ধর্মচর্চা খেলায় সাহায্য করে, এমন ভাবনাই বরং কপটতা লাগে আমলার
শ্মশ্রুমণ্ডিত চেহারা, মুখে লেগে আছে প্রশান্তির আভা। প্রাণবন্ত হাসিতে নিপাট ভদ্রলোক হাশিম আমলা নিজের নান্দনিক ব্যাটিংয়ের সঙ্গে আলোচনায় আসেন প্রবল ধার্মিকতার জন্যও। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া দক্ষিণ আফ্রিকান এই তারকা খেলা আর ধর্ম দুটোকে রাখছেন আলাদা জায়গায়। ধর্মচর্চার শৃঙ্খল খেলোয়াড়ি জীবনে কাজে লাগে কি-না, এমন কোনো ভাবনা মাথায়ও আসেনি তার। বরং এই ধরনের চিন্তাকেই কপটতা মনে হয় ধর্মপ্রাণ আমলার।
জাতীয় দলের হয়ে একাধিকবার বাংলাদেশে খেলে গেছেন আমলা। বিপিএল খেলতে এলেন এবারই প্রথম। খুলনা টাইগার্সের হয়ে খেলতে আসা আমলা বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সিলেটে অনুশীলনের ফাঁকে জানালেন নিজের জীবন দর্শন।
ইসলাম ধর্মাবলম্বী আমলা নিজের ধর্মচর্চাকে পেশাদার খেলোয়াড়ি জীবন থেকে রাখেন আলাদা। প্রতিটি জায়গায় ভিন্ন ভিন্ন মাত্রার নিবেদন দিয়ে যাপন করতে চান জীবন, ‘এই প্রশ্ন আমার অনেক অনেকবার শুনতে হয়েছে। ইসলামের মূল ভিত্তিগুলো খুব সাধারণ এবং আপনাদের প্রায় সবাই সেটি জানেন। আমার ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই। ব্যাখ্যা করাও কঠিন। এটি রুদ্ধ নয়, তবে সবকিছুই সংযুক্ত। অনেকে বলে ইসলাম কেমন, ক্রিকেটে আপনার ধর্ম কীভাবে সাহায্য করে। আমার কাছে প্রশ্নটি অদ্ভুত লাগে, কারণ সবাই নিজের জীবন সর্বোচ্চ পছন্দ করে। বাকি সবকিছু নিজের মতোই চলে। ক্রিকেটে সাহায্য করা বা না করার ব্যাপার এটি নয়।’
‘ব্যাপারটি হলো, নিজের বিশ্বাসের জায়গায় আমরা কতটা নিবেদন দিতে পারছি। নিজের ক্যারিয়ার বা জীবনে সেরাটা করতে পারাই আসল। ধর্ম ক্রিকেটে সহায়তা করে বা করে না, এরকম কিছু আমার ভাবনায়ও আসে না। ক্রিকেটে সাহায্য করতে পারে বলেই ইসলামের নানা কিছু করতে হবে, এরকম ভাবি না। সেটি বরং কপটতা হবে। আমি নিজের বিশ্বাসের চর্চা করার চেষ্টা করি সর্বোচ্চ, বাকি সবকিছু নিজের মতোই চলে।’
৩৬ বছর বয়সী আমলা গত বিশ্বকাপের পরই ছেড়ে দেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। ২০০৪ সালে আন্তর্জাতিক অভিষেকের পর প্রায় দেড় যুগ তিন সংস্করণেই মাতিয়েছেন। বিশেষ করে টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিংয়ের অন্যতম ভরসাই ছিলেন তিনি।
Comments