বঙ্গবন্ধু বিপিএলে চ্যাম্পিয়ন আন্দ্রে রাসেলের রাজশাহী

আন্দ্রে রাসেল যখন উইকেটে নামেন, মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ভরপুর গ্যালারি তখন উল্লাসরত। নেমেই বুঝি ঝড় তুলবেন এ ক্যারিবিয়ান। কিন্তু এদিন এ ক্যারিবিয়ানের সঙ্গে ব্যাট করতে নেমে প্রথমে ঝড় তুললেন পাকিস্তানি অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নাওয়াজ। পরে রাসেলও পিটিয়েছেন ছক্কা। শেষ তিন ওভারে তারা যা রান এনেছেন, তাতেই তৈরি হয়ে যায় তফাৎ। বল হাতেও নাওয়াজ-রাসেলই রেখেছেন অবদান। মুশফিকুর রহিমদের থামিয়ে তাদের শিরোপা জেতা শেষ দিকে হয়েছে বেশ সহজ।
Rajshahi Royals
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

আন্দ্রে রাসেল যখন উইকেটে নামেন, মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ভরপুর গ্যালারি তখন উল্লাসরত। নেমেই বুঝি ঝড় তুলবেন এ ক্যারিবিয়ান। কিন্তু এদিন এ ক্যারিবিয়ানের সঙ্গে ব্যাট করতে নেমে প্রথমে ঝড়  তুললেন পাকিস্তানি অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নাওয়াজ। পরে রাসেলও পিটিয়েছেন ছক্কা। শেষ তিন ওভারে তারা যা রান এনেছেন, তাতেই তৈরি হয়ে যায় তফাৎ। বল হাতেও নাওয়াজ-রাসেলই রেখেছেন অবদান। মুশফিকুর রহিমদের থামিয়ে তাদের শিরোপা জেতা শেষ দিকে হয়েছে বেশ সহজ। 

শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৪ উইকেটে ১৭০ রান করেছিল রাজশাহী। ওই রান টপকাতে গিয়ে ১৪৯ রানে থেমে মুশফিকুর রহিমের খুলনা টাইগার্স হেরেছে ২১ রানে। নতুন আদলে হওয়া সপ্তম আসরে শিরোপা উঠেছে আন্দ্রে রাসেলদের হাতে। 

লক্ষ্য তাড়ায় এদিন শুরুটাই ভালো হয়নি খুলনার।  ১১ রানেই ছন্দে থাকা দুই ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত ও মেহেদী হাসান মিরাজকে হারায় তারা। শুরুতেই চাপে পড়ে যায় দলটি। তবে তৃতীয় উইকেটে রাইলি রুশোকে ৭৪ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে সে চাপ সামলে নেন শামসুর রহমান। এরপর অবশ্য ২০ রানের ব্যবধানে এ দুই সেট ব্যাটসম্যান সহ ৩ উইকেট হারালে ফের চাপে পড়ে যায় খুলনা।

তখনও উইকেটে টিকে ছিলেন মুশফিকুর রহিম। এবারের আসরে দুর্দান্ত ব্যাট করে চলেছিলেন তিনি। রবি ফ্র্যাইলিঙ্ককে নিয়ে ভালো কিছুর ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আন্দ্রে রাসেলের বলে বোল্ড হয়ে গেলে কার্যত শেষ হয়ে যায় তাদের আশা। এরপর ফ্র্যাইলিঙ্ক ফিরে গেলে হার নিশ্চিত হয়ে যায় তাদের। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৪৯ রান করে থামে দলটি।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫২ রানের ইনিংস খেলেন শামসুর। ৪৩ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। রুশোর ব্যাট থেকে আসে ২৬ বলে ৩৭ রান। রাজশাহীর পক্ষে দারুণ বোলিং করেছেন মোহাম্মদ ইরফান। ৪ ওভার বল করে ১৮ রানের খরচায় নেন ২টি উইকেট। সবচেয়ে বড় কথা ইনিংসের ১৯তম ওভারে বল করতে এসে কোন রান দেননি এ পেসার। এছাড়া রাসেল ও রাব্বি শিকার করেন ২টি করে।  

এর আগে এদিন টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি রাজশাহীর। নকআউট পর্বে আরও একবার ব্যর্থ হলো লিটন কুমার দাস ও আফিফ হোসেন ধ্রুব জুটি। অথচ গ্রুপ পর্বে নয় ম্যাচে ছয়বার পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের জুটি গড়ে তারা। অবশ্য গ্যালি থেকে দৌড়ে শর্ট থার্ডম্যানে আফিফের ক্যাচ দারুণ দক্ষতায় ঝাঁপিয়ে পড়ে লুফে নেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

এরপর দলের হাল ইরফান শুক্কুরকে নিয়ে ধরেন লিটন কুমার দাস। ৪৯ রানের জুটিও গড়েন। কিন্তু নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। তার ব্যাট থেকে ২৫ রান আসলেও খরচ করতে হয়েছে ২৮টি বল। যা তার নামের পাশে বড্ড বেমানান। তবে সে ঘাটতি পুষিয়ে দেন শুক্কুর। ৩৫ বলে ৫২ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে রানের চাকা সচল রাখেন। ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় সাজান এ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান।

শুক্কুরের বিদায়ের পর মাঠে নামেন আন্দ্রে রাসেল। শুরুতে কিছুটা দেখে শুনেই খেলেন। প্রথম ছক্কাটিও আসে মিস হিট থেকে। এরপর শহিদুলের বলে ব্যক্তিগত ৭ রানে নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে একটি জীবনও পান তিনি। তবে রাসেল দেখে শুনে খেললেও শুরু থেকেই আগ্রাসী মোহাম্মদ নাওয়াজ। রবি ফ্র্যাইলিঙ্কের করা

১৮তম ওভারে দুটি করে ছক্কা ও চারে ২১ রান আসে তার সৌজন্যেই। এরপর পার্টিতে যোগ দেন রাসেলও। পরের ওভারে মোহাম্মদ আমিরের কাছ থেকে এক ছক্কা ও দুই চারে ১৮ রান আদায় করেন নেন। এ দুই ব্যাটসম্যানের আগ্রাসনে শফিউল ইসলামের করা শেষ ওভারেও আসে ১৫ রান। ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৭০ রান তোলে দলটি। মূলত শেষ তিন ওভারের আগ্রাসনেই লড়াকু সংগ্রহ পায় রাজশাহী। শেষ তিন ওভারে আসে ৫১ রান।

আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে এদিন রাসেলকেও ছাড়িয়ে যান নাওয়াজ। মাত্র ২০ বলে ৪১ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন তিনি। ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ১৬ বলে ২৭ রানের ইনিংস খেলেন রাসেল। ৩টি ছক্কায় এ রান করেন এ ক্যারিবিয়ান। খুলনার পক্ষে ৩৫ রানের খরচায় ২টি উইকেট পেয়েছেন মোহাম্মদ আমির।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রাজশাহী রয়্যালস: ২০ ওভারে ১৭০/৪ (লিটন ২৫, আফিফ ১০, শুক্কুর ৫২, শোয়েব ৯, রাসেল ২৭*, নাওয়াজ ৪১*; আমির ২/৩৫, ফ্র্যাইলিঙ্ক ১/৩৩, তানবির ০/১১, শফিউল ০/৩৮, মিরাজ ০/২৭, শহিদুল ১/২৩)।

খুলনা টাইগার্স: ২০ ওভারে ১৪৯/৮ (শান্ত ০, মিরাজ ২, শামসুর ৫২, রুশো ৩৭, মুশফিক ২১, নজিবুল্লাহ ৪, ফ্র্যাইলিঙ্ক ১২, শহিদুল ০, শফিউল ৭*, আমির ১*; ইরফান ২/১৮, রাহী ১/২৪, রাসেল ২/৩২, মালিক ০/১৫, নাওয়াজ ১/২৯, রাব্বি ২/২৯)।

ফলাফল: রাজশাহী রয়্যালস ২১ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: আন্দ্রে রাসেল (রাজশাহী রয়্যালস)।

ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট: আন্দ্রে রাসেল (রাজশাহী রয়্যালস)

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

8h ago