পোস্টার ‘আবর্জনা’ যখন স্কুলের খাতা ও প্যাকেট

পলিথিনে মোড়ানো বিপুল পরিমাণ নির্বাচনী পোস্টারে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কার মধ্যেই সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সহায়তার জন্য সেগুলো পুনর্ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

পলিথিনে মোড়ানো বিপুল পরিমাণ নির্বাচনী পোস্টারে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কার মধ্যেই সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সহায়তার জন্য সেগুলো পুনর্ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

নির্বাচনী পোস্টারের পেছনের অংশ সাদা। এই অংশ ব্যবহার করেই লেখার খাতা তৈরি করা হবে। পোস্টার মোড়ানোর প্লাস্টিকের ব্যাগটি ব্যবহার করা হবে কাপড় প্যাকেট করতে আর পোস্টার ঝোলানো দড়িগুলো দিয়ে খাবারের প্যাকেট বাঁধা হবে।

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন পথশিশুদের জন্য কাজ করে। গতকাল পর্যন্ত তারা প্রায় এক লাখ পোস্টার সংগ্রহ করেছে নগরীর বালুরঘাট, পল্লবী, আদাবর, বনানী এবং খিলগাঁও থেকে।

ফাউন্ডেশনটির ঢাকা শাখার প্রধান সালমান খান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “আমাদের ছয়টি এতিমখানা থেকে ৩৫০ জন সুবিধাবঞ্চিত শিশুকে সহযোগিতা করা হয়। তাদের লেখার জন্য খাতার প্রয়োজন পড়ে। বিভিন্ন অর্থসাহায্যের মাধ্যমে তাদের খাবারের ব্যবস্থা করতে পারলেও পর্যাপ্ত পরিমাণে খাতার ব্যবস্থা করতে পারি না।”

একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সালমান আরও বলেন, “আমরা একা এই শহর পরিষ্কার করতে পারব না, তবে পোস্টারগুলোর পুনর্ব্যবহারের মাধ্যমে এ বিষয়ে কিছুটা সহযোগিতা করতে পারি।”

স্বেচ্ছাসেবক ফারুক আহমেদ জানান, প্রথমে এই উদ্যোগ নিয়ে তারা অনিশ্চিত ছিলেন। ধারণা ছিল স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা এতে ক্ষুব্ধ হতে পারেন। তবে কাজটি সহজ ভাবেই হয়েছে।

তিনি বলেন, “কাউন্সিলর প্রার্থীদের কাছ থেকেও আমরাও সাড়া পাচ্ছি। তাদের প্রতিনিধিরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন পোস্টার সংগ্রহের জন্য।”

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নবনির্বাচিত মেয়র আতিকুল ইসলাম তার নির্বাচনী পোস্টার ফাউন্ডেশনের কাছে হস্তান্তর করেছেন।

উদ্যোগটিকে স্বাগত জানিয়ে ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এসএম শফিকুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “এখন পর্যন্ত আমরা দুটি সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছি পোস্টার সংগ্রহের জন্য। আশা করছি খুব শিগগিরই আমাদের উদ্যোগ এবং তাদের সহযোগিতায় পোস্টার অপসারণ করা সম্ভব হবে।”

২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যানন্দের এখন ২০টি প্রকল্প চলছে। প্রায় ৩০০ স্বেচ্ছাসেবী এই প্রকল্পগুলো পরিচালনা করছে। ‘এক টাকায় আহার’ এর মতো তাদের কিছু প্রকল্প সব মহলেই প্রশংসিত। এক টাকায় আহার প্রকল্পে যেকোনো পথশিশু এক টাকার বিনিময়ে প্রতিদিন দুপুরের খাবার খেতে পারে।

একই রকম ভাবে সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য এক টাকায় স্বাস্থ্য সেবা প্রকল্পও রয়েছে তাদের।

Comments