বিপর্যস্ত সকাল পেরিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রয়াস

টেস্টের সকালে যেকোনো উইকেটই থাকে পেস সহায়ক। রাওয়ালপিন্ডির উইকেট ঐতিহ্যগতভাবেই পেসারদের হয়ে কথা বলে। টস জিতে তাই পাকিস্তান অধিনায়ক আজহার আলি ফিল্ডিং নিতে কোন দ্বিধা করলেন না। তার সিদ্ধান্ত যৌক্তিক হতে লাগল কেবল ১০ বল। ওতেই যে নেই দুই ওপেনার। কিন্তু এরপর প্রতিরোধ গড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত আর মুমিনুল হক। থিতু হয়েও মুমিনুল ফেরার পর ভরসা যোগাচ্ছেন শান্ত, তার ব্যাটে মিলছে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রয়াস।
Najmul Hossain Shanto
ফাইল ছবি: AFP

টেস্টের সকালে যেকোনো উইকেটই থাকে পেস সহায়ক। রাওয়ালপিন্ডির উইকেট ঐতিহ্যগতভাবেই পেসারদের হয়ে কথা বলে। টস জিতে তাই পাকিস্তান অধিনায়ক আজহার আলি ফিল্ডিং নিতে কোন দ্বিধা করলেন না। তার সিদ্ধান্ত যৌক্তিক হতে লাগল কেবল ১০ বল। ওতেই যে নেই দুই ওপেনার। কিন্তু এরপর প্রতিরোধ গড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত আর মুমিনুল হক। থিতু হয়েও মুমিনুল ফেরার পর ভরসা যোগাচ্ছেন শান্ত, তার ব্যাটে মিলছে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রয়াস।

রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে আগে ব্যাট করে আড়াইঘন্টার লম্বা প্রথম সেশনে  ৩৩ ওভারে ৩ উইকেটে ৯৫ রান তুলেছে বাংলাদেশ। ১০৪ বলে ৪৪ রান করে অপরাজিত আছেন শান্ত, মাহমুদউল্লাহ খেলছেন ২৯ বলে ১৭ রান করে।

দুই সিরিজ পর ফেরা তামিম ইকবালের সঙ্গে প্রথমবার দেশের হয়ে ইনিংস ওপেন করতে নেমেছিলেন সাইফ হাসান। টেস্ট অভিষেকের মিষ্টি সকালটা তিক্ত হয়ে যায় সাইফের। শাহিন শাহ আফ্রিদির প্রথম বলে তিন রান নিয়ে সাইফকে স্ট্রাইক দিয়েছিলেন তামিম। এক বল খেলে দ্বিতীয় বলেই এই ডানহাতির ইতি। শাহিনের ইয়র্কর লেন্থের বলে ব্যাট পেতে দিয়েছিয়েলন। বাইরের কানায় লেগে তা ছুটে যায় স্লিপে।

অভিষেকে আউট হন ২ বলে ০ রানে! পাকিস্তানে আসার ঠিক আগে বিসিএলের ম্যাচে ট্রিপল সেঞ্চুরি করেছিলেন তামিম, গড়েছিলেন প্রথম শ্রেণীতে দেশিদের মধ্যে সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড। ৩৩৪ রানের পরের ইনিংস তামিম থামলেন মাত্র ৩ রানে। দ্বিতীয় ওভারেই। ডানহাতি স্যুয়িং বোলার মোহাম্মদ আব্বাসের ভেতরে ঢোকা বলে পা পেতে কাবু। মাঠের আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউতে কাটা পড়েন দেশসেরা ওপেনার।

এরপর তিনে নামা শান্তর সঙ্গে চারে নামা অধিনায়ক মুমিনুলের দৃঢ়তা। শাহিন, আব্বাসের বৈচিত্র্য সামলানোর পর নাসিম শাহর গতিও সামলান তারা। বারবার টুকে দেওয়া বাউন্সারে শরীর বাঁচিয়ে টিকে থেকেছেন দুজন। তবে নাসিম প্রায়ই দিচ্ছিলেন আলগা বল। তাতে ফায়দা তুলে বাউন্ডারি বের করেন শান্ত, মুমিনুল। বিশেষ করে শান্তর ব্যাটে দেখা গেছে আত্মবিশ্বাসের ছোঁয়া। কাভার ড্রাইভ করেছেন চোখ ধাঁধানো, অথরিটি নিয়ে বল ঠেকিয়ে জানান দিয়েছেন দৃঢ়তা।

টেস্টে দেশের বাইরে চরম বাজে পরিসংখ্যান নিয়ে পাকিস্তানে খেলতে যাওয়া অধিনায়ক মুমিনুলের ব্যাটেও মিলেছে বিশ্বাসের বিচ্ছুরণ। মাঝে ব্যাটে বল লাগিয়ে বের করছেন রান, অস্থিরতা ছেঁটে থিতু হয়েছেন নির্ভার ভঙিমায়। ইনিংস টেনে নিতে পারতেন অনেক দূর। কিন্তু উইকেট বিলিয়েছেন দৃষ্টিকটুভাবে।

শাহিনের অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল অযথা ড্রাইভ করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে। লাঞ্চের তখন মিনিট ৪৮ বাকি। মুমিনুল ফিরে ৫ চারে ৫৯ বলে ফিরে যান ৩০ করে।  তার বিদায়ে তৃতীয় উইকেটে ভাঙে ৫৯ রানের জুটি।

এরপর ক্রিজে এসে মাহমুদউল্লাহও যোগান ভরসা। লাঞ্চের আগে আর বিপর্যয় বাড়তে দেননি। শান্তর সঙ্গে ৩৩ রানের জুটি গড়ে ভালো কিছুর আভাস দিচ্ছেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান

সংক্ষিপ্ত স্কোর: 

(প্রথম দিনের প্রথম সেশন পর্যন্ত)

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৩৩ ওভারে ৯৫/৩  (তামিম ৩, সাইফ ০, শান্ত ব্যাটিং ৪৪* , মুমিনুল ৩০, মাহমুদউল্লাহ ব্যাটিং ১৭*  ; শাহিন ২/৩০ , আব্বাস ১/৭ , নাসিম ০/৩৭ , ইয়াসির ০/২১ )

Comments