ব্যাটিংয়ে সেই একই হাল
তামিম ইকবাল একপ্রান্ত আগলে তুলে নিলেন হাফসেঞ্চুরি। এরপর ইঙ্গিত দিলেন হাত খোলার। কিন্তু তার লম্বা সময় ক্রিজে থাকার সমাপ্তি হলো রানআউটে। বাকি ব্যাটসম্যানদের কেউই নিতে পারলেন না দায়িত্ব। ব্যাটিংয়ে আরেকটি হতাশাজনক পারফরম্যান্স দেখিয়ে পাকিস্তানকে মামুলি লক্ষ্য ছুঁড়ে দিল বাংলাদেশ।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৩৬ রান তুলেছে বাংলাদেশ। ১৮তম ওভার পর্যন্ত টিকে থাকা তামিম ৫৩ বলে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৫ রান করেন। তার ইনিংসে ছিল ৭ চার ও ১ ছয়।
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের উইকেট এদিনও মন্থর আচরণ করেছে। পাকিস্তানের বোলারদের ছোট ছোট সুইং, বাউন্স বিপাকে ফেলেছে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। প্রচুর ডট খেলেন তারা। তাতে রানের চাকা সচল থাকেনি গোটা ইনিংসের কোনো অংশেই। প্রথম ১০ ওভারে ৩ উইকেটে ৫৭ রান তোলা বাংলাদেশ পরের ১০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে যোগ করে ৭৯ রান।
আগের দিন গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে প্রথম ব্যাট করে সবচেয়ে কম রান তোলার বিব্রতকর রেকর্ড গড়েছিল বাংলাদেশ। এদিন ১৪১ রানের সেই রেকর্ড ছাপিয়ে আরও কম রান করেছেন মাহমুদউল্লাহরা। সিরিজে টিকে থাকতে যেখানে জয়ের বিকল্প নেই, সেখানে এই পুঁজিতে বোলাররা কতটুকু লড়াই করতে পারেন, সেটাই এখন দেখার।
প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি টিকেছিল ১১ ওভার। স্কোরবোর্ডে উঠেছিল ৭১ রান। এদিন টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে উল্টো চিত্র। মোহাম্মদ নাঈম ফেরেন ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে। শাহিন শাহ আফ্রিদির অফ স্টাম্পের বাইরে একটু লাফিয়ে ওঠা বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে চেয়েছিলেন তিনি। ব্যাটে-বলে সংযোগ হয়নি। উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ান নেন সহজ ক্যাচ।
গোল্ডেন ডাকের স্বাদ নিয়ে নাঈম যখন ফেরেন, তখন বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ রান। মোহাম্মদ মিঠুনের পরিবর্তে একাদশে ঢোকা মেহেদী হাসান নেমেছিলেন তিনে। ২০১৮ সালের পর ফের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামা এই তরুণ ১ ছক্কা হাঁকিয়ে বিদায় নেন ১২ বলে ৯ রান করে। মোহাম্মদ হাসনাইনের বাউন্সার পুল করতে গিয়ে তিনি ক্যাচ দেন রিজওয়ানের হাতে।
নাঈম-মেহেদীর উইকেট হারিয়ে পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ তোলে ৩৩ রান। আবারও ব্যর্থ হন লিটন দাস। ডট বলে চাপ বাড়িয়ে শাদাব খানের বলে এলবিডাব্লিউ হয়ে যান তিনি। রিভিউ নিয়েও লাভ হয়নি। লিটনের ব্যাট থেকে আসে ১৪ বলে ৮ রান।
অষ্টম ওভারে ৪১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া বাংলাদেশের হয়ে প্রতিরোধ গড়েন তামিম ও আফিফ হোসেন। চতুর্থ উইকেটে ৪২ বলে তারা যোগ করেন ৪৫ রান। উড়িয়ে মারতে গিয়ে হাসনাইনের দ্বিতীয় শিকার হন আফিফ। ১ চার ও ১ ছক্কায় ২০ বলে ২১ রান করেন এই বাঁহাতি।
১৫তম ওভারের প্রথম বলে চার মেরে ক্যারিয়ারের সপ্তম টি-টোয়েন্টি ফিফটির দেখা পান তামিম। মুখোমুখি হওয়া ৪৪তম বলে। এরপর রান বাড়ানোর চেষ্টা চালান তিনি। কিন্তু এই বাঁহাতির দায়িত্বশীল ইনিংসের ইতি ঘটে ইমাদের দারুণ থ্রোতে। এরপর গতি তারকা হারিস রউফের বলে বোল্ড হন ১২ বলে ১২ রান করা অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।
সাতে নামা সৌম্য সরকার ৫ ও আমিনুল ইসলাম বিপ্লব অপরাজিত থাকেন ৮ রানে। পাকিস্তানের হয়ে ২০ রানে ২ উইকেট নেন হাসনাইন। ১ উইকেট করে পান রউফ, শাদাব ও শাহিন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৩৬/৬ (তামিম ৬৫, নাঈম ০, মেহেদী ৯, লিটন ৮, আফিফ ২১, মাহমুদউল্লাহ ১২, সৌম্য ৫*, আমিনুল ৮*; ইমাদ ০/১৬, শাহিন ১/২২, হাসনাইন ২/২০, রউফ ১/২৭, শাদাব ১/২৮, মালিক ০/৯, ইফতিখার ০/১২)।
Comments