বোতলবন্দী শান্তর যার প্রেরণায় অমন বিস্ফোরণ

Nazmul Hossain Shanto
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

অমিত সম্ভাবনাময় ক্রিকেটার হিসেবে বাংলাদেশের ক্রিকেটে উঠা আসা নাজমুল হোসেন শান্ত যেন হয়ে পড়ছিলেন এক গোলকধাঁধা! অনুশীলনে তার স্কিল দেখে মুগ্ধ হন যেকোনো কোচ। কিন্তু মাঠের খেলায় আর মেলেনা সেই মুন্সিয়ানা। ৫০টি টি-টোয়েন্টি খেলে করেছিলেন কেবল একটা ফিফটি। এই সংস্করণে তিনি খেলতে পারেন কি-না এই বিশ্বাসই উঠে গিয়েছিল তার। সবার চোখ কপালে তুলে সেই শান্তই করে বসলেন এবারের বিপিএলে বাংলাদেশিদের মধ্যে প্রথম সেঞ্চুরি। পরে তিনি জানিয়েছেন তার অমন তেতে ওঠার রহস্য।

অথচ এবারের বিপিএলে আসা-যাওয়ার মধ্যে থেকে আট ম্যাচ খেলেছিলেন। তাতে মোটে ১১৫ রান। আর শনিবার (১১ জানুয়ারি) এক ম্যাচেই এলো ১১৫ রান। আট চারের সঙ্গে মেরেছেন সাতটি ছক্কা।

শান্তর আগের পারফরম্যান্সের সঙ্গে এই ইনিংস কতটা বেমানান, আরও কিছু পরিসংখ্যানই দেবে সে সাক্ষ্য। এই সেঞ্চুরির আগে ৫০টি টি-টোয়েন্টিতে পঞ্চাশ ছুঁয়েছিলেন মাত্র একবার। মোট ক্যারিয়ার রান ৭১৪, গড় মাত্র ১৬.৬০। আগে খেলা ৪৬ ইনিংস মিলিয়েই যেখানে মারতে পেরেছিলেন মাত্র ১৪ ছক্কা, এই এক ইনিংসেই মেরেছেন তার অর্ধেক। সাধারণ মানের ১১৪.৪২ ক্যারিয়ার স্ট্রাইক রেটকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এদিন ঝলমল করছে ২০১.৭৫ স্ট্রাইক রেট।

ম্যাচ শেষে শান্ত স্বীকার করলেন, একটা পর্যায়ে নিজের উপর থেকেই বিশ্বাস উবে গিয়েছিল তার। সেই বিশ্বাস যিনি ফিরিয়েছেন, সেই খালেদ মাহমুদ সুজনকে তিনি দিলেন কৃতিত্ব, ‘সত্যি বলতে আসলেও খুব হতাশ ছিলাম। এটা অস্বীকার করার কিছু নেই। এই একটা ফরম্যাটে আমি হতাশ হয়ে যাই। লুকানোর কিছু নেই। শেষ দুই মাস আমার উপরে ভরসা রেখেছিলেন খালেদ মাহমুদ সুজন স্যার ও কুমিল্লার কোচ সোহেল স্যার। সবসময় উনারা আমাকে বলেছেন, ‍তুই কতো ভালো খেলোয়াড় আমরা দেখেছি। আমাদের সেই বিশ্বাসটা আছে। তারা দুজন আমাকে যে সমর্থন করেছেন এবং এখনও যে সমর্থন করে যাচ্ছেন, সেটা আমার ব্যাটিংয়ে কাজে লেগেছে। আমারও ভেতর থেকে এসেছে যে আমি পারি। প্রথম চার ম্যাচে আমি রান করিনি। তারপরও আমি হতাশ হইনি যে আমি পারব না বা অন্য কিছু। ওই দুজন আমাকে খুব সাহায্য করেছে।’

এবার বিপিএলে প্রথম চার ম্যাচে শান্ত করেন মাত্র ৫ রান। তবু তাকে আশা জুগিয়ে পিঠ চাপড়ে দিয়েছেন খুলনা টাইগার্সের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সুজন, বললেন বাঁহাতি ওপেনার, ‘এবার প্রথম চার ম্যাচে কোনো রানই করিনি। তারপরও খুব মন খারাপ করতে হয়নি। কারণ ওই দুজন খুব সাহায্য করেছেন। চার ম্যাচ খারাপ করার পর সুজন স্যার এসে বললেন, “তুই এই দলের মূল ক্রিকেটার। তুই অবশ্যই পারবি।” এই ধরনের কথা আসলে অনেক অনুপ্রাণিত করে। এজন্যই হয়তো আজকের ইনিংসটি খেলতে পেরেছি।’

Comments

The Daily Star  | English
rally demanding ban on awami league in Dhaka

Blockade at Shahbagh demanding AL ban

The demonstration follows a sit-in that began around 10:00pm last night in front of the Chief Adviser's residence

5h ago