাদেশের জন্য এতোগুলো মানুষ সংগ্রাম করেছে, ত্যাগ করেছে, সেই বাংলাদেশে আমি ফিরে যেতে চাই।”

নিজের ওপর নির্যাতনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে প্রত্যেকটা নাগরিক জানে আমাদের দেশে কী হচ্ছে, কীভাবে চলছে এবং সেগুলো বললে যদি হাজতে যেতে হয়, সেই জিনিস বললেই যদি আপনি সরকার বিরোধী হন, সেই জিনিস বললেই যদি আপনি দেশের বিরোধী হন তাহলে আমি এই দেশ বিশ্বাস করি না।”

ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ বলেন, “এই সরকারের পদত্যাগ হলেই আমরা গণতন্ত্র ফিরে পাব, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন, লক্ষ লক্ষ নেতা-কর্মীর নামে মামলা প্রত্যাহার হবে।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, “শুধুমাত্র যে আমাদের গণতন্ত্রের নির্বাচন ব্যবস্থা বা গণতন্ত্রের সমাধি হয়েছে সেটা না, আমাদের বাক স্বাধীনতা, কথা বলার স্বাধীনতা, চলাফেরার স্বাধীনতা সমস্ত কিছু হরণ করা হয়েছে। গণতন্ত্র মানে হচ্ছে, প্রত্যেকটা মানুষের স্বাধীন ইচ্ছা থাকবে, প্রত্যেকটা মানুষের স্বাধীন অধিকার থাকবে, সেই অধিকার হরণ করার কারো অধিকার নাই। আমি আশা করি, বাংলাদেশের মানুষের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যে সংগ্রাম সেটা অব্যাহত থাকবে।”

Comments