নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করে ছাড়ল ভারত

দলের সেরা তারকা ও অধিনায়ক বিরাট কোহলি ছিলেন বিশ্রামে। তারপরও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় তুলে নিয়েছে ভারত। কিউইদের তারা হারিয়েছে ৭ রানের ব্যবধানে। ফলে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশ করে ছাড়ল টি-টোয়েন্টির প্রথম বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
ছবি: এএফপি

দলের সেরা তারকা ও অধিনায়ক বিরাট কোহলি ছিলেন বিশ্রামে। তারপরও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় তুলে নিয়েছে ভারত। কিউইদের তারা হারিয়েছে ৭ রানের ব্যবধানে। ফলে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশ করে ছাড়ল টি-টোয়েন্টির প্রথম বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

ঘরের মাঠে বরাবরই শক্ত প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। কিন্তু সে দলটি এবার ভারতের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশই হলো। দুটি ম্যাচে তারা আবার হেরেছে সুপার ওভারে গিয়ে। যদিও ম্যাচ দুটি ছিল তাদের হাতের মুঠোয়। কিন্তু সেট ব্যাটসম্যানরা শেষদিকে তালগোল পাকিয়ে ফেলায় নির্ধারিত ওভারে সামান্য কিছু রান তুলে নিতে পারেনি তারা।

মাউন্ট মঙ্গানুইতে রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) এক সময় ভালো অবস্থানে ছিল নিউজিল্যান্ড। ১৬৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ১২ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১১৩ রান তুলে ফেলেছিল দলটি। শেষ ৮ ওভারে জয়ের জন্য তাদের দরকার ছিল ৫১ রান। কিন্তু সেখান থেকেও পা হড়কে হার মানতে হয় দলটিকে।

ম্যাচের শেষ ওভারে বেশ রোমাঞ্চ উপহার দেন কিউই স্পিনার ইশ সোধি। জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২০ রান। ভারতীয় পেসার শারদুল ঠাকুরের করা তৃতীয় ও চতুর্থ বলে টানা ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন সোধি। তবে পরের দুই বলে নিতে পারেন মাত্র ১ রান।

লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি নিউজিল্যান্ডের। দলীয় ৭ রানে ওপেনিং জুটি ভাঙে। আর ১৭ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে ভীষণ চাপে পড়ে যায় দলটি। চতুর্থ উইকেটে টিম সেইফের্টের সঙ্গে ৯৯ রানের দারুণ এক জুটি গড়েন রস টেইলর। এ জুটিতেই জয়ের স্বপ্ন বোনে দলটি। কিন্তু সান্ত্বনার জয় পাওয়ার আশাও পূরণ হয়নি তাদের।

ইনিংসের দশম ওভারে শিভাম দুবের ওপর তাণ্ডব চালিয়ে ৩৪ রান তুলে নেয় নিউজিল্যান্ড। ৪ ছক্কা ও ২ চার আসে ওই ওভারে। একটি নো বলও করেন দুবে। বাকি বলে হয় সিঙ্গেল।

তবে সেইফের্টকে ফিরিয়ে জুটি ভেঙেই আবার ভারতকে কক্ষপথে আনেন নবদিপ সাইনি। এরপর উইকেট হারানোর মিছিলে যোগ দেয় নিউজিল্যান্ড। স্কোর বোর্ডে মাত্র ২৫ রান যোগ করতেই ৬ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় দলটি।

এক প্রান্তে টিকে ছিলেন অভিজ্ঞ টেইলর। কিন্তু ১৮তম ওভারে সাইনির অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে রাখা একটি বল খেলতে গিয়ে উইকেটরক্ষক লোকেশ রাহুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন তিনি। কার্যত তখনই শেষ হয়ে যায় কিউইদের হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লড়াই।

কিউইদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৩ রানের ইনিংস খেলেন টেইলর। ৪৭ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় এই রান করেন তিনি। সেইফের্টের ব্যাট থেকে আসে ৫০ রান। ৩০ বলে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান তিনি। এছাড়া দুই অঙ্কের কোটায় পৌঁছাতে পারেন কেবল আর দুজন ব্যাটসম্যান। ১৫ রান করেন কলিন মুনরো। শেষ দিকে সোধির ব্যাট থেকে আসে ১৬ রান।

ভারতের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেন জাসপ্রিত বুমরাহ। ৪ ওভারে মাত্র ১২ রানে পান ৩টি উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন সাইনি ও শারদুল।

এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে ভারত। শুরুটা ভালো ছিল না তাদেরও। দলীয় ৮ রানেই সাজঘরে ফেরেন সাঞ্জু স্যামসন। এরপর রোহিত শর্মার সঙ্গে আরেক ওপেনার রাহুলের ৮৮ রানের দারুণ এক জুটিতে বড় সংগ্রহের ভিত পায় দলটি। এ জুটি ভাঙেন হামিশ বেনেট।

এরপর শ্রেয়াস আইয়ারের সঙ্গে ৪২ রানের আরও একটি জুটি গড়েন রোহিত। এরপর ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। তবে ততক্ষণে বড় পুঁজির কক্ষপথে চলে যায় দলটি। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৬৩ রান সংগ্রহ করে ভারত।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬০ রানের ইনিংস খেলে আহত অবসর নেন রোহিত। ৪১ বলের ইনিংসে চার ও ছক্কা মারেন সমান ৩টি করে। ৪৫ রান করেন রাহুল। ৩৩ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ৩১ বলে ৩৩ রান করেন আইয়ার। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে ২৫ রানের খরচায় ২টি উইকেট নেন স্কট কাগেলেইন। ১টি উইকেট নেন বেনেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত: ২০ ওভারে ১৬৩/৩ (রাহুল ৪৫, স্যামসন ২, রোহিত ৬০ আহত অবসর, আইয়ার ৩৩*, দুবে ৫, মানিশ ১১*; সাউদি ০/৫২, কাগেলেইন ২/২৫, বেনেট ১/২১, সোধি ০/২৮, স্যান্টনার ০/৩৬)।

নিউজিল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৫৬/৯ (গাপটিল ২, মুনরো ১৫, সেইফের্ট ৫০, ব্রুস ০, টেইলর ৫৩, মিচেল ২, স্যান্টনার ৬, কাগেলেইন ০, সাউদি ৬, সোধি ১৬*, বেনেট ১*; সুন্দর ১/২০, বুমরাহ ৩/১২, সাইনি ২/২৩, শারদুল ২/৩৮, চাহাল ০/২৮, দুবে ০/৩৪)।

ফল: ভারত ৭ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: জাসপ্রিত বুমরাহ (ভারত)

ম্যান অব দ্য সিরিজ: লোকেশ রাহুল (ভারত)

সিরিজ: পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ভারত ৫-০ ব্যবধানে জয়ী।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago