একজন শিক্ষকের মানবসেবা

shekhor
ঔষধি গাছ হাতে চন্দ্র শেখর রায়। ছবি: স্টার

ভেষজ ওষুধের ব্যবহার লালমনিরহাটের প্রত্যন্ত গ্রাম গোরাল এবং এর আশেপাশের গ্রামগুলোতে স্বস্তির আবহ তৈরি করেছে। বিনামূল্যে মানুষের চিকিৎসায় ভেষজ ওষুধ দিচ্ছেন একজন স্কুল শিক্ষক।

টেপারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক চন্দ্র শেখর রায় (৪৪) গত ২০ বছর ধরে জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির প্রাঙ্গণে ৩৫ শতাংশ জমিতে ঔষধি গাছের চাষ করছেন।

গ্রামের বাসিন্দারা বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া, অনিদ্রা, সর্দি, ফ্লু, জ্বর, দাঁত ব্যথা এবং খাবার হজমজনিত সমস্যাসহ বিভিন্ন ধরণের রোগের চিকিৎসার জন্য তার কাছে ভিড় করেন।

এখানে গ্রামবাসীরা শুধু বিনামূল্যে চিকিৎসা পাচ্ছেন তাই না, স্বাস্থ্য সেবা নিতে গ্রাম থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে থাকা নিকটতম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার ঝামেলা থেকেও রেহাই পাচ্ছেন।

গ্রামের বাসিন্দা নরেন্দ্রনাথ রায় (৪২) বলেন, “আমাদের আর ছোটখাটো অসুখের জন্য ওষুধ কিনতে হয় না। আমাদের শরীর বছরের পর বছর ধরে ভেষজ চিকিৎসায় অভ্যস্ত হয়ে গেছে।”

আদিতমারী উপজেলার বামনেরবাসা গ্রামের ৩৮ বছর বয়সী যামিনী কান্ত রায় জানিয়েছেন, তিনি বা তার পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে বহুবার এই ওষুধ নিতে এসেছেন।

তিনি বলেন, “এর কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। বয়স্ক ব্যক্তিরাও এই চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হচ্ছেন।”

অল্পবয়স থেকেই চন্দ্র শেখর রায় বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় পাতা, শিকড় বা নির্দিষ্ট গাছ এবং গাছের ছালের ব্যবহার শিখতে আগ্রহী ছিলেন। তিনি তার বাবা এবং দাদাকে দেখতেন সাধারণ মানুষদের সাহায্য করার জন্য ভেষজ ওষুধ বানাতে।

তিনি বলেন, “কীভাবে বিভিন্ন ঔষধি গাছ, ফুল এবং ফলের গাছ রোপণ এবং পরিচর্চা করতে হয় তা আমি আমার বাবার কাছে শিখেছি। আমার বাগানে এখন পর্যন্ত ৪২ প্রজাতির ভেষজ উদ্ভিদ এবং কমপক্ষে ১৫০ প্রজাতির ফুল ও ফল আছে।”

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তিন হাজার পরিবারের গ্রামটিতে তিনি ভেষজ ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করছেন।

শেখর ভেষজ চিকিৎসার ওপর বেশ কয়েকটি বই এবং গবেষণাপত্র পড়েছেন। তিনি এই সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় এবং পদ্ধতি সম্পর্কে সমসাময়িক জ্ঞান রাখেন সবসময়।

তিনি বলেন, “আমার খুবই ভালো লাগে যখন অসুস্থ গ্রামবাসীদের সেবা করতে পারি।”

তিনি তার ঔষধি বাগানের খরচ মেটাতে এর পাশেই একটি নার্সারি চালান।

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago