‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত-আহত হওয়ার পরের সন্দেহ

গতকাল (১২ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর মালিবাগে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন সন্দেহভাজন মাদক ব্যবসায়ী নিহত হন। সেসময় পায়ে গুলিবিদ্ধ হন এক নারীসহ আরও এক ব্যক্তি। পরে এ ঘটনাকে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হিসেবে উল্লেখ করে র‌্যাব।
gunfight logo
প্রতীকী ছবি: স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

গতকাল (১২ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর মালিবাগে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন সন্দেহভাজন মাদক ব্যবসায়ী নিহত হন। সেসময় পায়ে গুলিবিদ্ধ হন এক নারীসহ আরও এক ব্যক্তি। পরে এ ঘটনাকে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হিসেবে উল্লেখ করে র‌্যাব।

র‌্যাব-২ এর কোম্পানি কমান্ডার মো. মহিউদ্দিন ফারুক দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, নিহত সৈয়দ ইকবাল আহমেদ (৪২) কক্সবাজার থেকে রাজধানীতে ইয়াবা আনতেন।

গতকাল সকাল সাতটার দিকে একটি আন্তঃনগর বাসের টিকিট বিক্রয় কেন্দ্রের কাছে এ ঘটনা ঘটে।

সেই এলাকাটিতে কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সিসিটিভি ক্যামেরা আছে। পুরো ঘটনাটি সিসিটিভির ফুটেজে থাকার কথা।

সেখানকার দোকানের এক কর্মচারী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন, র‌্যাব কর্মকর্তারা সিসিটিভির ফুটেজটি মুছে ফেলেছে এবং রেকর্ডটি কাউকে দেখতে দেয়নি।

গতকাল বিকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ঘটনাস্থল পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলা হয়েছে।

এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ অন্য দুজন হলেন রফিকা জেসমিন (২৯) এবং তার ভাই মাশনুর হাসান (২২)। পায়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেকে) ভর্তি করা হয়েছে।

র‌্যাব জানিয়েছে, রফিকা জেসমিন নিহত ইকবালের স্ত্রী এবং রফিকার ভাই হাসান একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তারা দুজনও সন্দেহভাজন মাদক পাচারকারী।

মহিউদ্দিনের মতে, র‌্যাব কর্মকর্তাদের আগেই জানানো হয়েছিলো কক্সবাজার থেকে ইয়াবা নিয়ে একজন ঢাকায় আসছেন। এ তথ্য জানার পর থেকে র‌্যাব সেখানে অপেক্ষা করছিলো।

মহিউদ্দিন আরও জানিয়েছেন, বাসটি সেখানে পৌঁছানোর পর সব যাত্রী চলে যান। কিন্তু, ইকবাল কমপক্ষে ১২টি ব্যাগ নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন। প্রায় ১৫ মিনিট পর ইকবালকে নিতে সেখানে দুটি গাড়ি আসে। গাড়ি থেকে নেমে রফিকা ও হাসান ব্যাগগুলো গাড়িতে তুলতে শুরু করেন। সেসময় র‌্যাব সদস্যারা এলাকাটি ঘিরে ফেলে।

সেই র‌্যাব কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, র‌্যাবের উপস্থিতি বুঝতে পেরে ইকবাল র‌্যাব সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি করতে শুরু করলে র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। ফলে সন্দেহভাজনদের সঙ্গে র‌্যাবের ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হয়।

গুলিবিদ্ধদের ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক ইকবালকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় তিন র‌্যাব সদস্য আহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন মহিউদ্দিন।

র‌্যাব-২ এর এই কমান্ডার বলেছেন, তদন্তের জন্য র‌্যাব সেখানকার দোকানগুলো থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। ঘটনাস্থল থেকে এক লাখ ইয়াবা, নগদ ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে।

ওই এলাকার এক দোকানদার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন, “আমরা দোকানের ভিতরে ছিলাম এবং সাত থেকে আটটি বন্দুকের গুলির শব্দ শুনতে পাই...। আমাদের (সিসিটিভির) ফুটেজ দেখার অনুমতি দেওয়া হয়নি।”

ঢামেকে চিকিৎসাধীন সন্দেহভাজনদের কঠোর নজরদারিতে রেখেছেন র‌্যাব। এমনকী, সাংবাদিকদের সঙ্গেও তাদের বলার অনুমতি দেওয়া হয়নি।

ইকবালের ভাই ডেইলি স্টারকে বলেছেন, “আমি জানতাম আমার ভাই চট্টগ্রামে ব্যবসা করেন। কিন্তু, তিনি কী করতেন তা আমি জানতাম না।”

ইকবালের বিরুদ্ধে কমপক্ষে ছয়টি মাদকের মামলায় অভিযোগ রয়েছে বলে দাবি করেছে র‌্যাব।

মহিউদ্দিন জানিয়েছেন, গত তিন সপ্তাহে ব্যাংক ও অন্যান্য মাধ্যমে ইকবালের কাছে প্রায় দেড় কোটি টাকা পাঠিয়েছে রফিকা।

একইদিনে, র‌্যাব কর্মকর্তারা ইকবালের আদাবরের বাসায় অভিযান চালিয়ে ১০ হাজার পিস ইয়াবা এবং নগদ ৪ লাখ টাকা উদ্ধার করেন বলে জানান মহিউদ্দিন।

Comments

The Daily Star  | English
government changed office hours

Govt office hours 9am-3pm from Sunday to Tuesday

The government offices will be open from 9:00am to 3:00pm for the next three days -- from Sunday to Tuesday -- this week, Public Administration Minister Farhad Hossain said today

1h ago