পুলিশের ‘সোর্সের’ বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ
রাজধানীর সবুজবাগ এলাকায় ১৩ বছরের এক কিশোরী স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এক সোর্সসহ তিন জনের বিরুদ্ধে।
গত ২ জানুয়ারি গভীর রাতে সবুজবাগের দক্ষিণ গাঁও এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি প্রকাশ্যে এসেছে এক সপ্তাহ পর।
তবে পুলিশ বলেছে, ধর্ষণে অভিযুক্ত তাদের সোর্স নয়। তারা মাদকাসক্ত এবং মাদক বিক্রেতা।
ভিকটিমের মা বাদী হয়ে তিন জনকে আসামি করে সবুজবাগ থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করেছেন। আসামি তিন জন হলেন, তুষার (২২), রিফাত (১৮) ও সজীব (১৮)। তার দাবি, এদের তুষার পুলিশের সোর্স।
পুলিশ বলেছে, আসামিদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে এবং ওই মেয়েকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।
কিশোরীর মা জানান তিন সন্তান ও স্বামীসহ তিনি দক্ষিণ গাঁও এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন। স্বামী রিকশা চালক। এবারের পিইসি পরীক্ষায় তার মেয়ে ৪.৮ পেয়েছে। ১ জানুয়ারি সকাল ১১টায় মার্কশিটের প্রিন্ট নিয়ে বাড়ির পাশের একটি দোকান থেকে বের হওয়ার পর প্রতিবেশী রিফাত তার মার্কশিট কেড়ে নেয়। রিফাত ঘুরতে যাওয়ার শর্তে মার্কশিট ফেরত দেওয়ার কথা বলেন। বাধ্য হয়ে ঘুরতে গেলে কিছু খাইয়ে তাকে অচেতন করা হয়। রাতে জ্ঞান ফিরার পর একটি ঘরের মধ্যে নিজেকে আবিষ্কার করে মেয়েটি। সেখান থেকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে তাকে পাশে একটি মাঠের দিকে নিয়ে যায় রিফাত।
মেয়েটির মা আরও বলেন, মাঠে পুলিশের একটি টহল দল মাঠের মধ্যে তাদের আটক করলে পুলিশের সোর্স তুষার দুজনকে ছাড়িয়ে পাশের একটি ঝিলপাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে তুষারের সহযোগী সজীব আসার পর ধর্ষণের চেষ্টা করে তুষার। অন্য দুজন তাকে সহায়তা করে। পরে হত্যার হুমকি দিয়ে পাশে একটি বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। তাকে অচেতন অবস্থায় ফেলে রেখে তিন জন পালিয়ে যায়।
মেয়ের মা জানান, রাতে বাসায় না ফেরায় তার মা-বাবা-আত্মীয়স্বজন সারারাত এলাকায় খোঁজাখুঁজি করেন। স্থানীয় একজন রিফাতের সঙ্গে মেয়েকে আগের দিন দেখার কথা জানান। পরে রিফাতকে এলাকার লোকজন জিজ্ঞাসাবাদ করে বাড়িটি থেকে মেয়েকে উদ্ধার করে।
এই ঘটনায় সবুজবাগ থানায় মামলা নিতে গড়িমসির অভিযোগ করে মেয়ের মা বলেন, থানায় সারারাত বসিয়ে রাখার পর মামলা নিয়ে মেয়েকে হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
এ ব্যাপারে সবুজবাগ থানার ওসি খন্দকার নাসির উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, মেয়ে এবং মেয়ের মা থানায় আসলে আমরা ঘটনাস্থল সম্পর্কে জানতে চাই। তারা ঠিকভাবে ঘটনাস্থল চিহ্নিত করতে পারছিল না। ঘটনাটা সঠিক কিনা যাচাই করার জন্য আমাদের একটু সময় লেগে যায়। পর দিন সকালে ঘটনাস্থল শনাক্ত করে মামলা নেই এবং তিনজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করি।
ওসি জানান, প্রধান আসামি তুষার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। দুজনের সহায়তায় সে মেয়েটিকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করে।
ওসি আরও বলেন, ঘটনার রাতে তাদের একটি টহল টিম রিফাত এবং মেয়েটাকে পথে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। তারা নিজেদেরকে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিলে পুলিশ তাদের যেতে দেয়। এসময় তুষার সেখানে ছিল না। আর সে আমাদের সোর্সও না। রিফাতই ওই দুজনকে ডেকে এনে ধর্ষণ করায়।
Comments