বঙ্গোপসাগরে ট্রলার ডুবে ১৫ রোহিঙ্গা নারী ও শিশু নিহত

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সেন্টমার্টিন দ্বীপের পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরে মালয়েশিয়াগামী একটি ট্রলার ডুবে চার শিশু ও ১১ নারী নিহত হয়েছেন। তারা কক্সবাজারের বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিবিরের বাসিন্দা।
সাগর থেকে উদ্ধার করে ছোট ছোট নৌকায় করে উদ্ধারকৃতদের তীরে নিয়ে আসা হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সেন্টমার্টিন দ্বীপের পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরে মালয়েশিয়াগামী একটি ট্রলার ডুবে চার শিশু ও ১১ নারী নিহত হয়েছেন। তারা কক্সবাজারের বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিবিরের বাসিন্দা।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৭২ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে এখনও ৫০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে এ ঘটনা ঘটে।

কোস্টগার্ড সূত্রে জানা গেছে, উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ৪৬ জন নারী, ২৪ জন পুরুষ ও ৩টি শিশু রয়েছে। 

নৌবাহিনীর সেন্টমার্টিনের স্টেশন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এস এম জাহিদুল ইসলাম বলেন, উদ্ধার হওয়া লোকজনের সাথে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে ডুবে যাওয়া ট্রলারটিতে ১৩৮ আরোহী ছিলেন।

সেন্টমার্টিন দ্বীপের কোস্টগার্ডের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট নাইম উল হক আজ মঙ্গলবার  সাংবাদিকদের বলেন, “গতকাল রাতেই টেকনাফ উপকূল দিয়ে দুটি ট্রলার মালয়েশিয়ার উদ্দেশে রওনা হয়। সকালে সাগরের পাথরের সঙ্গে ধাক্কা লেগে একটি ট্রলার ডুবে যায়।”

উদ্ধার হওয়া কয়েকজনের বরাত দিয়ে তিনি বলেছেন, “দালালদের মাধ্যমে তারা উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির থেকে বের হয়ে মালয়েশিয়া যাচ্ছিলেন।”

জীবিত উদ্ধার হওয়াদের একজন খালেদা বেগম (৩৫) জানিয়েছেন, তার স্বামী বর্তমানে মালয়েশিয়া আছেন। মালয়েশিয়া যেতে তিনি তার ছেলে-মেয়েকে নিয়ে সোমবার রাতে সাগর পথে রয়ানা দেন। ভোররাতে তাদের ট্রলারটি সাগরে ডুবে গেলে ডুবন্ত ট্রলারের কাঠ ধরে তিনি বেঁচে গেলেও  তার সঙ্গে থাকা দুই সন্তানই মারা গেছে।

কোস্টগার্ডের তিনটি দল, সেন্টমার্টিন বোট মালিক সমিতি, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশসহ (বিজিবি) বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা রোহিঙ্গাদের উদ্ধার করে। টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বলেছেন, “মরদেহগুলো সকাল সাড়ে ১০টায় টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ জেটিতে নিয়ে আসা হয়েছে ট্রলারে করে।”

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার দাশ জানান,  সন্ধ্যা ৬টায় কোস্টগার্ড সাগর থেকে উদ্ধার করা ১৫ জনের মরদেহ ও জীবিত ৭২ জনকে টেকনাফ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। মরদেহগুলো ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় মানবপাচার আইনে টেকনাফ থানায় একটি মামলা করা হবে।

উদ্ধার কাজে অংশ নেয়া কোস্টগার্ডের কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার বলেন,  উদ্ধার হওয়া ৭২ জনের মধ্যে মানবপাচারে জড়িত সন্দেহে ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃত দালালরা জানিয়েছেন, প্রতিজন মালয়েশিয়াগামী থেকে ৩০ হাজার টাকা করে নেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন:

বঙ্গোপসাগরে মালয়শিয়াগামী ট্রলারডুবিতে নিহত ১৫

Comments