ব্যাটিংয়ে যেসব বদল এনে ধারাবাহিক সাফল্য লিটনের
নান্দনিক সব শটের প্রাচুর্যে ভরপুর লিটন দাস, ভাণ্ডারে সব শট পেয়ে মেরে খেলার প্রবণতার তার প্রবল। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত মারতে গিয়ে অনেক সময়েই মিটত না পরিস্থিতির দাবি। কোন সম্পদ কখন ব্যবহার করবেন, কখন লুকিয়ে রাখবেন সেই সংযম বোধেরও ঘাটতি ছিল চোখে পড়ার মতো। বিপিএলে এবার ধারাবাহিক সাফল্য পেতে এসব জায়গায় লিটন এনেছেন চিন্তার বদল। সেইসঙ্গে ব্যাটিং কোচ নিল ম্যাকেঞ্জির পরামর্শে বদলেছেন টেকনিক্যাল কিছু খুঁটিনাটি দিক।
শনিবার টুর্নামেন্টে তৃতীয় ফিফটি খেলে দলকে জিতিয়ে আসার পর নিজের ব্যাটিংয়ের বদলের কথা খোলাসা করেন জাতীয় দলের এই ওপেনার। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ৪৫ বলে ৭৫ করে ম্যাচ সেরা লিটন পুরো টুর্নামেন্টেই রাজশাহী রয়্যালসের সাফল্যের অন্যতম নায়ক।
১২ ম্যাচে ১৪০ ছুঁইছুঁই স্ট্রাইকরেটে ৪২২ রান করে রান সংগ্রহের তালিকায় উপরের দিকেই তার নাম। জানালেন নিজেকে আলোয় আনতে সংযম রপ্ত করেছেন তিনি, ‘আমি এর আগে যে কয়েকটি বিপিএল খেলেছি। মারলে মারতেই থাকতাম। আমার পরিকল্পনা থাকতো আমি সব ধরণের শট খেলতে পারি তাই সব শট খেলবো। কিন্তু এই বিপিএলে আমি অনেক শট কমিয়ে দিয়েছি। আগের দুই-তিন বিপিএলে হয়তো আমার ১৫ বলে ২৭ বা ৩০ রান থাকত। তখন আউট হয়ে যেতাম। কিন্তু এ বিপিএলে দেখবেন ওই জায়গাটায় আমি হয়তো স্বাভাবিক ক্রিকেট খেলছি।’
‘পাওয়ার প্লে’তে অবশ্য বোলাররা ব্যাকফুটে থাকে সব সময়। আমি যদি একটা চার মেরে দেই পরের বলে বোলাররা কি করবে তা একবার হলেও চিন্তা করতে পারে। এখানে নিজেকে একটু ব্যাক করার চিন্তা করছি। তাই সব ধরণের শট খেলা বাদ দিয়েছি। বেছে বেছে খেলছি। একটা বোলার মারের পর আরেকটা বাজে বল দিচ্ছে তাই আমাকে বেশি কিছু করতে হচ্ছে না। তাই রান পাওয়া সমস্যা হচ্ছে না।’
পায়ের চলাচল বদল করেছেন, বল তাই দ্রুত পিক করতে পারছেন। মাথার অবস্থান নিয়েও জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচ নিল ম্যাকেঞ্জির সঙ্গে কাজ করে এনেছেন বদল, ‘ব্যাটিংয়ে আমার ফুট মুভমেন্ট একটু পরিবর্তন হয়েছে। আমি আগে এভাবে ব্যাটিং করতাম না। নিলের (ব্যাটিং কোচ নিল ম্যাকেঞ্জি) সঙ্গে অনেক দিন হলো কাজ করছি। কাজের কারণে একটু পরিবর্তন হয়েছে। দুই-তিনটা ম্যাচেও আমার হেড নিচে নেমে যাচ্ছে। সেখানে এখনও কাজ করছি। হেডটা যেন না নামে।’
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচেই ফিফটি এসেছে লিটনের ব্যাটে। আগে লম্বা ইনিংসের চেয়ে ভাবতেন কেবল স্ট্রাইকরেট নিয়ে। এবার স্ট্রাইকরেট একটু কম হলেও চাইছেন বেশি সময় উইকেটে কাটাতে। এই তরিকা বেশ কাজে দিচ্ছে তার, তবে হাতে শট থাকায় বড় রান করেও ধরে রাখতে পেরেছেন ১৪০ (১৩৯.৭২) ছুঁইছুঁই স্টাইকরেট ‘পরপর দুই ম্যাচে ফিফটি করা এটা তো অবশ্যই তৃপ্তিদায়ক। আমি এটা অনুভব করি। টুর্নামেন্ট যখন শুরু হয় তখন হয়তো আমার লক্ষ্য এমন ছিল না। লক্ষ্য ছিল স্বাভাবিক ক্রিকেট খেলব। হয়তো আমার স্ট্রাইক রেট থাকবে ১৪০ এর বেশি। নিজের মাথার ভেতরে এটা ছিল যে ১৩০ বা ১৩৫ এর ভেতরে থাকব। আবার ১৩০ (স্টাইকরেট) এর নিচেও থাকতে পারি। কিন্তু আমার পরিকল্পন ছিল লম্বা ইনিংস খেলার। ১২ কিংবা ১৫ ওভার পর্যন্ত খেলার।’
Comments