রানে ফিরেও কুমিল্লাকে জেতাতে পারলেন না সাব্বির
আগের ম্যাচেই বাদ পড়েছিলেন। বুধবার খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে ওপেনার হয়েই ফিরলেন। রানও পেলেন। দলের বিপর্যয়ে ইনিংস মেরামত করেছিলেন। কিন্তু ফিনিশিংটা করতে পারলেন না। পারেননি সতীর্থরাও। উল্টো রবি ফ্র্যাইলিঙ্কের তোপে পড়ে দলটি। ফলে হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাদের। ৩৪ রানের দারুণ জয়ে নকআউট পর্বের স্বপ্ন জোরালো করল খুলনা টাইগার্স।
তবে লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটাই ভালো হয়নি কুমিল্লার। দলীয় ৩১ রানে দুটি উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে তারা। এরপর সৌম্য সরকারকে নিয়ে দলের হাল ধরেন ওপেনিংয়ে নামা সাব্বির। ৫১ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে সে চাপ সামলে নেন এ দুই ব্যাটসম্যান। কিন্তু এরপর ওভারে জোড়া উইকেট তুলে ফের তাদের চাপে ফেলে দেন রবি ফ্র্যাইলিঙ্ক। তবে ইয়াসির আলীকে সঙ্গে নিয়ে ৪৮ রানের আরও একটি জুটি গড়ে আবারো দলকে চাপমুক্ত করার চেষ্টা করেন সাব্বির।
তবে এরপর রানের গতি বাড়াতে গিয়ে আউট হয়ে যান সাব্বির। এরপর খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ইয়াসিরও। তবে দলের শেষ আশা হয়ে টিকে ছিলেন ডেভিড উইজে। কিন্তু হতাশ করেছেন তিনিও। ফ্র্যাইলিঙ্কের তোপে পড়ে লেজের দিকের ব্যাটসম্যানরাও কিছু করতে পারেননি। ফলে ১০ বল দূরে থাকতে ১৪৫ রানে গুটিয়ে যায় দলটি।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬২ রানের ইনিংস খেলেন সাব্বির। ৩৯ বলে ৭টি চার ও ২টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান তিনি। ইয়াসির আলির ব্যাট থেকে আসে ২৭ রান। খুলনার পক্ষে দারুণ বোলিং করে মাত্র ১৬ রানের খরচায় ৫টি উইকেট নিয়েছেন ফ্র্যাইলিঙ্ক। এছাড়া ২টি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ আমির ও শহিদুল ইসলাম।
এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভালো সূচনা পায় খুলনা। দুই ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত ও মেহেদী হাসান মিরাজ স্কোরবোর্ডে ৭১ রান যোগ করেন। এরপর অবশ্য ২৩ রানের ব্যবধানে এ দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে খেলায় ফিরেছিল কুমিল্লা। তবে তৃতীয় উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৮৫ রানের দারুণ একটি জুটি গড়ে দলকে লড়াকু সংগ্রহ এনে দেন রাইলি রুশো ও অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১৭৯ রান করে দলটি।
গত মৌসুম থেকেই বিপিএলে দুর্দান্ত খেলতে থাকা রুশো এদিনও দলের পক্ষে সর্বোচ্চ অপরাজিত ৭১ রানের ইনিংস খেলেন। মাত্র ৩৬ বল ৬টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে এ রান করেন। শান্তর ব্যাট থেকে আসে ২৯ বলে ৩৮ রান। মিরাজ ৩৯ রান করলেও বল খেলেন ৩৯টি। অপরাজিত ২৪ রান করেন মুশফিক। কুমিল্লার পক্ষে ১টি করে উইকেট নেন ডেভিড উইজে ও সৌম্য সরকার।
এ জয়ে ১০ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার চতুর্থ স্থানে উঠে এলো খুলনা। ঢাকা প্লাটুনের পয়েন্টও ১২। তবে রান রেটে এগিয়ে আছে দলটি। অন্যদিকে এ হারে নকআউট পর্বের স্বপ্ন কঠিন করে ফেলল কুমিল্লা। টিকে থাকতে হলে শেষ দুটি ম্যাচ জিততে তো হবেই, সঙ্গে তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য দলগুলোর ফলাফলের উপরও।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
খুলনা টাইগার্স: ২০ ওভারে ১৭৯/২ (শান্ত ৩৮, মিরাজ ৩৯, রুশো ৭১*, মুশফিক ২৪*; সানজামুল ০/২৩, রনি ০/১৭, মুজিব ০/২৫, আল-আমিন ০/৪৫, সৌম্য ১/৩৯, উইজে ১/৩০)।
কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স: ১৮.২ ওভারে ১৪৫ (জিল ১২, সাব্বির ৬২, মালান ১, সৌম্য ২২, মাহিদুল ০, ইয়াসির ২৭, উইজে ১০, রনি ০, সানজামুল ১, মুজিব ০*, আল-আমিন ০; আমির ২/১৮, ফ্র্যাইলিঙ্ক ৫/১৬, শফিউল ১/২৬, আলিস ০/৪৯, শহিদুল ২/৩৪)।
ফলাফল: খুলনা টাইগার্স ৩৪ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: রবি ফ্র্যাইলিঙ্ক (খুলনা টাইগার্স)
Comments