গুজরাট মডেলে দিল্লি, মৃতের সংখ্যা ৩৮

দিল্লিতে সাম্প্রদায়িক সংঘাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ জনে। এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া ও এনডিটিভি। তবে আজ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে দাবি করেছে দিল্লি পুলিশ।
দিল্লী সংঘর্ষের নমুনা। ছবি: এএফপি

দিল্লিতে সাম্প্রদায়িক সংঘাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ জনে। এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া ও এনডিটিভি। তবে আজ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে দাবি করেছে দিল্লি পুলিশ।

এদিকে আম আদমি পার্টির নেতা তাহির হুসেনের বিরুদ্ধে হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও সংঘর্ষের অভিযোগে বৃহস্পতিবা সন্ধ্যায় মামলা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে গোয়েন্দা কর্মকর্তা অঙ্কিত শর্মাকে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তাহির।

উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতার বিষয়ে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কিংবা রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ জনসমক্ষে একটি কথাও বলেননি। প্রধানমন্ত্রী টুইট করে দিল্লিবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বুধবার।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বরাত দিয়ে এক সরকারি কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়াও, জনগণের কাছে গুজব না ছড়ানোর আবেদন জানিয়েছেন। 

দিল্লির সংঘর্ষ নিয়ে সরকারের এমন প্রচার ছাড়া আর বিশেষ কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। তাছাড়া দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বলে যা প্রচার করা হচ্ছে, তাও সঠিক চিত্রের প্রতিফলন নয়। জোরালো অভিযোগ এসেছে, পুলিশ বিজেপি কর্মী-ক্যাডারদের সঙ্গে নিয়ে উত্তর-পূর্ব দিল্লির বাসিন্দাদের উপর আক্রমণ করছে, বাড়িঘর, দোকান জ্বালিয়ে দিচ্ছে।

মঙ্গলবার রাতে দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান টুইট করেছেন, “ভারত সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নীরবতার কারণে নয়াদিল্লিতে সহিংসতা চলছে। তাদের এখন বছরের সবচেয়ে খারাপ সময় যাচ্ছে। তবুও তারা বধির হয়ে আছে। যা দুঃখজনক এবং উদ্বেগজনক। এমন সময়ে শান্তি এবং একতা খুব প্রয়োজন। যদিও সে ব্যাপারে কিছুই শোনা যায় না।”

ছবি দ্য টেলিগ্রাফের সৌজন্যে

ভারত সরকার নীরব থাকলেও দিল্লির সংঘর্ষ নিয়ে সরব ছিলেন বিচারপতি এস মুরলীধর। তার এজলাসেই চলছিল এই মামলার শুনানি। গতকাল বুধবার সকালে তিনি এই মামলায় কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার এবং দিল্লি পুলিশের তীব্র সমালোচনা করেন।

মামলার শুনানি চলাকালে বিচারপতি এস মুরলীধর বলেন, “আমরা কেউ চাই না আরেকটা চুরাশির শিখ বিরোধী দাঙ্গা হোক।” সেদিন আদালত দাঙ্গায় আহতদের যথাযথ চিকিত্‍‌সার বিষয়টি নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন দিল্লি পুলিশকে। এছাড়াও, তিন বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশও দেন আদালত।

এমন সিদ্ধান্তের কারণে কারণে বুধবার রাতেই বিচারপতি এস মুরলীধরকেও ভারত সরকারের রোষানালে পড়তে হলো। বুধবার রাতে তার বদলির আদেশ দেওয়া হয়েছে। তাকে দিল্লি হাইকোর্ট থেকে বদলি করে পাঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাইকোর্টের দায়িত্ব গ্রহণের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

গুজরাটের সেই নারকীয় সহিংসতার সময় নরেন্দ্র মোদি ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, আর অমিত শাহ ছিলেন গুজরাটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এখন নরেন্দ্র মোদী ভারতের প্রধানমন্ত্রী, অমিত শাহ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ভারতের গণমাধ্যমে গুজরাট হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে যার তুলনা চলছে। তুলনায় আসছে নিরোর বাঁশি প্রসঙ্গও।

সূত্র: স্টেটনম্যান,এনডি টিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া, টেলিগ্রাফ।

আরও পড়ুন:

দিল্লিতে সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৭

দিল্লি সংঘর্ষ: ভ্রাতৃত্বের আহ্বান মোদির

দিল্লিতে গোয়েন্দা কর্মকর্তার মরদেহ উদ্ধার

দিল্লি জ্বলছে আর আপনি নৈশভোজে, সমালোচনার মুখে এ আর রহমান

কেজরিওয়ালের বাড়ি ঘেরাও, বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গে জলকামান

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

6h ago