আলু চাষে খরচ বাড়লেও আগ্রহী কৃষক
অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার শীত ও কুয়াশার স্থায়ীত্ব বেশি থাকায় আলু চাষে খরচ ১০ শতাংশ বেড়েছে। তবুও তা বিক্রি করে বেশ লাভবান হয়েছেন লালমনিরহাটের কৃষকরা। আশানুরূপ ফলন ও দাম পাওয়ায় তারা খুশি। প্রতি বিঘা জমিতে আলু চাষ করে তারা আয় করেছেন ১৫-২০ হাজার টাকা।
যদিও গত বছর আলু চাষে খরচ এ বছরের তুলনায় কম ছিল, তবে সে বছর বিক্রি করে আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় তেমন লাভ করতে পারেননি কৃষকরা। অনেকেই শুধু মূল খরচ উঠাতে পেরেছিলেন।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার আমবাড়ি গ্রামের কৃষক আতিয়ার রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন, “গতবছর তিন বিঘা জমিতে আলু চাষ করতে ব্যয় হয়েছিল ৪৮ হাজার টাকা। কিন্তু এ বছর ব্যয় হয়েছে ৬২ হাজার টাকা। এবার শীত ও কুয়াশার কারণে বেশি কীটনাশক ওষুধ দিতে হয়েছিল। তাই উৎপাদন খরচও বেশি হয়েছে।”
তিনি বলেন, “গত বছর তিন বিঘা জমি থেকে ১২ হাজার ৬৫০ কেজি আলু পেয়েছিলাম। সেগুলো সাত টাকা কেজি দরে বিক্রি করে ৮৮ হাজার ৫৫০ টাকা পেয়েছিলাম। এবার একই জমিতে ১২ হাজার ৬০০ কেজি আলু পেয়েছি। যা সাড়ে নয় টাকা কেজি দরে বিক্রি করে পেয়েছেন ১ লাখ ১৯ হাজার টাকা পেয়েছি।”
লালমনিরহাট সদর উপজেলার মন্ডলেরহাট এলাকার আলু চাষি নজরুল ইসলাম বলেন, “এই মুহূর্তে আমাদের উৎপাদিত আলু খেতে থাকাকালেই ৮ থেকে ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এই বাজার চলমান থাকলে আমরা আলু চাষে অুপ্রেরণা পাবো। কিন্তু, আলুর কেজি ৫ টাকার নিচে নেমে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত হবো। এ বছর আলু চাষে উৎপাদন খরচ বাড়লেও বিক্রি করে প্রত্যাশিত দাম পাচ্ছি।”
আদিতমারী উপজেলার ভাদাই গ্রামের আলু চাষি সেকেন্দার আলী বলেন, “আমি ১০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। এতে উৎপাদন খরচ হয়েছে ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে চার বিঘা জমি থেকে ১৬ হাজার ৪০০ কেজি আলু খেতে থাকাকালেই ৯ টাকা কেজি দরে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি করেছি।”
“আশা করছি বাকি ছয় বিঘা জমি থেকে এরকমই ফলন পাবো। আর দামও ভালো পাবো,” যোগ করেন তিনি।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, এ বছর জেলায় ৪ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। গতবছর হয়েছিল ৪ হাজার ৬২০ হেক্টর জমিতে। প্রতি হেক্টর জমি থেকে কৃষকরা সাধারণত ২৫-২৭ মেট্রিক টন আলু পেয়ে থাকেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিধুভূষণ রায় দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “আবহাওয়ার কারণে আলু চাষে কৃষকের খরচ কিছুটা বাড়লেও ভালো ফলন ও দাম পাওয়ায় তারা লাভবান হয়েছেন। আলুর বর্তমান বাজার চলমান থাকলে আলু চাষে কৃষকরা আরও বেশি উৎসাহী হবে এবং বিষবৃক্ষ তামাক চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে।”
Comments