‘নামের’ কারণে ৭ দিন জেল খেটে মুক্তি পেলেন চা-বিক্রেতা রফিকুল
নামের সঙ্গে মিল থাকায় করাতকলের মালিকের পরিবর্তে গ্রেপ্তার হওয়া রফিকুল ইসলাম সাত দিন পর জেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
আজ (২৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাতটার দিকে তাকে গাজীপুর জেলা কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।
গাজীপুর আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মীর রকিবুল হক জানিয়েছেন, গাজীপুর জেলা বন আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ নাজমুন্নাহার আজ রফিকুল ইসলামকে মুক্তির আদেশ দেন। এর আগে গতকাল (২২ জানুয়ারি) ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়ে শ্রীপুর থানা পুলিশের কাছে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন চায় আদালত। মামলার সঙ্গে চা-বিক্রেতা রফিকুল ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই মর্মে পুলিশ প্রতিবেদন জমা দিলে আদালত মুক্তির আদেশ দেন।
গাজীপুর জেলা কারাগারের জেলার গোলাম মোস্তফা জানিয়েছেন, আদালতের আদেশ পাওয়ার পর সম্ভাব্য সব ধরনের যাচাই-বাছাই করে আজ সন্ধ্যা সাতটায় রফিকুল ইসলামকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। রফিকুলের স্বজনরা কারাগারের গেট থেকে তাকে গ্রহণ করেন।
রফিকুল ইসলামের বাবা নূর মোহাম্মদ বলেছেন, “আমি আল্লাহ ও আদালতের কাছে কৃতজ্ঞ। শুধু পুলিশ নয়, কারও ভুলের কারণে কোনো নিরপরাধ মানুষকে যেন দুর্ভোগের শিকার হতে না হয়।”
নামের সঙ্গে মিল থাকায় করাতকলের মালিকের পরিবর্তে চা-বিক্রেতা রফিকুল যে জেল খেটেছেন, এ নিয়ে প্রথম গত ২১ জানুয়ারি “চা বিক্রেতা রফিকুল জেল খাটছেন ‘নামের’ কারণে!”- শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে দ্য ডেইলি স্টার অনলাইন।
প্রসঙ্গত, মামলার পরোয়ানাভুক্ত এক আসামির নামের সঙ্গে মিল থাকায় গত ১৭ জানুয়ারি রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে শ্রীপুর থানা পুলিশ। তিনি গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড (দারগারচালা) এলাকার নূর মোহাম্মদের ছেলে।
ওইদিন বিকেলে রফিকুলকে তার চায়ের দোকান থেকে গ্রেপ্তার করেন শ্রীপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) কফিল উদ্দিন।
এসময় রফিকুলের স্বজন ও এলাকাবাসী তিনি প্রকৃত আসামি না বলে পুলিশকে জানায়। এর পরেও পুলিশ তাকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যায়। রফিকুলও সেসময় অনেকবার কাকুতি-মিনতি করে তার নামে কোনো মামলা না থাকার কথা বলেছিলেন। কিন্তু পুলিশ কর্মকর্তা কারো কথা আমলে না নিয়ে, এমনকি যাচাই না করে তাকে নিয়ে যান।
শ্রীপুর বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, লাইসেন্সবিহীন করাতকলে গজারি গাছ চেরাই করার অভিযোগে ২০১৫ সালের ৮ জুলাই শ্রীপুর সদর বন বিট অফিসার সহিদুর রহমান কেওয়া পশ্চিমখণ্ডের বেগুন বাড়ি এলাকার নূর মোহাম্মদের ছেলে রফিকুল ইসলামকে আসামি করে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (বন) আদালতে একটি মামলা করেন। মামলায় রফিকুলের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করে তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ পাঠানো হয় শ্রীপুর থানায়।
অপরদিকে, এ মামলার প্রকৃত আসামি নূর মোহাম্মদের ছেলে রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, তিনি করাতকলের ব্যবসা করেন। মামলাটি তার বিরুদ্ধেই করা হয়েছিল। তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন।
আরও পড়ুন:
Comments