ভোটার উপস্থিতি শেষ পর্যন্ত কমই থাকল
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। স্বল্প ভোটার উপস্থিতি, ইভিএম-এ আঙুলের ছাপ না মেলার বিড়ম্বনা, বেশি ভোটার দেখাতে কৃত্রিম লাইন, সংঘর্ষ ও সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীরা একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন।
সকাল আটটায় ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার পর বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে ভোটারদের কম উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিতি বাড়ার প্রত্যাশা থাকলেও তা ঘটেনি। অনেকটা অলস সময় কাটিয়েছেন ভোটকেন্দ্রের কর্মকর্তারা।
ইভিএমে আঙুলের ছাপ নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে খোদ প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাকে। ১১টার দিকে উত্তরার আইইএস স্কুল এ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোট দিতে যান তিনি। আঙুলের ছাপ না মেলায় জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর (এনআইডি) ব্যবহার করে তাকে ভোট দিতে হয়েছে। সাধারণ ভোটাররাও আঙুলের ছাপ না মেলার কারণে বিড়ম্বনায় পড়ার অভিযোগ তুলেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ল্যাবরেটরি স্কুল ও মিরপুরে একটি ভোটকেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগের সমর্থকদের কৃত্রিম লাইন তৈরি করতে দেখেছেন দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদকরা। ঘটনাস্থল থেকে তারা জানান, ভোটাররা ঢুকতে না পারলেও দীর্ঘ লাইন তৈরি করে রাখা হয়েছে, যাতে মনে হয় সেখানে ব্যাপক ভোটার উপস্থিতি রয়েছে।
ভোটগ্রহণকে কেন্দ্র করে অন্তত সাতটি ওয়ার্ডে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এতে ১২ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গতরাত থেকে এসব সহিংসতা শুরু হয়।
ইভিএমে ভোট গোপন থাকছে না বলে অভিযোগ করছেন অনেক ভোটার। তাদের অনেকের অভিযোগ, তারা যখন ভোট দিয়েছেন তখন কে, কোন মার্কায় দিচ্ছেন তা পোলিং অফিসাররা দেখেছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এজেন্টরাও দেখছেন কোন প্রতীকে ভোট দেওয়া হচ্ছে। এমনকি এজেন্টদের বুথের ভেতরে ঢুকে যাওয়ার ঘটনাও দেখা গেছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন দুপুরে টেলিফোনে দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনকে অভিযোগ করে বলেন, “গেন্ডারিয়ার কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখি আমার এজেন্টদের জোর করে বের করে দেওয়া হয়েছে।”
“আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমার এজেন্টকে তো বের করে দিয়েছেই, এখন তারা ভোটরদেরকেও ভোট দিতে দিচ্ছে না। আমি কয়েকটি কেন্দ্রে গিয়ে দেখি দীর্ঘ লাইন। ভোটাররা অভিযোগ করেছেন যে তাদেরকে ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।”
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ইভিএম মেশিন থাকলে কোনো দলেরই পোলিং এজেন্টের দরকার নেই।
সংবাদ সম্মেলনে নানক বলেছেন, “ইভিএম এমন একটি বিজ্ঞানসম্মত ভোট ব্যবস্থা যে ইভিএম মেশিন থাকলে সেখানে কোনো দলেরই কোনো পোলিং এজেন্টের দরকার নেই।”
Comments