গিবসের কথা শুনে মাথা নাড়েন, কিন্তু কিছুই বোঝেন না দেশি ক্রিকেটাররা!

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

তার সময়ে বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে আগ্রাসী ব্যাটসম্যানদের একজন ছিলেন হার্শেল গিবস। ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে ইনিংস গড়া, পরিস্থিতির দাবিতেই চড়াও হওয়ার মুন্সিয়ানায় গিবস ছিলেন চোখ ধাঁধানো। তেমন একজনকে এবার বিপিএলে কোচ করে এনেও সাফল্য পাচ্ছে না সিলেট থান্ডার। সাফল্য পাবে কী করে, ইংরেজির দুর্বলতায় গিবসের কথাই তো বুঝতে পারছেন না স্থানীয় ক্রিকেটাররা। কিন্তু না বুঝেও তারা না-কি মাথা নেড়ে বোঝার ভান করছেন!

কেবল ভাষাগত দুর্বলতাই নয়, স্থানীয় ক্রিকেটারদের খেলা বোঝার মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন দক্ষিণ আফ্রিকান এই কিংবদন্তি ক্রিকেটার।

এবার নতুন আদলের বঙ্গবন্ধু বিপিএলে সিলেট ফ্র্যাঞ্চাইজি খেলছে সিলেট থান্ডার নামে। টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত ৮ ম্যাচের মধ্যে ৭ ম্যাচই হেরেছে তারা। অঙ্কের হিসেবে সূক্ষ্ম একটা সম্ভাবনা থাকলেও বাস্তবে প্লে-অফে খেলার কোনো সম্ভাবনা নেই তাদের। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে শুরু হবে বিপিএলের আরেক ধাপের খেলা। তার আগে আশার রেখা দূরে থাক, গিবস শোনালেন চরম হতাশার কথা।

মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের নেতৃত্বে সিলেটে খেলছেন মোহাম্মদ মিঠুন, নাঈম হাসান, ইবাদত হোসেনদের মতো প্রতিশ্রুতিশীল বেশ কয়েকজন দেশি ক্রিকেটার। বাংলাদেশের স্থানীয় এসব ক্রিকেটারদের সঙ্গে এ কদিন কাজ করে অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হয়েছে গিবসের। গিবসের বলা ইংরেজি না-কি তারা বুঝতেই পারেন না, কিন্তু না বুঝেও সায় দিয়ে তৈরি করেন যোগাযোগের গোলমাল, ‘স্থানীয় ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে একটি বড় বাঁধা হলো, তাদের অনেকেই ইংরেজি বোঝে না। আমার জন্য তাই তাদেরকে অনেক কিছুই বোঝানো কঠিন। এটি খুবই হতাশার। আমি যখন কথা বলি, দেখি যে তারা শুনছে। কিন্তু দেখেই বুঝতে পারছি যে, এসব তাদের মাথায় ঢুকছে না। অনুধাবন করতে পারছে না।’

কেবল ভাষাই নয়, স্থানীয়দের ক্রিকেট খেলা বোঝার সার্বিক মান নিয়েও হতাশ গিবস, ‘খেলাটা নিয়ে তাদের সার্বিক বোঝাপড়ার মান আরও বাড়াতে হবে। একটা বড় ব্যাপার হলো, তারা খুবই টেম্পারামেন্টাল। ওদের কাছে কিছু ব্যাখ্যা করাই কঠিন আমার জন্য। কারণ তারা বুঝতেই পারে না।’

‘একটি উদাহরণ নেই, সেদিন (খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে) রুবেল মিয়া ব্যাটিং ওপেন করেছে। এক পর্যায়ে তার রান ছিল ২৮ বলে ১৪। টাইম আউটের সময় আমি মাঠে গিয়ে তাকে বললাম, ‘হচ্ছেটা কী? ২৮ বলে ১৪ রান!’ সে শুনে কেবল মাথা নাড়ল। এটা তার দোষ নয়, কিন্তু বাস্তবতা।’

তার সময়ের সেরা ক্রিকেটারদের একজন গিবস বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মানসিকতা দেখেও হয়েছেন হতাশ, ‘ম্যাচ পরিস্থিতি বুঝতে না পারার বড় একটি উদাহরণ এটি। ২০২০ সাল চলে এসেছে এখন। এখনও যদি একজন ব্যাটসম্যান বুঝতে না পারেন যে ২৮ বা ২৫ বলে ১৪ রান করলে আমাকে সেখান থেকে চালিয়ে যেতে হবে, পুষিয়ে দিতে হবে, তাহলে খুবই হতাশার। হতে পারে, আমি খুব বেশি প্রত্যাশা নিয়ে এখানে এসেছিলাম। হতে পারে, স্থানীয় ক্রিকেটারদের মানসিকতা নিয়ে একটু বেশিই আশা ছিল আমার।’

সীমিত পরিসরের ক্রিকেটে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচ হিসেবে কাজ করছেন গিবসের এক সময়ের সতীর্থ ও স্বদেশী নিল ম্যাকেঞ্জি। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ইংরেজি না বুঝেও মাথা নাড়ানোর এই হাল দেখে গিবস বুঝে পাচ্ছেন না ম্যাকেঞ্জি এখানে কীভাবে কাজ করছে, ‘আমি ঠিক নিশ্চিত নই, নিল ম্যাকেঞ্জি (বাংলাদেশ জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচ) যখন কথা বলে, ওরা কতজন ঠিকেভাবে বুঝেত পারে। আমি তো তার মতোই দক্ষিণ আফ্রিকান, আমি ঠিক জানি না, সে যা বলতে চায়, তার সবটুকু ওদের কাছে বুঝিয়ে দিতে পারে কি-না।’

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago