করোনাভাইরাস: মার্কিন বিশেষজ্ঞদের প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে চীন
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতার অংশ হিসেবে মার্কিন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের দেশে প্রবেশের অনুমতি দিতে রাজি হয়েছে চীন। নতুন করোনাভাইরাস মোকাবিলায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানায় বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
হোয়াইট হাউজ জানায়, উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস নিয়ে গবেষণা ও সংক্রমণ মোকাবিলায় সহযোগিতার অংশ হিসেবে ডব্লিউএইচও’র মিশনের আওতায় মার্কিন গবেষকদের সেখানে যাওয়ার প্রস্তাবে সায় দিয়েছে চীন।
গতকাল সোমবারও সংক্রমণের কেন্দ্রস্থল হুবেই প্রদেশে অন্তত দুই হাজার ৩৪৫ জন নতুনভাবে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়, মারা যায় আরো ৬৪ জন। সোমবার পর্যন্ত চীনা শেয়ার বাজার প্রায় ৮ শতাংশ নিচে নেমে গেছে। এতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩৯৩ বিলিয়ন ডলার।
চীনের সংবাদমাধ্যম জানায়, আক্রান্তদের চিকিৎসায় উহানে আটদিনে বানানো এক হাজার শয্যার হাসপাতালটি সোমবার চালু করা হয়েছে। এক হাজার ৬০০ শয্যার অন্য একটি হাসপাতাল বুধবার চালু হওয়ার কথা রয়েছে।
যাতায়াতে বিধি-নিষেধ আরোপ করায় বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে চীন। ফলে, ব্যাপক অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা বাড়ছে। আন্তর্জাতিক বিমানসংস্থাগুলো চীনের বেশ কিছু অংশে চলাচল বন্ধ রেখেছে।
গত সপ্তাহে ডব্লিউএইচও নিউমোনিয়া সদৃশ প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের কারণে বৈশ্বিক সর্তকতা জারি করে। চীন ছাড়াও প্রায় ২৩টি দেশে ভাইরাসটি ছড়িয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত চীনের বাইরে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ফিলিপাইনের একজন।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আতঙ্ক ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছে চীন। মার্কিন নাগরিকদের চীন থেকে সরিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি চীন ভ্রমণ করা বিদেশি নাগরিকদের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনইং। তিনি মনে করিয়ে দেন, করোনাভাইরাস নিয়ে বৈশ্বিক সতর্কতা জারি করলেও ডব্লিউএইচও বাণিজ্য ও ভ্রমণে বিধিনিষেধ আরোপের বিরুদ্ধে মত দিয়েছে।
চীনের অভিযোগ খণ্ডন করে যুক্তরাষ্ট্র সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) বলেছে, আত্মরক্ষার তাগিদে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সিডিসির ন্যাশনাল সেন্টার ফর ইমিউনিজেশন এন্ড রেসপিরেটরি ডিজিজের পরিচালক ন্যান্সি মেসিওনিয়ার জানান, আমরা এরকম পরিস্থিতিতে আগ্রাসী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।
ডব্লিউএইচও’র মহাপরিচালক ড. টেড্রোস আডহানম জেব্রেইয়েসাস বলেছেন, ২০০২ সালে ছড়ানো সার্স ভাইরাসে প্রায় আট হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়, মারা যায় অন্তত ৮০০। নতুন করোনাভাইরাস সার্সের তুলনায় অনেক বেশি সংক্রামক হলেও তুলনামূলকভাবে কম মারাত্মক। এখন পর্যন্ত চীনের হুবেই প্রদেশে ১৭ হাজার ২০৫ জন আক্রান্ত হয়েছে বলে জানায় ডাব্লিউএইচও। এছাড়াও জাপান, থাইল্যান্ড, জার্মানি, ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ ২৩টি দেশে ১৫১ জন আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে বলে সংস্থাটি জানায়।
প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণ করাই এখন চীনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
Comments