ক্ষত-বিক্ষত উত্তর-পূর্ব দিল্লি, স্বজনের আহাজারি

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে রাজধানী দিল্লির বিক্ষোভে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩৮ জন। আহত কয়েকশ।
Delhi Clash
বিগত কয়েকদিনের সহিংসতায় ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বহু ঘরবাড়ি, দোকান ও ধর্মীয়স্থান। ছবি: রয়টার্স

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে রাজধানী দিল্লির বিক্ষোভে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩৮ জন। আহত কয়েকশ।

বিগত কয়েকদিন ধরে চলা সহিংসতায় ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে উত্তর-পূর্ব দিল্লির বহু ঘরবাড়ি, দোকান ও ধর্মীয়স্থান। সহিংসতায় সেখানকার মানুষের গোছানো, স্বাভাবিক জীবন তছনছ হয়ে গেছে। স্বজন হারিয়ে আহাজারি করছে নিহতদের পরিবার। এ ছাড়া, অনেকে নিখোঁজও রয়েছেন।

তবে, ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। যে কারণে উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে জারি করা ১৪৪ ধারা ১০ ঘণ্টার জন্য তুলে নেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার ভোর ৪টা থেকে সকাল ১০টা এবং বিকাল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা থাকবে না।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া ও এনডিটিভি এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিল্লির সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ১৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে আটক করা হয়েছে অন্তত ৪০০ জনকে। ৪৮টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।

দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টি তদন্তের জন্য বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া, উত্তর-পূর্ব দিল্লির বাসিন্দাদের অনুরোধ করা হয়েছে, সংঘর্ষকালে তারা ঘটনাস্থলে থাকলে, তারা কী দেখেছেন সেটি জানাতে। তাদের কাছে সংঘর্ষের কোনো ছবি কিংবা ভিডিও ফুটেজ থাকলে সেগুলো পুলিশকে দিতে।

এক বিবৃতিতে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৩৬ ঘণ্টায় বড় ধরনের কোনো সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি।

গতকাল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিয়াল বলেছেন, সংঘর্ষের ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার খরচ সরকার বহন করবে। তারা বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হলে সেটিও সরকারই বহন করবে। এছাড়া, নিহতদের পরিবারকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ রুপি এবং যাদের ঘর বা দোকান পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে, তাদের ৫ লাখ রুপি করে দেওয়া হবে।

বিতর্কিত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বাতিলের দাবিতে জাফরাবাদে প্রায় এক হাজার নারী গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করছিলেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি বিকাল থেকে সেখানে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। যা ছড়িয়ে পরে দিল্লির বিভিন্ন এলাকায়।

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, বাংলাদেশ থেকে ২০১৫ সালের আগে ভারতে যাওয়া অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সমালোচকরা বলছেন, এই আইন বৈষম্যমূলক ও ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের ভাবমূর্তির পরিপন্থি। এনআরসি (জাতীয় নাগরিকপঞ্জি) ও এই আইনের মাধ্যমে ভারতীয় মুসলিমদের রাষ্ট্রহীন করার চেষ্টা হচ্ছে।

আরও পড়ুন:

দিল্লিতে যা ঘটছে তা ‘দাঙ্গা’ নয়

দিল্লির মুসলিমদের পাশে হিন্দুরা

দিল্লি সহিংসতা: ৬ মুসলিমের প্রাণ বাঁচানো প্রেমকান্ত মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন

মোদির নাগরিকত্ব আইন বর্ণবাদী-সাম্প্রদায়িক: রজার ওয়াটার্স

Comments