যৌন হয়রানির অভিযোগে কলেজ শিক্ষক বহিষ্কার

শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি করার অভিযোগে কলেজ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়বাড়ী শহীদ আবুল কাশেম মহাবিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবিএম ফারুক সিদ্দিকীকে।
rape logo
প্রতীকী ছবি। স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি করার অভিযোগে কলেজ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়বাড়ী শহীদ আবুল কাশেম মহাবিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবিএম ফারুক সিদ্দিকীকে।

আগে তার দ্বারা সংঘটিত নয়টি অপরাধের বর্ণনা দিয়ে গত ১১ জানুয়ারি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। সাতদিনের মধ্যে লিখিতভাবে কোনো জবাব না দেওয়ায় গতকাল (২০ জানুয়ারি) তাকে কলেজ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

“অভিযুক্ত কলেজ শিক্ষক কারণ দর্শানো নোটিশের কোনো জবাব দেননি। উল্টো কর্তৃপক্ষকে শাসানোর মতো দম্ভ দেখিয়েছে। তাই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে সাময়িক বহিষ্কারাদেশ দিয়েছে,” জানিয়েছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্নিগ্ধা চক্রবর্তী।

“ফারুকের বিরুদ্ধে অর্ধশত শিক্ষার্থীর অভিযোগ রয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে,” উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, “অভিযুক্ত শিক্ষককে কারণ দর্শানো নোটিশ ও সাময়িক বহিষ্কারাদেশের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।”

বহিষ্কার হওয়া অভিযুক্ত কলেজ শিক্ষক এবিএম ফারুক সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে আনিত নয়টি গুরুতর অভিযোগগুলোর মধ্যে হলো, তিনি কলেজের শিক্ষার্থীদের উত্ত্যক্ত করে থাকেন। অনেক শিক্ষার্থীকে ফাঁদে ফেলে যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটিয়েছেন। কলেজের অন্যান্য শিক্ষকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ এবং তার স্ত্রীকে প্রকাশ্য মারধর করেছেন।

২০১০ সালে ফারুক কলেজের এক শিক্ষার্থীকে উঠিয়ে নিয়ে গোপনে আটকে রেখে তাকে যৌন হয়রানি করেছিলেন। সে ঘটনায় মামলা হলে তিনি ছয় মাস কারা ভোগ করেছিলেন।

স্নিগ্ধা চক্রবর্তী আরও জানিয়েছেন, অভিযুক্ত শিক্ষক আর্থিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় তিনি ‘ধরাকে সরা জ্ঞান’ করে থাকেন। তিনি শিক্ষার পরিবেশকে দূষিত করে তুলেছেন। তার ভয়ে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানকে এই কলেজে ভর্তি করান না। আবার অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের ভর্তি করার পর ফারুকের অশোভন আচরণে বাধ্য হয়ে অন্য কলেজে ভর্তি করান।

অভিযুক্ত কলেজ শিক্ষক ফারুকের স্ত্রী কাওছারা বেগম অভিযোগ করে বলেছেন, “স্বামীর অশোভন আচরণ অতিষ্ঠ করে তুলেছে। প্রতিবাদ করে কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। প্রতিবাদ করায় আমাকে প্রকাশ্যে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলো। আমি তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছি।”

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেছেন, অভিযুক্ত কলেজ শিক্ষক ফারুক শিক্ষকতার পাশাপাশি স্থানীয় বড়বাড়ী বাজারে প্রায় দুই কোটি টাকার সুদের ব্যবসা করে থাকেন। সুদের টাকায় তিনি সবকিছুকে নিজের আয়ত্তে রাখার অপচেষ্টাও করেন।

অভিযুক্ত কলেজ শিক্ষক এবিএম ফারুক সিদ্দিকীর সঙ্গে ফোনে কথা হলে তিনি জানিয়েছেন, “আমার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ নতুন নয়। আমি এর মোকাবেলা করবো।” এরপর তিনি ফোন কেটে দিয়ে ফোনটি বন্ধ রাখেন।

যেহেতু ফারুকের গুরুতর অপরাধের মাত্রা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে তাই তাকে কলেজ থেকে চাকুরিচ্যুত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে সুপারিশ করবেন বলেও জানিয়েছেন অধ্যক্ষ স্নিগ্ধা চক্রবর্তী।

Comments

The Daily Star  | English

Fashion brands face criticism for failure to protect labour rights in Bangladesh

Fashion brands, including H&M and Zara, are facing criticism over their lack of action to protect workers' basic rights in Bangladesh, according to Clean Clothes Campaign (CCC)..One year after a violent crackdown by state actors and employers against Bangladeshi garment workers protesting

Now