হেফাজতে মৃত্যুর দায় পুলিশ এড়াতে পারে না: ডিএমপি কমিশনার
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, পুলিশ হেফাজতে কোনো অভিযুক্ত আত্মহত্যা করলে, তার দায় পুলিশ এড়াতে পারে না।
তিনি বলেন, “হেফাজতে মৃত্যু নানা কারণে হতে পারে। নির্যাতনের অভিযোগ যেমন উঠে আসে, তেমনি অসুস্থতা জনিত কারণে মৃত্যুর উদাহরণও রয়েছে। হেফাজতে আত্মহত্যাজনিত মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে কখনও কখনও। পুলিশি হেফাজতে যে কারণেই মৃত্যু ঘটুক না কেনো, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা পুলিশ সদস্যদের কোনো গাফিলতি, বিচ্যুতি বা অপরাধ প্রমাণিত হলে, তার বা তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই উপযুক্ত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
গতকাল আবু বকর সিদ্দিক বাবু নামে একজনকে পুলিশ হেফাজতে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। তার কয়েক ঘণ্টা আগেই তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল পুলিশ এক নারীকে হয়রানির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তাকে গ্রেপ্তার করেছিলো।
প্রাথমিকভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ধারণা করছে যে, অভিযুক্ত আবু বকর আত্মহত্যা করেছেন। ঘটনাটি তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার।
তিনি আজ (২০ জানুয়ারি) ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন।
তদন্তে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
নিহতের স্ত্রী আলেয়া ফেরদৌসি মনে করছেন, বাবু থানায় ‘নির্যাতন ও হত্যা’র শিকার হয়ে মারা গেছেন। পুলিশ অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, বাবু গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী হোসেন খান গতকাল জানান, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএফডিসি) ফ্লোর ইনচার্জ বাবুর বিরুদ্ধে এক নারী মামলা করেছেন। ওই নারীকে বাবু বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন এবং তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়।
পুলিশ আরও জানায়, ওই নারীর সঙ্গে বাবুর কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা হয় বলে বাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন ওই নারী।
“শনিবার রাতে বাবুকে গ্রেপ্তার করার পরে আমরা তাকে হাজতে রেখেছিলাম। মধ্যরাতের দিকে দেখতে পাই তিনি জামা দিয়ে বাঁধা অবস্থায় লোহার বারের সঙ্গে ঝুলে আছেন। আমরা তাৎক্ষণিক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) নিয়ে যাই। ভোর চারটার দিকে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন,” বলেন আলী হোসেন।
Comments