ধর্ষণের মামলা না নেওয়ায় ওসি প্রত্যাহার

rape
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

ধর্ষণ মামলা না নেওয়া এবং অভিযুক্তকে আটক করার পর ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে রংপুরের হারাগাছ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল কাদেরকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (ডিবি অ্যান্ড মিডিয়া) আলতাফ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পরবর্তীতে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত রংপুরের কাউনিয়ার উপজেলার হারাগাছের স্কুল শিক্ষক সোহেল রানাকে (২৭) পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (মাহিগঞ্জ জোন) ফারুক আহমেদ।

তিনি জানিয়েছেন, এ ঘটনায় গত রাতে মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে হারাগাছ থানায় অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার প্রেক্ষিতে গত রাত ৯টার দিকে হারাগাছ পৌরসভার ঠাকুরদাস এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সোহেল রানা হারাগাছ পৌর এলাকার ঠাকুরদাস গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে ও পল্লীমারী উচ্চ বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র থেকে জানা যায়, গত ১ ফেব্রুয়ারি দুপুরে প্রাইভেট পড়ানোর কথা বলে কৌশলে ওই ছাত্রীকে কাউনিয়া উপজেলার সারাই ইউনিয়নের মাছহাড়ী চোরমারা বটেরতল নামক স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায় সোহেল রানা। পরে ওই ছাত্রী বাড়িতে গেলে বিষয়টি জানতে পেরে অভিভাবকরা হারাগাছ থানায় খবর দেন।

খবর পেয়ে পুলিশ অভিযুক্ত সোহেল রানাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। ধর্ষণের শিকার কলেজছাত্রীকেও হারাগাছ থানায় নেওয়া হয়।

রাত তিনটার দিকে পুলিশকে ভুল তথ্য দিয়ে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে সমাধান করার কথা বলে অভিযুক্ত শিক্ষক ও ওই কলেজছাত্রীকে থানা থেকে নিয়ে যান হারাগাছ পৌরসভার কাউন্সিলর মাহবুবুর রহমানসহ স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী।

গত ২ ফেব্রুয়ারি রাতে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে হারাগাছ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ইউপি চেয়ারম্যান রাকিবুল হাসান পলাশের সভাপতিত্বে প্রকাশ্যে বিচার বসানো হয় বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ও তার পরিবারের সদস্যরা। এ সময় ধর্ষণের শিকার কলেজছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ পেয়ে সাংবাদিকরা সেখানে যান।

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের ওপর চড়াও হন হারাগাছ ইউপি চেয়ারম্যান। পরবর্তীতে এ ধরনের বিচার করা তার এখতিয়ারে নেই বলে স্বীকার করেন ইউপি চেয়ারম্যান রাকিবুল হাসান পলাশ। কিন্তু থানা থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক ও বিচারপ্রার্থী ছাত্রীকে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যান পৌরসভা কাউন্সিলর মাহাবুবর।

এ বিষয়ে হারাগাছ থানার ওসি নাজমুল কাদের বলেছিলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে অভিভাবকের জিম্মায় দেওয়া হয়। ঘটনাস্থল কাউনিয়া থানা এলাকায় হওয়ায় ওই ছাত্রীর অভিভাবককে কাউনিয়া থানায় গিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।

পরবর্তীতে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা হস্তক্ষেপ করলে জানা যায় ঘটনাটি হারাগাছ থানা এলাকায় ঘটেছে। নিজ থানা এলাকার ঘটনায় মামলা না নেওয়া এবং অভিযুক্তকে আটক করেও ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English
election before ramadan 2026 in Bangladesh

Election possible a week before Ramadan next year: Yunus tells Tarique

He said it will be possible if preparations completed, sufficient progress made in reforms and judicial matters

4h ago