রোহিঙ্গা গণহত্যা: আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের রায় আজ

মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) গাম্বিয়ার করা মামলার রায় প্রদান করবে আজ (২৩ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সময় দুপুর তিনটায়।
rohingya influx
হত্যা-নির্যাতন থেকে বাঁচতে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে রোহিঙ্গারা। রয়টার্স ফাইল ছবি

মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) গাম্বিয়ার করা মামলার রায় প্রদান করবে আজ (২৩ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সময় দুপুর তিনটায়।

নেদারল্যান্ডসের হেগে ১৫ বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত আইসিজে এ রায় দিবে।

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা

গত বছরের নভেম্বরে আইসিজেতে মামলাটি দায়ের করেছিলো পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। গাম্বিয়া মুসলিম দেশগুলোর জোট অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশনের (ওআইসি) পক্ষে এই আইনি প্রক্রিয়ার উদ্যোগ নেয়। মামলায় সমর্থন দিতে ওআইসি তার ৫৭ সদস্য দেশকে উৎসাহিত করেছিলো।

আইসিজেতে শুনানি

গত বছরের ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর আইসিজেতে এই মামলার শুনানি হয়। এতে গাম্বিয়া ও মিয়ানমারের আইনজীবীরা অংশ নিয়েছিলেন।

শুনানি চলাকালে গাম্বিয়ার নেতৃত্ব ছিলেন দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল ও আইনমন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদু। মিয়ানমারের নেতৃত্বে ছিলেন দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি। নোবেল শান্তি পুরষ্কার পাওয়া সু চি রোহিঙ্গা সঙ্কটে তার ভূমিকা নিয়ে শুরু থেকেই সমালোচিত ছিলেন।

গাম্বিয়ার যুক্তি

আদালতে গাম্বিয়া যুক্তি দিয়েছিলো রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মিয়ানমার গণহত্যা চালিয়েছে। এই যুক্তির প্রমাণ হিসেবে তারা জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদনের তথ্য-প্রমাণ আদালতে সরবরাহ করেছিলো।

আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা গণহত্যা

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা অন্টারিও’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর হাতে ২৪ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। এই প্রতিবেদনটি তৈরি করতে তারা কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ, নরওয়ে এবং ফিলিপাইনের গবেষক ও সংস্থার সহযোগিতা নিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩৪ হাজারের বেশি মানুষকে আগুনে নিক্ষেপ এবং ১ লাখ ১৪ হাজারের বেশি মানুষকে পেটানো হয়।

আরও বলেছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং পুলিশ ১৭ হাজার ৭১৮ রোহিঙ্গা নারী ও শিশুকে ধর্ষণ করেছে।

জাতিসংঘ এটিকে জাতিগত নিধনের উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করেছে। এছাড়াও, জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন এই সহিংসতাটিকে গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করেছ। এর সঙ্গে জড়িত ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাদের তদন্ত ও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্টের পর থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বর্বরতার শিকার হয়ে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে সীমানা পেরিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এর আগে বিভিন্ন সময় নির্যাতনের শিকার আরও ৪ থেকে ৫ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলো।

১৯৭০ এর দশক থেকে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও চলাচলের স্বাধীনতার মতো মৌলিক অধিকার থেকেও তারা বঞ্চিত।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

9h ago