‘তোমরা হাত কেটেছো, আমরা পা কেটে নিবো’

যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে হামলা ও প্রতি-হামলার মধ্যে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ইরানের রাষ্ট্রপতি হাসান রুহানি বলেছেন, “তোমরা (আমেরিকা) সোলাইমানির হাত কেটেছো কিন্তু, আমরা এই অঞ্চলে তোমাদের পা কেটে নিবো।”

আজ (৮ জানুয়ারি) ভোররাতে ইরাকের পশ্চিমাঞ্চলে দুটি মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কয়েক ঘণ্টা পর রুহানি এমন বক্তব্য দিয়েছেন।

এ কথা সবাই জানেন যে, সামরিক শক্তিতে আমেরিকা ও ইরানের মধ্যে ব্যবধান বিস্তর। প্রায় দুই দশক আগে ইরাক আক্রমণের প্রাক্কালে দেশটির তৎকালীন রাষ্ট্রপতি সাদ্দাম হোসেন আমেরিকাকে নাস্তানাবুদ করার হুমকি দিয়েছিলেন। কিন্তু, বাস্তবে দেখা গিয়েছিলো, যুক্তরাষ্ট্রের শক্তির মুখে ইরাক কোনো প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারেনি। একই অবস্থা কি হতে পারে ইরানের ক্ষেত্রে? সামরিক বিশ্লেষকদের মত, ইরানকে কাবু করা এতো সহজ নয়।

ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলার পর পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ইরাক থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহার করে নিতে ইতোমধ্যে দেশটির সংসদে প্রস্তাব পাশ হয়েছে। ইরাকে ন্যাটো তার সামরিক প্রশিক্ষণ মিশন স্থগিত ঘোষণা করেছে। বিশ্ববাসীর দৃষ্টি এখন পুরো আরব ও উপসাগরীয় অঞ্চলে।

ইরানের প্রতিবেশী ইরাকে অবস্থানরত মার্কিন বাহিনীকে ইরান সমর্থিত কয়েকটি শিয়াগোষ্ঠী ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করতে সক্ষম। সিরিয়ার হোমসে ৮০০ সৈন্য সম্বলিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। সিরিয়ায় রয়েছে ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ, ইরাকি নুজাবা ও ফাতেমি গ্রুপ। এদের সহায়তায় আমেরিকার মিত্র ইসরাইলে আক্রমণও সম্ভব।

সিরিয়ার পাশে লেবাননে হিজবুল্লাহর অবস্থান অত্যন্ত শক্তিশালী। সেখান থেকে ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করতে প্রস্তুত রয়েছে হিজবুল্লাহ।

ইরানের পূর্বে আফগানিস্তানে ১৪,০০০ মার্কিন সেনার অবস্থান রয়েছে। ইরান সমর্থিত তালেবান গ্রুপ আফগানিস্তানে অবস্থানরত মার্কিন বাহিনীর জন্য হুমকি।

উপসাগরীয় অঞ্চলের সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, কাতার, ওমান ও বাহরাইনে মার্কিন মিত্রবাহিনীর শক্ত অবস্থান রয়েছে। পারস্য উপসাগরে (ভারত মহাসাগর থেকে হরমুজ প্রণালী) মার্কিন রণতরী অবস্থান করছে। দোহা, আবুধাবিতে রয়েছে মার্কিন বিমানঘাঁটি। এসব ঘাঁটিতে ইরান মাইন ও রকেট হামলা করার ক্ষমতা রাখে।

হরমুজ প্রণালী দিয়ে বিশ্বের প্রায় ২০ শতাংশ তেল পরিবহন করা হয়। ইরান নানাভাবে তেল পরিবহনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে।

এছাড়াও, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র সৌদি আরবে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করার সামর্থ্য রাখে। তারা স্পিডবোটে এসে লোহিত সাগরে মার্কিন স্বার্থে আঘাত হানতে পারে, সাগরে মাইনও ছড়িয়ে দিতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

Iran strikes back at Israel with missiles over Jerusalem, Tel Aviv

Iran's Supreme Leader accuses Israel of initiating war, vows painful revenge

3h ago