১৫-২০ রান কম করার আক্ষেপেই পুড়ল বাংলাদেশ

উইকেট দেখে ফ্ল্যাট মনে হলেও লাহোরের বাইশ গজের আচরণ ছিল কিছুটা মন্থর। তাতে খাপ খাওয়াতে না পেরে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা থাকলেন কুঁকড়ে। আনা গেল না জুতসই পুঁজি। রান তাড়ায় তাই পাকিস্তানিদের ফেলা যায়নি বড় কোনো সমস্যায়। অভিজ্ঞ শোয়েব মালিকের ব্যাটে অনায়াসে কাজ সেরেছে স্বাগতিকরা।
shoaib malik
ছবি: এএফপি

উইকেট দেখে ফ্ল্যাট মনে হলেও লাহোরের বাইশ গজের আচরণ ছিল কিছুটা মন্থর। তাতে খাপ খাওয়াতে না পেরে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা থাকলেন কুঁকড়ে। আনা গেল না জুতসই পুঁজি। রান তাড়ায় তাই পাকিস্তানিদের ফেলা যায়নি বড় কোনো সমস্যায়। অভিজ্ঞ শোয়েব মালিকের ব্যাটে অনায়াসে কাজ সেরেছে স্বাগতিকরা।

নিরাপত্তা নিয়ে অনেক আলোচনা পেরিয়ে আলোচিত সিরিজে শুরুটা একদম মনমতো হয়নি বাংলাদেশের। শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে উত্তাপহীন ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছে  ৫ উইকেটে। আগে ব্যাট করে মাহমুদউল্লাহদের তোলা ১৪১ রান পাকিস্তান পেরিয়েছে ৩ বল হাতে রেখে। দলকে জিতিয়ে মালিক অপরাজিত থাকেন ৪৫ বলে ৫৮ রান করে। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজেও তাই তাদের দল এগিয়ে গেছে ১-০ ব্যবধানে।

বাংলাদেশ আরও ১৫-২০ রান বেশি করলে খেলার ফল ভিন্ন হতে পারত কি-না, ম্যাচ শেষে এই আক্ষেপের যথেষ্ট উপকরণ থাকছে। কারণ ম্যাচে রান তাড়ায় কখনই বেকায়দায় পড়তে হয়নি পাকিস্তানকে, সেরকম পরিস্থিতি এলে প্রেক্ষাপট বদল হতে পারত দ্রুতই। অন্তত উইকেট থেকে তেমন রসদই মিলছিল।

১৪২ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়ায় শফিউল ইসলাম দ্বিতীয় বলেই ফিরিয়ে দিয়েছিলেন বাবর আজমকে। তার ভেতরে ঢুকতে থাকা বলে ব্যাট ছুঁইয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাবর।  কিন্তু অভিষিক্ত আহসান আলি আর অভিজ্ঞ মোহাম্মদ হাফিজ মিলে সামাল দেন পরিস্থিতি। দলে ফেরা হাফিজ অবশ্য থিতু হয়েও কাবু হয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমানের স্লোয়ারে। বেশ কিছু আলগা বল দিয়ে মার খাওয়া মোস্তাফিজ হাফিজকে ফেরান গতির তারতম্যে।

এরপর মালিক এসে আহসানের সঙ্গে জুটি পোক্ত করেছেন একের পর এক সিঙ্গেলে। বাজে বল পেলে মেরেছেন বাউন্ডারি। লক্ষ্য ছিল একদম নাগালে, তাড়াহুড়ো করার কোনো দরকারও হয়নি তাদের। আহসান ৩২ বলে ৩৬ করে আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের বলে ক্যাচ উঠিয়ে ফিরলে ভাঙে তাদের ৪৬ রানের জুটি। পরে ইফতেখার আহমেদের সঙ্গে ৩৬ রানের আরেক জুটিতে দলকে জয়ের কাছে নিয়ে যান মালিক। দ্রুত খেলা শেষ করে দেওয়ার চিন্তায় শেষ দিকে আরও কিছু উইকেট পড়লেও ম্যাচ নিয়ে তৈরি হয়নি বড় কোনো দোলাচল।

ঐতিহাসিকভাবে লাহোরের রানবান্ধব উইকেটে টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে বড় রানই হয়তো প্রত্যাশা করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু উইকেটে মাঝে-মাঝেই বল মন্থর হয়ে গেল। তবু বুদ্ধি খাটিয়ে ব্যাট করলে চ্যালেঞ্জিং পুঁজিই আনা যেত। দুই ওপেনার তামিম ইকবাল আর নাঈম শেখ আউট হলেন না বটে, তবে আনতে পারলেন না ঝড়ো শুরু।

পাওয়ার প্লে কাজে লাগল না, প্রথম ১০ ওভারও গেল জড়সড়। দুই ওপেনারের একজন করলেন ৪১ বলে ৪৩, আরেকজন ৩৪ বলে ৩৯। টি-টোয়েন্টির সঙ্গে বেশ বেমানান তাদের স্ট্রাইক রেট। পাওয়ার প্লেতে আনতে পারলেন মাত্র ৩৫ রান। ১০ ওভারে বিনা উইকেটে এলো কেবল ৬২! ডট বলে চাপ বাড়িয়ে বড় রানের আশা ওখানেই অনেকটা শেষ।

৩৪ বলে ৩৯ রানের ইনিংসে তামিম ডট বল খেলেছেন ১৬টি, নাঈম শেখ তার ৪১ বলে ৪৩ রানের ইনিংসে রান আনতে পারেননি ১৮ বলে। দুজনে মিলেই খেলেছেন ৩৪টি ডট বল। এর মধ্যে পাওয়ার প্লেতেই তারা খেলেছেন ২২ ডট। বাকিরা কেউ নেমে ঝড় তুলে পুষিয়ে দিতে পারেননি। পুরো ইনিংসে ১২০ বলের মধ্যে বাংলাদেশ খেলল ৪৫টি ডট বল।

ওয়ান ডাউনে নেমে লিটন দাস থিতু হতে হতেই রান আউট। আফিফ হোসেনেরও অবস্থাও একই, থিতু হতে হতে রান বাড়ানোর তাড়নায় বোল্ড। নেমেই মারতে হবে পরিস্থিতিতে সৌম্য সরকারেরও ওই একই দশা। তার আগে নিজের মন্থর ইনিংস তামিম থামিয়েছেন রান আউটে। দ্রুত রান না আনতে পারার হতাশা ঝেড়ে বেরুতে গিয়ে নাঈম ফেরেন ক্যাচ দিয়ে।

১৪ বলে ১৯ রানে অপরাজিত থেকে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ কিছুটা ভদ্রস্থ করেছেন পরিস্থিতি। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে এর চেয়ে কম রান করেনি আর কোনো দল। ওই রান আটকাতে হলে বোলারদের হয়ে উঠতে হতো দুর্ধর্ষ। শফিউল ইসলাম, আল-আমিন হোসেনরা ভালো বল করলেও মোস্তাফিজ থাকলেন ভীষণ খরুচে। ফিল্ডাররাও সহায়তা করতে পারলেন না।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৪১/৫ (তামিম  ৩৯, নাঈম ৪৩, লিটন  ১২, মাহমুদউল্লাহ ১৯*, আফিফ ৯, সৌম্য ৭, মিঠুন  ৫*; ইমাদ ০/১৫, আফ্রিদি ১/২৩, হাসনাইন ০/৩৬, হারিস ১/৩২, শোয়েব ০/৬, শাদাব ১/২৬ )

পাকিস্তান: ১৯.৩ ওভারে ১৪২/৫ (বাবর ০, আহসান ৩৬, হাফিজ ১৭, মালিক ৫৮*, ইফতেখার ১৬ , ইমাদ ৬, রিজওয়ান ৫*; শফিউল ২/২৭, মোস্তাফিজ  ১/৪০, আল-আমিন ১/১৮, সৌম্য ০/২২, আমিনুল ১/২৮, আফিফ ০/৬)

ফল: পাকিস্তান ৫ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: শোয়েব মালিক।

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

4h ago