আমিরের তোপে রাজশাহীকে হারিয়ে ফাইনালে খুলনা

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

দলকে লড়াকু পুঁজি এনে দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এরপর বল হাতে তোপ দাগালেন মোহাম্মদ আমির। দুই মিলে রাজশাহী রয়্যালসকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছে খুলনা টাইগার্স। তাতে বঙ্গবন্ধু বিপিএলের ফাইনালের টিকেট কাটল দলটি। তবে হারলেও ফাইনালে খেলার সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়নি রাজশাহীর। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে আরও সুযোগ থাকছে তাদের। 

সোমবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রাজশাহী রয়্যালসকে ২৭ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে খুলনা। মূলত এদিন খুলনার পাকিস্তানি পেসার আমিরের দুর্দান্ত বোলিংয়েই জয় পায় দলটি। রীতিমতো রুদ্ররূপ ধারণ করেছিলেন আমির। টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যানকে বিদায় করেন পাওয়ার প্লের মধ্যেই। পেতে পারতেন আরও একটি। সহজ ক্যাচ ছাড়েন শহিদুল ইসলাম।

লক্ষ্য তাড়ায় এদিন শুরুতেই মোহাম্মদ আমিরের তোপে পড়ে রাজশাহী। দলীয় ২২ রানেই দুই ইনফর্ম ওপেনার লিটন কুমার দাস ও আফিফ হোসেন ধ্রুবর সঙ্গে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান অলক কাপালীকেও তুলে নেন তিনি। তাতে বড় চাপে পড়ে যায় দলটি। এরপর আমিরের সঙ্গে তোপ দাগান প্রোটিয়া অলরাউন্ডার রবি ফ্র্যাইলিঙ্কও। স্কোরবোর্ডে ১ রান যোগ হতেই ফেরান রবি বোপারাকে। এরপর ফের বোলিংয়ে এসে রাজশাহী অধিনায়ক আন্দ্রে রাসেলকে ফেরান আমির। আর বল হাতে নিয়ে শহিদুল ইসলাম ফেরান ফরহাদ রেজাকে। কার্যত তখনই শেষ হয়ে যায় রাজশাহীর আশা।

দলীয় ৩৩ রানে ৬ উইকেট হারানো দলের হাল তাইজুল ইসলামকে নিয়ে ধরেন শোয়েব মালিক। ৭২ রানের জুটি গড়ে দলের ইনিংস মেরামত তো করেনই, জয়ের স্বপ্নও জাগিয়ে তোলেন এ পাকিস্তানি। এ জুটিও ভাঙেন সেই আমির। ১৮তম ওভারে নিজের শেষ ওভার করতে এসে এ দুই সেট ব্যাটসম্যানকেই ফেরান তিনি। ফলে শেষ পর্যন্ত এক বল বাকী থাকতে ১৩১ রানে গুটিয়ে যায় দলটি।

সতীর্থদের ব্যর্থতায় ধারার বিপরীতে এদিন দুর্দান্ত ব্যাটিং করে ৮০ রানের ইনিংস খেলেন মালিক। ৫০ বলে এ রান করতে ১০টি চার ও ৪টি ছক্কা হাঁকান তিনি। এছাড়া তাইজুলের ব্যাট থেকে আসে ১২ রান। তবে দিনের আলো কেড়ে নেন ওই আমির। মাত্র ১৭ রানের খরচায় ৬টি উইকেট তুলে নেন তিনি। যা বিপিএলের সেরা বোলিং ফিগার। এমনকি আমিরের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সেরা ফিগারও বটে।

এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে রাজশাহী। তবে শুরুটা ভালো হয়নি তাদের। দলীয় ১৫ রানেই ছন্দে থাকা ওপেনার মেহেদী হাসান মিরাজকে হারায় তারা। স্কোরবোর্ডে কোন রান যোগ না করতে আরেক ইনফর্ম ব্যাটসম্যান রাইলি রুশোকেও হারায় দলটি। ফলে বেশ চাপে পড়ে যায় রাজশাহী।

এরপর শামসুর রহমান শুভকে নিয়ে দলের হাল ধরেন আরেক ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত। গড়েন ৭৮ রানের দারুণ এক জুটি। তবে শুরুতেই ফিরে যেতে পারতেন শান্তও। ব্যক্তিগত ৫ রানে শোয়েব মালিকের বলে বোল্ড হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তবে রিপ্লেতে দেখা যায় বল করার সময় ক্রিজে পা ছিল না মালিকের। নো-বলের সুবাদে সে যাত্রা টিকে যান এ ওপেনার।

এরপর ফের আরও এক দফা জীবন পেয়েছেন শান্ত। ব্যক্তিগত ৫৭ রানে সহজ ক্যাচ ছেড়েছেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। সে শান্ত শেষ পর্যন্ত খেলেছেন হার না মানা ৭৮ রানের ইনিংস। ৫৭ বলে ৭টি চার ও ৪টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। পঞ্চম উইকেটে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের সঙ্গেও দারুণ জুটি গড়েন শান্ত। তাতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৫৮ রানের সংগ্রহ পায় খুলনা। রাজশাহীর পক্ষে ৪ ওভারে মাত্র ১৩ রান খরচ ২টি উইকেট পেয়েছেন মোহাম্মদ ইরফান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

খুলনা টাইগার্স: ২০ ওভারে ১৫৮/৩ (শান্ত ৭৮, মিরাজ ৮, রুশো ০, শামসুর ৩২, মুশফিক ২১, নজিবুল্লাহ ১২; ইরফান ২/১৩, রাহী ০/২১, মালিক ০/২৩, রাসেল ০/৩৩, রাব্বি ০/২০, তাইজুল ০/২২, বোপারা ১/২৪)।

রাজশাহী রয়্যালস: ২০ ওভারে ১৩১ (লিটন ২, আফিফ ১১, মালিক ৮০, কাপালী ০, বোপারা ১, রাসেল ০, রেজা ৩, তাইজুল ১২, রাব্বি ১১*, রাহী ৭, ইরফান ০; আমির ৬/১৭, ফ্র্যাইলিঙ্ক ১/২৯, শফিউল ০/৩৬, শহিদুল ১/১৫, আমিনুল ০/২৬, মিরাজ ২/৬)।

ফলাফল: খুলনা টাইগার্স ২৭ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মোহাম্মদ আমির (খুলনা টাইগার্স)।

Comments

The Daily Star  | English
election before ramadan 2026 in Bangladesh

Election could be in February, Yunus indicates

He said it will be possible if preparations completed, sufficient progress made in reforms and judicial matters

7h ago