‘নদী দখলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিন’

অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে নদীগুলোকে বাঁচাতে এবং তাদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে বলেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে দেওয়া চিঠিতে দুদক সচিব মো. দিলওয়ার বখতকে ডিসিদের কার্যক্রম নিয়মিত পর্যবেক্ষণের পরামর্শও দিয়েছেন।
দ্য ডেইলি স্টার চিঠিটির একটি অনুলিপি পেয়েছে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি ‘সেভ রিভারস, সেভ সোনার বাংলা’ শিরোনামে দ্য ডেইলি স্টারে চার পৃষ্ঠার বিশেষ সংখ্যা প্রকাশের পর এই সুপারিশটি দেওয়া হলো। বিশেষ সংখ্যার প্রতিবেদনগুলোতে দেশের নদীগুলির ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরা হয়েছিল।
দেশের নদ-নদী বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপের আবেদন করা হয়েছিল পত্রিকাটিতে।
দ্য ডেইলি স্টারের বিশেষ সংখ্যাটিতে জাতীয় নদী সংরক্ষণ কমিশনের (এনআরসিসি) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলা হয়েছিলো, স্বাধীনতার আগে এদেশে ৭০০টিরও বেশি নদ-নদী ছিলো। কিন্তু, বর্তমানে নদী রয়েছে মাত্র ৪০৫টি।
৬৪ জেলার ১৩৯টি নদীর বিশাল অংশ দখল হয়ে আছে এবং সারাদেশে মোট দখলদার রয়েছেন ৪৯,১৬২ জন।
পানির গুণগতমানের হিসাবে, ২৯টি নদী মারাত্মকভাবে দূষিত হয়ে আছে। ঢাকার চারদিকের চারটি নদীও ‘বায়োলজিক্যালি’ মৃত হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নদী সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেজন্য কয়েকশ কোটি টাকার প্রকল্পও নেওয়া হয়েছিলো।
বুড়িগঙ্গাকে বাঁচাতে ২০১৪ সালের মে মাসে প্রধানমন্ত্রী যৌথ উদ্যোগের কথা বলেছিলেন। ২০১৪ সালের ১০ জুলাই তিনি অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন।
দুদক মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে দেওয়া চিঠির সঙ্গে ওই প্রতিবেদনের অনুলিপিও দিয়েছে বলে দুদকের এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেছেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে সম্প্রতি ফোনালাপকালে দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ খাস জমি রক্ষার বিষয়টি আবারো মনে করিয়ে দিয়েছেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, “সরকারি জমির অপব্যবহার বা এর পৃষ্ঠপোষকতা উভয়ই দণ্ডনীয় অপরাধ। কমিশন ইতোমধ্যে বিভিন্ন জেলায় সরকারি জমি দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।”
এতে বলা হয়েছে যে বিশেষ অভিযান চালিয়ে সরকারি জমি দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন এতে সহযোগিতা করছে।
“এই প্রেক্ষিতে কমিশন আশা করে যে মন্ত্রিসভা থেকে প্রতিটি জেলা প্রশাসককে নদীগুলো উদ্ধার করার নির্দেশ দিবে এবং দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে,” উল্লেখ করে চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, “মন্ত্রিসভা প্রয়োজনে দুদকের কাছেও এর মাসিক প্রতিবেদনের অনুলিপি পাঠাতে পারে।”
দুদক বলেছে, “কমিশন দৃঢ়ভাবে প্রত্যাশা করে যে সরকারি সম্পদ রক্ষা করার মাধ্যমে জেলা প্রশাসকরা দুর্নীতি রোধে কার্যকর ভূমিকা নিবেন।”
Comments