সংবাদমাধ্যমের প্রতি বাংলাদেশের কোচের আকুতি
সংবাদ সম্মেলন তখন প্রায় শেষ। কিন্তু বাংলাদেশের কোচ রাসেল ডমিঙ্গো চেয়ে নিলেন আরও কিছু সময়। সাম্প্রতিক সময়ে টানা ছয়টি টেস্ট বাজেভাবে হেরেছে বাংলাদেশ, খেলোয়াড়-ম্যানেজমেন্টকে পড়তে হচ্ছে বিস্তর সমালোচনায়। সেসব এড়ায়নি কোচেরও নজর। দলের হয়ে তাই আত্মপক্ষ সমর্থন করে আরেকটু ধৈর্য ধরার আকুতি জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার থেকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঘরের মাঠে আরেকটি টেস্ট খেলতে নামছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের কাছে ইনিংস হার, তার আগে ভারত সফরে গিয়েও দুই টেস্টেই ইনিংস হার। তারও আগে ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের কাছেও বিব্রতকর হার।
বাংলাদেশ দলকে যেন তাড়া করছে সাদা পোশাকে একের পর এক নাস্তানাবুদ হওয়ার স্মৃতি। এবার সামনে তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষ। শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সেরে নিয়েছে বাংলাদেশ দল। পরে সংবাদ সম্মেলনে কোচ-অধিনায়ক এসে জানিয়েছেন দলের ভাবনা।
সব কিছু জানানোর পরও কোচের কাছে থেকে যায় কিছু কথা। তাতে ক্রিকেট জাতি হিসেবে বাংলাদেশের তীব্র আবেগ আর অস্থিরতার দিকেই ইঙ্গিত তার।
বিশ্বের অন্যান্য টেস্ট ক্রিকেটারদের উদাহরণ টেনে নিজ দলের অনভিজ্ঞতার প্রসঙ্গ তাই সামনে আনলেন ডমিঙ্গো, ‘যাওয়ার আগে দুই একটি বিষয়ে কথা বলতে চাই, যদিও এটি আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন। বাংলাদেশে ক্রিকেট খ্যাপাটে। দর্শক, সংবাদমাধ্যম, সবার মনোযোগ এখানে অবিশ্বাস্য। তবে সবাইকে বুঝতে হবে, এই টেস্ট দলে শান্ত ৩টি টেস্ট খেলেছে, সাইফ তার দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে যাচ্ছে। রাহি, তাকে দেখে মনে হয় ৪০টা খেলে ফেলেছে , কিন্তু মাত্র ৭টি টেস্ট খেলেছে। ইবাদত খেলেছে ৪টি। দলটা খুবই অনভিজ্ঞ। দলের অধিনায়ক দায়িত্ব নিয়েই ভারত, পাকিস্তানের বিপক্ষে অধিনায়কত্ব করেছে। বিশ্বের অন্যান্য অধিনায়কের হাতে ১০০-১৫০ টেস্ট খেলা টেস্ট বোলার আছে। ব্রড খেলেছে ১৪০ (১৩৮), রাবাদা খেলেছে ৫০ টেস্ট (আসলে ৪৩), ফিল্যান্ডার খেলেছে ৭০ টেস্ট (৬৪)। মিচেল স্টার্ক খেলেছে ৬০ (৫৭ টেস্ট)। তুলনায় বাংলাদেশ এখন সবচেয়ে অনভিজ্ঞ টেস্ট দল।’
অভিজ্ঞতার এই ফারাক টেনেই আরেকটু ধৈর্য ধরতে সংবাদমাধ্যমের প্রতি আকুতি তার, ‘আমি বলতে চাচ্ছি, সংবাদমাধ্যমকে ধৈর্য ধরতে হবে। নির্বাচকদেরও কিছু ক্রিকেটারদের ওপর ভরসা রাখতে হবে। আমি যে দলের কোচিং করাচ্ছি, এই মুহূর্তে টেস্ট ক্রিকেটে এটিই সবচেয়ে অনভিজ্ঞ টেস্ট দল, যদি টেস্ট ম্যাচের সংখ্যা দেখেন। আর আপনারা প্রত্যাশা করছেন, এই দলটি ভারত, পাকিস্তান গিয়ে এক দিনের অনুশীলনেই ওদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করবে। সুতরাং ধৈর্য ধরুন। ছেলেরা কঠোর পরিশ্রম করছে। সমর্থক ও সংবাদমাধ্যমের সমর্থন ওদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা জানেন, আমি কী বলতে চাচ্ছি। ভালো আমাদের খেলতে হবে, ওরা এটা জানে। তবে কিছু সময় দরকার, বড় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে প্রতিযোগিতা করতে। সুতরাং ধৈর্য ধরুন। ওরা আপনাদের গর্বিত করবে। কিছু সময় দরকার এই যা।’
Comments