বেইজিং থেকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে দূতাবাস

চীনের বেইজিংয়ে বাংলাদেশ দূতাবাস বলেছে, নতুন ধরনের করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে দূতাবাসের কর্মকর্তারা সেখানে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন।
ছবি: রয়টার্স

চীনের বেইজিংয়ে বাংলাদেশ দূতাবাস বলেছে, নতুন ধরনের করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে দূতাবাসের কর্মকর্তারা সেখানে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন।

চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাহবুব উজ জামান বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে জানান যে, দূতাবাস থেকে এরই মধ্যে হুবেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু শিক্ষার্থীর সঙ্গে তারা কথা বলেছেন। ২৪ ঘণ্টা এ ব্যাপারে সাহায্যের জন্য দূতাবাসে হটলাইন নম্বর (+৮৬১৭৮০১১১৬০০৫) চালু রাখার কথাও জানান তিনি।

শনিবার চীনা কর্তৃপক্ষ বলেছে, নতুন ধরনের ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। একদিন আগেও এই ভাইরাসে মৃত্যের সংখ্যা ছিল ২৬। আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১ হাজার ৩০০ জন।

উহানে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর শহরটির সঙ্গে বাইরের ও শহরের ভেতরের সব ধরনের যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছে চীন কর্তৃপক্ষ। সেখানে কয়েকশো বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আটকা পড়েছেন। দূতাবাস জানায়, এরকম ২৪৫ জন শিক্ষার্থীর একটি উইচ্যাট (চীনা সোশ্যাল মিডিয়া) গ্রুপে যুক্ত রয়েছেন বাংলাদেশ মিশনের উপ-প্রধান ও হেড অব চ্যান্সেরি।

চীনে এখন নতুন চন্দ্রবর্ষের ছুটি চলছে। বাংলাদেশি বেশিরভাগ শিক্ষার্থী এই ছুটিতে বাড়িতে গেছেন বলেও জানানো হয়েছে দূতাবাস থেকে।

তবে উহানে আটকে রয়েছেন এমন বেশ কিছু বাংলাদেশি শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে দেশে ফিরে আসার আকুতি জানিয়েছেন, দূতাবাসের সাহায্য চেয়েছেন।

Rakibil Turja-1.jpg
চীন থেকে দেশে ফেরার আকুতি জানিয়ে এক শিক্ষার্থীর ফেসবুক পোস্ট। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

এই শিক্ষার্থীরা জানান, উহানের অধিকাংশ দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এদিকে তাদের মজুতকৃত খাবারও ফুরিয়ে আসছে। ফলে খুব শিগগিরই তারা খাবারের সংকটে পড়বেন।

উহান শহরে প্রায় ১১ মিলিয়ন মানুষের বসবাস। বাসিন্দাদের শহর না ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ভাইরাসটি যাতে অন্য কোথাও ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সেজন্য উহান শহরের গণপরিবহন ব্যবস্থাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দরে সব যাত্রীবাহী ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। শহরের বাইরে যাওয়ার প্রধান সড়কগুলো চেকপয়েন্টের মাধ্যমে বন্ধ করে রাখা হয়েছে।

হুবেই ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির শিক্ষার্থী আসিফ আহমেদ সৌরভ জানান, ভাইরাসটি যাতে অন্য কোথাও ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সেজন্য উহানের আশেপাশের আরও ১০টি শহরেও একইভাবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।

প্রায় ৫০০ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এ শহরে আটকা পড়েছেন বলে জানান তিনি।

রাকিবিল তূর্য (২৩) নামে একজন শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাহায্য চেয়ে পোস্ট করলে দ্য ডেইলি স্টার তার সঙ্গে যোগাযোগ করে। তিনি জানান, দেড় বছর আগে তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য উহানে যান। বর্তমানে তিনি মেকানিক্যাল অ্যান্ড অটোমেশন ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে হুবেই ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে পড়াশোনা করছেন।

তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটি চললেও তাকে ২৩ জানুয়ারি থেকে হোস্টেলে বন্দিজীবন কাটাতে হচ্ছে। একই বিশ্ববিদ্যালয়ে তার মতো অন্তত আরও ১৪০ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আটকে পড়েছেন। কিন্তু, বাংলাদেশি দূতাবাস কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কেউই এখন পর্যন্ত তাদেরকে উদ্ধারের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

আরও পড়ুন:

চীনে আটকে পড়া ৫০০ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর দেশে ফেরার আকুতি

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago